"ফিরে এসে কলকাতার গল্প বলেছিল মােনা ঠাকুর।”—মােনা ঠাকুর কলকাতায় গিয়েছিল কেন? সে কলকাতার কোন্ গল্প বলেছিল? | মােনা ঠাকুর বর্ণিত কলের কলকাতার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
মােনা ঠাকুরের কলকাতা যাওয়ার কারণ: 'কলের কলকাতা' রচনাটি লেখার পঁচিশ বছর আগে লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের গ্রামের বাসিন্দা মােনা ঠাকুর কলকাতায় গিয়েছিল কালীঘাটের মন্দিরে পইতে নিতে।
মােনা ঠাকুরের বলা কলকাতার গল্প : কলকাতায় এসে বিস্মিত মােনা ঠাকুর দেখে যে, সেখানে শব্দ করে মােটরগাড়ি, ট্রাম চলে। রাস্তায় সর্বত্র লােক গিজগিজ করছে। কলকাতায় অসংখ্য বাড়ি ও গাড়ি রয়েছে। গ্রামের মাটি কিংবা সাঁকোর কোনাে চিহ্ন নেই, শুধু বালি-চুন-ইট আর পাথর। এই কলের কলকাতায় টাইমকল খুললে জল পড়ে, সুইচ টিপলে অন্ধকারে জ্যোৎস্না বিচ্ছুরিত হয়। এখানকার অসংখ্য গলিতে ঘুরতে ঘুরতে তার মাথা বনবন করে, পা টনটন করে। পথের দু-পাশে অসংখ্য দোকান, বাজার দেখা যায়।
একদিন হাঁটতে হাঁটতে মােনা দেখে তার ছায়ার পাশে লম্বা চওড়া আর একটা ছায়া। পেছন ফিরে সে দেখে ঝাকড়া ঝাকড়া চুল, গোঁফ-দাড়িওয়ালা একটি লােক লম্বা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে। পরনে তার পাঞ্জাবির ওপর রংচঙে হাতকাটা ফতুয়া, কাঁধে ঝুলি। ভীষণাকৃতি এই লোকটাকে ছেলেধরা ভেবে মােনা ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে এবং ভগবানের নাম নেয়। এইসময় লােকটি হঠাৎ তাকে ছাড়িয়ে এগিয়ে গেলে ধড়ে প্রাণ আসে তার। মােনা ঠাকুর লেখককে জানায়, কলের কলকাতা-য় "গাড়ি চাইলে গাড়ি, বাড়ি চাইলে বাড়ি। যা চাইবে তাই পাবে।"