"মুখের ভেতরটা যেন অডিটোরিয়াম ইন্টারভ্যালে সব দর্শকরা হাঁটাহাঁটি লাগিয়ে দিয়েছে...”—মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলােচনা করাে।
মন্তব্যের প্রেক্ষাপট: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ-নাটক 'নানা রঙের দিন’-এ এক পেশাদারি থিয়েটারের ফাকা মঞ্চে অন্ধকার রাতে শূন্য প্রেক্ষাগৃহে দেখা যায় আটষট্টি বছরের বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে। রজনীকান্তের পরনে দিলদারের পােশাক, হাতে জ্বলন্ত মােমবাতি। রজনীকান্তের কথা থেকে জানা যায়, অভিনয়ের পরে অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে নেশার ঘােরে তিনি গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ঘুম থেকে জেগে উঠে তিনি দেখেন শাজাহান-জাহানারাসহ বাকি সব চরিত্রাভিনেতা চলে গিয়েছে। গভীর রাতে মঞ্চে তিনি একা রয়েছেন। নিঝুম রাতের শূন্য প্রেক্ষাগুহে ট্যাক্সি ডেকে দেওয়ার জন্য রামব্রিজকে ডেকেও সাড়া পান না তিনি। তার মনে পড়ে যায় আগের রাতে তাকে বাড়ি যাবার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য রামব্রিজকে তিনি তিন টাকা বকশিশ দিয়েছেন। সেই টাকাতেই 'রামধেনাে' কিনে তাকে দেড় বােতল খাইয়ে গেছে রামব্রিজ এবং সে নিজেও হয়তাে কোথাও নেশার ঘােরে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে। অসহায় প্রবীণ রজনীকান্ডের মনে হয় অতিরিক্ত মদ্যপানে তার বুকের ভেতরটা থরথর করে কাঁপছে আর শারীরিক কষ্ট হচ্ছে। থিয়েটারে নিবেদিতপ্রাণ রজনীকান্তের অবচেতন মনেও কাজ করে চলে থিয়েটারের দৃশ্যপট। তাই মুখের ভিতরটা শুকিয়ে আসার যে কষ্ট তিনি অনুভব করেছেন, তার সঙ্গে তুলনা করেছেন অডিটোরিয়ামে ইন্টারভ্যাল চলাকালীন দর্শকদের হাঁটাহাঁটির মতা বিশৃঙ্খলার দৃশ্যকে।