"সামনে একটা কাঠের ফলকে লেখা: 'সান্তালবাড়ি'। -'মেঘের গায়ে জেলখানা' রচনা অবলম্বন করে লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের রাজাভাতখাওয়া থেকে সান্তালবাড়ি অবধি যাত্রাপথের বর্ণনা দাও।
লেখকের যাত্রাপথ: 'মেঘের গায়ে জেলখানা' রচনায় লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় রাজাভাতখাওয়া স্টেশন থেকে ট্রাকে যাত্রা শুরু করে বেশ কিছুটা পথ চা বাগান এলাকার মধ্য দিয়ে যান। পিচ-রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে তার চোখে পড়ে ধোঁয়ায় ঢাকা পাহাড়শ্রেণি। ট্রাকটি ফাকা, সুন্দর রাস্তা দিয়ে মিলিটারি মেজাজে চলতে থাকে। দু-পাশে সবুজ চা-বাগান, সেখানে বেতের ঝুড়ি পিঠে বেঁধে নিয়ে কাজ করছে চা-শ্রমিকরা। লেখক তাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ চেহারা, পােশাক-পরিচ্ছদ, পাতা দিয়ে ছাওয়া বাসস্থান আর তাদের শুকনাে মুখ ও শীর্ণকায় শরীর লক্ষ করতে থাকেন। পথে যেতে যেতে চা-সাহেবদের ফুলবাগান শােভিত রংচঙে বাংলাে এবং ঝাঁ-চকচকে গাড়িও চোখে পড়ে তার। চা-বাগান এলাকা অতিক্রম করে ট্রাকটি খানাখন্দে ভরা মেঠো রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কাঠের সেতু পেরােয়। মেঠো বনপথ দিয়ে প্রাণপণে ছুটতে ছুটতে ট্রাকটি একসময় ডুয়ার্সের ঘন জঙ্গলে প্রবেশ করে। তারপর নুড়ি- পাথরপূর্ণ পথে চলতে চলতে গন্ডারের পিঠের মতাে কালাে একটা দেয়াল দেখে লেখক বােঝেন যে, চড়াই পথে ট্রাকটি চলছে এবং সাথে শােনা যাচ্ছে। তালা ধরানাে গোঁ গোঁ আওয়াজ। চড়াই পথ দিয়ে বেশ কিছুটা ওঠার পর তারের বেড়া ঘেরা এক জায়গায় এসে ট্রাকটি থেমে যায়। ট্রাক থেকে নেমে লেখক দেখেন যে, সামনে কাঠের ফলকে লেখা রয়েছে 'সান্ডালবাড়ি'।