“আমি লাস্ট সিনে প্লে করব না ভাই..” বক্তা কে? কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা মন্তব্যটি করেছেন আলােচনা করাে।
বক্তা: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ-নাটক 'নানা রঙের দিন'-এ বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় মধ্যরাতে ফাঁকা মঞে মদ্যপান করে নিজেই নিজেকে উদ্দেশ করে আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
প্রসঙ্গ: নেশাগ্রস্ত রজনীকান্ত তার বৃদ্ধাবস্থায় উপলদ্ধি করেন যে, তাঁর আন্তরসত্তা যেন জেগে উঠেছে। সে তাকে শরীরের দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। অন্যদিকে, বাইরের মানুষটা অর্থাৎ তার বাহ্যিক সত্তা অনুভব করে যে, প্রতিদিন অর্ধেক শিশি কলপ লাগিয়ে বয়সকে হয়তাে কিছুটা আড়াল করা যায়, কিন্তু সময়ের সঙ্গে যা চলে যায় তা আর কখনও ফেরে না। এইভাবে রজনীকান্তের দুটি সত্তার অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে তিনি দেখতে পান বয়সের সঙ্গে মৃত্যুর দিকে তার স্পষ্ট এগিয়ে চলা—“..জীবনে ভাের নেই, সকাল নেই, দুপুর নেই, সন্ধেও ফুরিয়েছে—এখন শুধু মাঝরাত্তিরের অপেক্ষা...”। অথচ মৃত্যুর প্রান্তে দাঁড়িয়েও তার ভিতরের শিল্পীসত্তা মরতে চায় না। তাই জীবনের শেষ দৃশ্যের অভিনয় করতে তিনি রাজি নন। অথচ বাইরের মানুষটা বুঝতে পারে যে, জীবনের অন্তিম পর্যায়ে শ্মশানঘাটের দৃশ্যের অভিনয়ে থাকবে পরিচিত বন্ধুবান্ধবেরা আর উইংসে উপস্থিত হবে পরপারের দূত। এটি নিয়তির অব্যর্থ বিধান, তাই না চাইলেও জীবনের শেষ দৃশ্যে অভিনয় করতেই হবে তাকে। মৃত্যুর নিশ্চিত হাতছানিতে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়েই অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।