"ডানদিকে কাঁটাতারে ঘেরা জেলখানার চৌহদ্দি।" -কোন জেলখানার কথা বলা হয়েছে? জেলখানার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও | সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের 'মেঘের গায়ে জেলখানা' রচনা অবলম্বন করে বক্সা জেলখানার বর্ণনা দাও।
উদ্দিষ্ট জেলখানা: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের 'মেঘের গায়ে জেলখানা' রচনায় বক্সা জেলখানার কথা বলা হয়েছে।
জেলখানার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা : জয়ন্তী পাহাড় এবং ভুটান পাহাড়ে ওঠার রাস্তা দুটি বাদে তেরাস্তার অবশিষ্ট রাস্তাটিই ঘাস ও কাকরে ভরা একটা মাঠ পেরিয়ে কাঁটাতারে ঘেরা বক্সা জেলখানার সীমানায় গিয়ে শেষ হয়েছিল। দূর থেকে দেখে লেখকের মনে হয়েছিল জেলখানাটা যেন পাহাড়ের তিনতলা সমান একটা হাঁটুর ওপর অবস্থিত। মাঠের গা দিয়ে উঠেছে পাথরের সিঁড়ি যা শেষ হয়েছে একটা 'লােহার ফটক'-এর সামনে। পাহাড়ের তিনটি খাঁজেই ছিল অসংখ্য সারিবদ্ধ ঘর। সেই ঘরগুলাের দেয়াল ছিল পাথরের আর ছাদ ছিল রং করা কাঠের। প্রতিটি ঘরেই ছাদের কাছে গরাদ-আঁটা জানলা আর দুটো করে দরজা। একটা পেটাই করা লােহার, অন্যটি মােটা কাঠের। ঘরের সামনে রয়েছে। কাঁটাতার-ঘেরা ছােট্ট উঠোন। জেলখানার চৌহদ্দির মধ্যে যে পরিমাণ কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে, সব এক করলে তা লম্বায় কয়েক মাইল পর্যন্ত হবে। জেলখানার ভেতরের রাস্তাগুলি এঁকেবেঁকে এদিক-ওদিক চলে গেছে। ইলেকট্রিক পােস্টগুলিকে দিনের বেলাতে ফাঁসির মঞ্চ বলে মনে হচ্ছিল লেখকের। জেলখানার চৌহদ্দির বাইরে একশাে-হত অন্তর উঁচু করে তৈরি করা সেন্ট্রি বক্সগুলাের ওপর দাঁড়িয়ে বন্দুকধারী সেপাইরা দিন রাত পাহারা দেয়। জেলখানাটির সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে বাঁ-দিকে জেলের অফিস, সেপাইদের শিবির এবং নীচুপদের কর্মীদের কোয়ার্টার। আরও দুটো ফটক পার হওয়ার পর খােলা আকাশ দেখা যায়। জেলের ভেতরের দেয়ালের গায়ে ছাপার অক্ষরে উপদেশাবলিও লেখা ছিল।