“বঙ্কিম সর্বপ্রথমে হাস্যরসকে সাহিত্যের উচ্চতর শ্রেণীতে উন্নীত করেন। তিনিই প্রথম দেখাইয়া দেন যে, কেবল প্রহসনের সীমার মধ্যে হাস্যরস বদ্ধ নহে; উজ্জ্বল শুভ্র হাস্য সকল বিষয়কেই আলোকিত করিয়া তুলিতে পারে।”—“কমলাকান্তের দপ্তরে'র 'বিড়াল' প্রবন্ধটির সমালোচনা প্রসঙ্গে এই মন্তব্যটির মূল্য নির্ণয় করো।

রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্র সম্পর্কে বলেছেন—“তিনিই প্রথম দৃষ্টান্তের দ্বারা প্রমাণ করাইয়া দেন যে, এই হাস্যজ্যোতির সংস্পর্শে কোনো বিষয়ের গভীরতার গৌরব হ্রাস হয় না, কেবল তাহার সৌন্দর্য এবং রমণীয়তার বৃদ্ধি হয়, তাহার সর্বাংশের প্রাণ এবং গতি যেন সুস্পষ্টরূপে দীপ্যমান হইয়া উঠে।”— কমলাকান্তের দপ্তরের ‘বিড়াল' প্রবন্ধটি বিশ্লেষণ করে এই মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিচার করো।


‘কমলাকান্তের দপ্তরে’র অন্তর্ভুক্ত ‘বিড়াল' রচনায় বঙ্কিমচন্দ্র উচ্চাঙ্গের হাস্যরসের যে উদাহরণ তুলে ধরেছেন, তার স্বরূপ বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের আগে প্রথমে হাস্যরস সম্পর্কে আলোচনার প্রয়োজন। ইংরেজিতে যা হিউমার রূপে নির্দেশিত হয়ে থাকে, তা-ই বিশুদ্ধ হাস্যরস। লেখক যখন জীবনের নানা অসংগতি, ভুলভ্রান্তি, মোহ, বিচ্যুতি ইত্যাদিকে কৌতুকাবহরূপে চিত্রিত করে আমাদের সামনে সত্যের রূপ প্রদর্শন করেন, তখনই আমরা হাস্যরসের আস্বাদ পাই। হাস্যরসাত্মক রচনায় সমালোচনা থাকে, কিন্তু তা কখনই ক্ষমাহীন হিংস্র রূপ ধারণ করে না। ড: শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় হাস্যরসের প্রকৃতি সম্বন্ধে যথার্থই বলেছেন : “দীর্ঘ অভ্যাসের ফলে জীবনের যে সমস্ত বৈষম্য ও অসংগতির সম্বন্ধে আমাদের মন অসাড়, অচেতন হইয়া পড়িয়াছে, আমাদের চিরাচরিত জীবনযাত্রার মধ্যে যে সমস্ত বিচার-বিভ্রম ও ভ্রান্ত মতবাদ অখণ্ডনীয় সত্যের মত দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, humorist-এর হাসির খোঁচা এক ঝলক অতর্কিত আলোকের মত সেই সমস্ত ভ্রান্তি ও অসঙ্গতিকে এক মুহূর্তে সুস্পষ্ট উজ্জ্বল করিয়া তোলে, আমাদের জীবনের বিচারধারাকে, শোভন-অশোভন-নির্ধারণের মানদণ্ডকে আমূল পরিবর্তন করিয়া দেয়। তাহার হাসির মধ্যে এই স্বচ্ছ ভ্রান্তি-নিরসনকারী আলোক-প্রাচুর্য আছে বলিয়াই ইহা আমাদিগকে এত গভীরভাবে স্পর্শ করে। Humorist তাঁহার হাসির সাহায্যে আমাদিগকে বুঝাইয়া দেন যে, যেখানে আমরা গম্ভীর সেখানে আমরা হাস্যাস্পদ, যাহা আমাদের নিকট উপহাস্য তাহা প্রকৃতপক্ষে সহানুভূতির অধিকারী।” ইংরেজিতে যাকে স্যাটায়ার বলা হয়, বাংলাতে তাকে আমরা ব্যঙ্গ বা বিদ্রূপ বলি : ব্যঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক রচনা মূলত বুদ্ধিপ্রধান, এই জাতীয় রচনায় লেখক বুদ্ধিদীপ্ত, তীক্ষ্ণ, শাণিত আক্রমণে মিথ্যা, জড়তা, অভ্যাস প্রভৃতির আবরণ ভেদ করে সত্য নির্দেশে সচেষ্ট হন। হাস্যরসে বিদ্রূপ থাকতে পারে, কিন্তু সেটি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় আবদ্ধ না থাকলে হাস্যরস তার নিজস্ব ধর্ম থেকে ভ্রষ্ট হয়।


রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন, বঙ্কিমচন্দ্রই বাঙলা সাহিত্যে হাস্যরসকে উচ্চতর শ্রেণিতে উন্নীত করেন। তাঁর আগে হাস্যরসের নামে নিকৃষ্ট ও অশ্লীলপূর্ণ ভাঁড়ামিতে জনসাধারণের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করা হত। তার থেকে একটু উচ্চস্তরের হাস্যরস ফার্স বা প্রহসনের সীমায় আবদ্ধ ছিল, তার মধ্যে মননের দীপ্তি বিশেষ লক্ষ্য করা যেত না। বঙ্কিমচন্দ্রই তাঁর ‘লোকরহস্যে’র অন্তর্গত বিভিন্ন রচনায় হাস্যরস শুধু প্রহসনের সীমায় আবদ্ধ নয়, তাঁর স্পর্শে কোনো গভীরতা হ্রাস পায় না, বরং তা সমস্ত বিষয়কেই সৌন্দর্যে ও রমণীয়তায় আলোকজ্জ্বল করে তোলেন এবং প্রদর্শন করেন।


বঙ্কিম-সৃজিত এই উচ্চাঙ্গের বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরসের উজ্জ্বল উদাহরণ মেলে তাঁর ‘কমলাকান্তের দপ্তরে'র অন্তর্ভুক্ত ‘বিড়াল’ রচনাটিতে। রচনাটির সূচনায়ই লেখক কমলাকান্তকে এই দৃশ্যে উপস্থাপিত করেছেন সে তার শয়নকক্ষে খাটিয়ার ওপর বসে হুঁকো হাতে উপবিষ্ট, আফিমের নেশায় তন্দ্রাচ্ছন্ন, মিট্ মিট্ করে প্রদীপের আলো জ্বলছে, দেওয়ালের ওপর চঞ্চল ছায়া প্রেতবৎ নৃত্যরত। আহার প্রস্তুত হয়নি, সেই জন্য হুঁকো হাতে কমলাকান্ত ভাবছিল, সে যদি নেপোলিয়ন হত তবে ওয়ার্টালুর যুদ্ধে জয়ী হতে পারত কিনা। কোথায় ইউরোপের বিশ্ববিখ্যাত রণক্ষেত্র ওয়ার্টালু, রণকুশলী ফরাসি সৈন্যবাহিনীর পৃথিবী বিখ্যাত মহানায়ক বীর নেপোলিয়ন, তাঁর বিপরীতে ডিউক অব ওয়েলিংটন ও মিত্রপক্ষ বাহিনী, আর কোথায় খাটিয়ায় হুঁকো হাতে উপবিষ্ট বঙ্গসন্তান কমলাকান্ত এবং নেপোলিয়ান রূপে ওয়ার্টালুর যুদ্ধ জয়ের আত্মপ্রসাদস্ফীত কল্পনা। এই অসংগতির কৌতুকরস আমাদের কাছে উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এই সময়ে ছোট্টো করে একটি মেও শব্দ হতেই কমলাকান্ত তাকিয়ে দেখে হঠাৎ কিছু বুঝতে পারে না, তার মনে হয়, ওয়েলিংটন হঠাৎ বিড়ালত্বপ্রাপ্ত হয়ে তার কাছে আফিম ভিক্ষা করতে এসেছে। সে অতঃপর তার প্রতিক্রিয়ার বিবরণ দেয়: “প্রথম উদ্যমে, পাষাণবৎ কঠিন হইয়া, বলিব মনে করিলাম যে, ডিউক মহাশয়কে ইতিপূর্বে যথেষ্ট পুরস্কার দেওয়া গিয়েছে, এক্ষণে আর অতিরিক্ত পুরস্কার দেওয়া যাইতে পারে না। বিশেষ অপরিমিত লোভ ভাল নহে।” এই অংশে আফিমের নেশার প্রসাদে কমলাকান্তের কল্পনা উদ্ভটতা ও অসংগতির চরম মাত্রায় পৌঁছেছে, তার আঘাতে আমাদের হাস্যবেগ উচ্ছ্বলিত ও অসংবরণীয় হয়ে ওঠে। আবার মেও শব্দ হতেই কমলাকান্ত ভালো করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে, ওয়েলিংটন নয়, একটি ক্ষুদ্র মার্জার, প্রসন্ন তার জন্য যে দুধ রেখে গিয়েছিল, নিঃশেষে উদরসাৎ করেছে, সে ওয়ার্টালুর প্রান্তরে ব্যুহ রচনায় ব্যস্ত থেকে লক্ষ্য করেনি। মার্জারসুন্দরী নির্জল দুগ্ধপানে পরিতৃপ্ত হয়ে নিজের মনের সুখ এ জগতে প্রকটিত করবার অভিপ্রায়ে অতি মধুর স্বরে মেও ধ্বনি তুলেছে। এই বর্ণনায়ও আমরা বিশুদ্ধ হাস্যরসের স্পর্শ পাই। কমলাকান্ত বলেছে : “বলিতে পার না, বুঝি তাহার ভিতর একটু ব্যঙ্গ ছিল; বুঝি মার্জার মনে মনে হাসিয়া আমার পানে চাহিয়া ভাবিতেছিল, কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই।” বুঝি সে ‘মেও’ শব্দে একটু মন বুঝিবার অভিপ্রায় ছিল। বুঝি বিড়ালের মনের ভাব–“তোমার দুধ ত খাইয়া বসিয়া আছি—এখন বল কি?” কমলাকান্ত কী বলবে ঠিক করতে পারল না, দুধ তার বাপেরও নয়, দুধ মঙ্গলার, দুইয়েছে প্রসন্ন; সুতরাং সে দুধে তার যা অধিকার, বিড়ালেরও তাই; সুতরাং সে রাগ করতে পারে না। তবে চিরাচরিত একটা প্রথা আছে যে বিড়ালে দুধ খেয়ে গেলে তাকে মারতে হয়, কমলাকান্ত তার অবমাননা করে মনুষ্য সমাজে কুলাঙ্গাররূপে পরিচিত হবে এটা বাঞ্ছনীয় নয়, এই মার্জারীও হয়ত তার স্বজাতিমণ্ডলে তাকে কাপুরুষ বলে উপহাস করতে পারে। সুতরাং পুরুষের ন্যায় আচরণ করাই বিধেয় : “ইহা স্থির করিয়া সকাতরচিত্তে, হস্ত হইতে হুঁকা নামাইয়া, অনেক অনুসন্ধানে একটি ভগ্ন যষ্ঠি আবিষ্কার করিয়া সগর্বে মার্জারী প্রতি ধাবমান হইলাম।” কমলাকান্তের পৌরুষের এই আস্ফালনও অত্যন্ত হাস্যকর ও উপভোগ্য।


কমলাকান্ত অতঃপর দিব্যকর্ণ প্রাপ্ত হয়ে বিড়ালের মুখে সমাজতন্ত্রের আলোচনা শুনেছে। এই আলোচনার সুর গভীর, কিন্তু প্রস্তাবনা অংশের হাস্যরসের পর এই আলোচনার মননশীলতার গাম্ভীর্যে এসে আমরা কোনো অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না, কারণ সমস্ত অংশই এসেছে ভবঘুরে, অর্ধোন্মাদ ও অহিফেনসেবী কমলাকান্তের বিচিত্র কল্পনা-তরঙ্গে। পাঁচশ' জন দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন কেন পাঁচশ জন লোকের আহার্য সংগ্রহ করবে, যদি করল তবে সে তাহার আহার শেষে যা উদ্বৃত্ত থাকে তা দরিদ্রকে কেন দেবে না, যদি না দেয়, তবে দরিদ্র তার কাছ থেকে চুরি করবে, কেন না অনাহারে মরে যাবার জন্য কেউ এই পৃথিবীতে আসেনি। সমাজতন্ত্রের সমর্থনে বিড়ালের এই বক্তব্য কমলাকান্ত ধনতন্ত্রের প্রবক্তার ভূমিকা গ্রহণ করে যেভাবে খণ্ডন করার চেষ্টা করেছে সেটাও হাস্যকর : “আমি আর সহ্য করিতে না পারিয়া বলিলাম, “থাম থাম। মার্জারপণ্ডিত। তোমার কথাগুলি ভারি সোশিয়ালিস্টিক। সমাজ বিশৃঙ্খলার মূল। যদি যাহার যত ক্ষমতা, সে তত ধন সঞ্চয় করিতে না পায়, অথবা সঞ্চয় করিয়া চোরের জ্বালায় নির্বিঘ্নে ভোগ করিতে না পায়, তবে কেহ আর ধন সঞ্চয়ে যত্ন করিবে না, তাহাতে সমাজের ধন বৃদ্ধি হইবে না।"


ধনতন্ত্র তথ্য ব্যক্তির সমাজের বৃহত্তর অংশ দরিদ্র শ্রেণিকে শোষণ ও বঞ্চনার মধ্য দিয়ে যে ঐশ্বর্য সংগ্রহ ও সঞ্চয় করে, সেটাই সামাজিক ধন বৃদ্ধি ও উন্নতির উৎস, কমলাকান্তের এই উক্তির প্রতিবাদে বিড়াল বলেছে সমাজের ধন বৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধন বৃদ্ধি না হলে দরিদ্রের কী ক্ষতি; সে যদি খেতেই না পেল তবে সমাজের উন্নতি নিয়ে কী করবে: বিচারক চোরের শাস্তিদানের আগে যেন তিনদিন উপবাসী থাকেন, তাতে যদি তার চুরি করে খেতে ইচ্ছে না করে, তবেই তিনি স্বচ্ছন্দে চোরকে ফাঁসি দেবেন। কমলাকান্ত তাকে মারার জন্য লাঠি তুলেছিল, সে আজ থেকে তিনদিন উপবাস করে, কমলাকান্ত যদি এর মধ্যে নসীরামবাবুর ভাঁড়ার ঘরে ধরা না পড়ে, তবে সে যেন তাকে ঠেঙিয়ে মারে, সে আপত্তি করবে না। কমলাকান্ত সমাজতন্ত্রের এই মূল ভিত্তি-সম্পর্কিত বক্তব্যের কোনো উত্তর দিতে পারেনি। তুমি যখন বিচারে পরাজিত হবে, তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ দান করবে–বিজ্ঞলোকের এই মত শিরোধার্য করে কমলাকান্ত বিড়ালকে বলেছে : এ সমস্ত অত্যন্ত নীতিবিরুদ্ধ কথা, তাদের আন্দোলনেও পাপ আছে, সে যেন এই সমস্ত দুশ্চিন্তা ত্যাগ করে ধর্মাচরণে মন দেয়। বিড়াল যদি চায় তবে সে তাকে নিউম্যান ও পার্কারের ধর্মগ্রন্থ দিতে পারে, ‘কমলাকান্তের দপ্তর' পড়লেও তার কিছু উপকার হতে পারে, আর কিছু হোক বা না হোক, আফিমের অসীম মহিমা বুঝতে পারবে। প্রসন্ন কাল কিছু ছানা দেবে বলেছে। জলযোগের সময় বিড়াল যদি আসে, দুজনে মিলে ভাগ করে খাবে। সে আজ যেন কারো হাঁড়ি না খায়, ক্ষুধায় নিতান্ত অস্থির হলে আবার যেন আসে, কমলাকান্ত তাকে এক সরিষাভোর আফিম দেবে। আফিমের বিশেষ প্রয়োজন নেই, হাঁড়ি খাওয়ার কথা ক্ষুধা অনুযায়ী বিবেচনা করা যাবে—একথা বলার পর বিড়াল বিদায় গ্রহণ করলে কমলাকান্ত আত্মপ্রসাদে স্ফীত হয় : “একটি পতিত আত্মাকে অন্ধকার হইতে আলোকে আনিয়াছি, ভাবিয়া কমলাকান্তের বড় আনন্দ হইল।” বিজ্ঞজনোচিত গাম্ভীর্যে ও আত্মপ্রসাদে কমলাকান্তের বিড়ালকে এই উপদেশ দান কিংবা এক সরিষাভোর আফিম দানের প্রস্তাবও হাস্যরসের প্লাবনে আমাদের আপ্লুত করে।


অহিফেনসেবী কমলাকান্তের বিচিত্র চরিত্রের সূত্রেই হাস্যরসাত্মক রমণীয় কল্পনায় বঙ্কিমচন্দ্র সমাজতন্ত্রবাদের মূল সত্যকে যে চিত্তাকর্ষক রূপ দিয়েছেন, গতানুগতিক প্রবন্ধের যুক্তিশৃঙ্খলায় ও বিশ্লেষণে কখনই সম্ভব হত না। যে আত্মাভিমান অপরের নিপীড়নে, দরিদ্রের ক্ষুধা দূর করার মৌলিক অধিকারকে অন্তঃসারশূন্য ও মানবিক বিচার-বিবেচনা বর্জিত যুক্তির জালবিস্তারে এবং উপদেশ দানে বা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিহত করার প্রয়াসে চরিতার্থ হতে চায়, শোষিত, নিরন্ন দরিদ্রের ক্ষুধার মতো নিষ্ঠুর বাস্তব সত্যের সামনে তার হাস্যকরতাই তিনি কমলাকান্তের নেপোলিয়নরূপে ওয়ার্টালু যুদ্ধ জয়ের কল্পনায়, বিড়ালকে ভাঙ্গা লাঠি নিয়ে তাড়া করে যাওয়ার পৌরুষের প্রদর্শনীতে, ধনতন্ত্রের প্রবক্তার ভূমিকা গ্রহণে এবং বিজ্ঞজনের গাম্ভীর্যে উপদেশ দানে ফুটিয়ে তুলেছেন। হাস্যরসের এই অর্থময় ইংগিতই বিড়ালের বক্তব্যকে আলোকিত, তার প্রকাশকে সৌন্দর্য ও রমণীয়তায়, সর্বাংশে প্রাণ ও গতিবেগ দান করে চিত্তাকর্ষক করে তুলেছে, হাস্যরস এখানে বিষয়বস্তুকে আকর্ষণীয় করে তোলার নিছক উপাদান বা উপকরণ নয়।