সােচ্চারে বলা নেই কোথাও, কিন্তু খেয়াল করলেই বােঝা যায়, কবিতাটির দুটি ভাগ আছে।- 'শিকার' কবিতাটি অবলম্বনে এই মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করাে।
ভূমিকা: জীবনানন্দ দাশের 'শিকার' কবিতায় শিকারির হাতে একটি হরিণের মৃত্যু কবিতাটির মূল আলােচ্য বিষয় হলেও তার উপস্থাপনে কবি সমগ্র কবিতাটিকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন।
প্রথম ভাগ : কবিতার প্রথম অংশে রয়েছে অরণ্যের নির্মল ছবি। ভােরের বর্ণনায় ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল আকাশ, টিয়ার পালকের মতাে সবুজ পেয়ারা ও নােনার গাছের উল্লেখ রয়েছে। আকাশে তখনও একটি তারা জেগেছিল, আর মাঠে জ্বলছিল দেশােয়ালিদের জ্বালানাে শুকনাে অশ্বথপাতায় মােরগফুলের মতাে লাল আগুন। সকালের আলােয় সেই আগুনকে রােগ শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতাে ম্লান লাগে। বরং সকালের আলােয়। টলমল শিশিরে চারপাশের বন আর আকাশ 'ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতাে ঝিলমিল' করে ওঠে।
দ্বিতীয় ভাগ : কবিতার দ্বিতীয় অংশে দেখা যায় অন্য এক ভাের প্রাথমিকভাবে সে ভাের বর্ণনা করে চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা এক হরিণের সুন্দর প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকার কাহিনি। ভােরের আলােয় নেমে হরিণীটি কচি বাতাবিলেবুর মতাে সবুজ ও সুগন্ধি ঘাস ছিড়ে খায়, নদীর শীতল জলে গা ভেজায়। কিন্তু একটা 'অদ্ভুত' শব্দে নদীর জল হঠাৎ 'মচকা ফুলের পাপড়ির মতাে লাল' হয়ে ওঠে। প্রাণবন্ত হরিণটি পরিণত হয় নিষ্প্রাণ মাংসপিণ্ডেনাগরিক মানুষের ক্ষুধার দাবি এবং বিকৃত আনন্দ মেটাতে।
উপসংহার : এইভাবে একই ভােরের দুই বিপরীত দৃশ্য—একদিকে সুন্দরের জেগে ওঠা, অন্যদিকে মানুষের নিষ্ঠুরতায় ‘হিম—নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম’ এর ছবিকে তুলে ধরেছেন কবি জীবনানন্দ দাশ।
শিকার কবিতায় কবির রচনাভঙ্গির যে বিশিষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখাে।
শিকার কবিতায় ভাের শব্দটি কীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে আলােচনা করাে।
অথবা, শিকার কবিতায় যে দুটি ভােরের চিত্র আছে তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
শিকার কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের যে মানসিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটেছে তা আলােচনা করাে।
জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতায় যে নির্মম সত্যের প্রকাশ ঘটেছে তা নিজের ভাষায় লেখাে।
অথবা, শিকার কবিতায় ভােরের মনােরম বর্ণনার সঙ্গে আছে নির্মম হত্যা বর্ণনা করাে।
ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়/কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন।- মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলােচনা করাে।