"বুদ্ধিটা কী করে এল তা বলি।" -কোন বুদ্ধি এবং তা কীভাবে এল—নাট্যকারকে অনুসরণ করে আলােচনা করাে।
বুদ্ধির পরিচয়: শম্ভু মিত্র তাঁর 'বিভাব' নাটকে গ্রুপ থিয়েটারের নানারকম সমস্যার পাশাপাশি সেই সমস্যা থেকে মুক্তির পথও সন্ধান করেছেন। মঞ্চ বা মঞ্চসজ্জার উপকরণসমূহ না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নাটক মঞ্চস্থ করা যায়, তার উপায় খুঁজে বের করার কথাই বুদ্ধি শব্দটির প্রয়ােগের মাধ্যমে নাট্যকার বােঝাতে চেয়েছেন।
বুদ্ধি আসার পন্থা : নাট্যকারের চোখে পড়ে, কোনাে এক পুরােনাে বাংলা নাটকে 'রাজা রথারােহণম নাটয়তি' অর্থাৎ রাজা রথে আরােহণ করার ভঙ্গি করলেন—এ কথা লেখা ছিল। কোনাে উপকরণ ছাড়াই কেবল ভঙ্গির মাধ্যমে অভিনয় সম্পন্ন করার একটি রেওয়াজ বাংলা নাটকে আগে থেকেই ছিল। উড়িষ্যার যাত্রাতেও ঘােড়ার অনুপস্থিতিতেই একটিমাত্র লাঠি সম্বল করে রাজার নির্দেশে দূতের খবর নিয়ে আসার উদাহরণ রয়েছে। একইভাবে মারাঠি তামাশাতেও ভঙ্গিনির্ভর অভিনয়ের সাহায্যে জমিদারের কাছে চাষির কাতর আবেদন, কিংবা ব্যর্থ মনােরথ হয়ে মন্দিরে গিয়ে ভগবানের কাছে নালিশের দৃশ্য অভিনীত হতে দেখেছেন নাট্যকার। এভাবেই দর্শকদের কল্পনার সাহায্য নিয়ে ভঙ্গিনির্ভর নাট্য অভিনয়ের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেখান থেকেই নিজেদের নাটক মঞ্চস্থ করার বুদ্ধি পেয়েছিলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র।