রামদুলালবাবু বালক লেখককে কীভাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক আবেগে আন্দোলিত করেছিলেন তা 'কলের কলকাতা' রচনা অবলম্বন করে লেখাে।
রামদুলালবাবুর প্রতি লেখকের ইতিবাচক আবেগ: 'কলের কলকাতা' রচনার লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় ছােটোবেলায় নেবুতলার যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, তার মালিক ছিলেন কর্পোরেশনের কর্মী রামদুলালবাবু। স্বাধীনতা আন্দোলনে কলকাতা তখন উত্তাল। একদিন বউবাজার স্ট্রিটের কংগ্রেস অফিসের দোতলায় স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝখানে হঠাৎ রামদুলালবাবুকে ফুলমালা গলায় দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে লেখক অবাক হয়ে যান। এই মহান ব্যক্তির বাড়ির ভাড়াটে হিসেবে গর্ব অনুভব করেন তিনি। সমবেত জনতার সঙ্গে গলা মিলিয়ে তাই তিনিও বলে ওঠেন- “রামদুলালবাবু কী জয়!” রামদুলালবাবু তাঁর বিশেষ পরিচিত, এ কথা আবেগের সঙ্গে লেখক পাশের সবাইকে জানালেও কেউ তাতে গ্রাহ্য করে না। পুলিশভ্যান রামদুলাল বাবুকে নিয়ে চলতে শুরু করলে লেখক তাড়াতাড়ি পাড়ায় ফিরে আসেন। কিন্তু পাড়ায় এসে দেখেন যে, সবাই খবরটা জানলেও কেউই ব্যাপারটাতে তেমন উৎসাহী নয়। কয়েকদিন পর রামদুলালবাবুর দাদা তাকে রামদুলালবাবুর সঙ্গে দেখা করতে জেলে যেতে বললে আনন্দে আপ্লুত লেখক রাজি হয়ে যান।
রামদুলালবাবুর প্রতি লেখকের নেতিবাচক আবেগ : কিন্তু দীর্ঘকাল পর দেখা হলে রামদুলালবাবু লেখকের দাদুকে গম্ভীরমুখে, দুঃখের সঙ্গে জানান যে, তিনি কয়েক মাস জেল খাটলেও মাইনে তার বাড়ল না। কারণ, কপারেশন জেলে-যাওয়া কর্মীদের মাইনে বাড়ানাে বন্ধ করে দিয়েছে। এ কথা শুনে লেখক সেই সুযােগসন্ধানী, স্বার্থপর লােকটার জন্য এতদিন ধরে গর্ব করেছিলেন বলে নিজেকে নির্বোধ বলে মনে করলেন।