আকবরের ‘সুল-ই-কুল' ধর্মাদর্শের প্রতীক হিসেবে দীন-ই-ইলাহির পরিচয় দাও।

সূচনা: আকবরের ধর্মচিন্তার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ‘দীন-ই ইলাহি নামে সমন্বয়ী ধর্মাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে (১৫৮১ খ্রি.)। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সেতুবন্ধনের উদ্দেশ্যে আকবর এই ধর্মমত প্রবর্তন করেন। বদাউনির বিবরণ থেকে জানা যায় যে, সুফি সাধক শেখ তাজউদ্দিন আকবরকে এই নতুন ধর্মাদর্শ প্রবর্তনে উদ্বুদ্ধ করেন।


দীন-ই ইলাহির পরিচয়

[1] শব্দার্থ ও তাৎপর্য: ফারসি শব্দ ‘দীন-ই-ইলাহি’র অর্থ হল ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস (মতভেদে পবিত্র)। আবুল ফজল ও বদাউনি এই ধর্মমতকে তৌহিদ-ই ইলাহি বা স্বগীয় একেশ্বরবাদ বলে উল্লেখ করেছেন। সমস্ত ধর্মের সারবস্তু নিয়ে গঠিত হয়েছে এই ধর্মমত।


[2] মূলনীতি: 'দীন-ই ইলাহির মূল কয়েকটি নীতি ছিল- (a) নিরামিষ আহার, (b) দানধ্যান ও সমাজসেবা, (c) একে অপরকে আল্লাহ্ আকবর (ঈশ্বর মঙ্গলময়) বলে সম্বােধন করা এবং প্রত্যুত্তরে জাল্লা জালাল্লাহ্ (তাঁর মহিমার বিকাশ হেক) বলা, (d) অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরােধিতা করা। (e) সম্রাটের কাছে জীবন, ধর্ম, সম্পদ, মান বিসর্জনের প্রতিশ্রুতিদান।


[3] প্রকৃতি: 'দীনই ইলাহি ছিল একটি সমন্বয়ী ধর্মমত। এখানে উপনিষদের একেশ্বরবাদ, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের অহিংস নীতি, পারসিকদের সূর্য ও অগ্নি উপাসনা এবং খ্রিস্টধর্মের সৌভ্রাতৃত্ববােধ গৃহীত হয়েছিল।


[4] বৈশিষ্ট্য: (a) দীন-ই-ইলাহি ছিল সমস্ত ধর্মমতের একটি সংমিশ্রণ। (b) এই ধর্মমতে কোনাে দেবদেবীর স্থান ছিল না। সম্রাট নিজেই ছিলেন পির বা গুরু। (c) এতে পার্থিব উদারতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। (d) উদারতা, আত্মত্যাগ, মােহমুক্তি, নত্র বাক্যালাপ, নিরামিষ ভােজন, মদ্যপান ত্যাগ প্রভৃতি দীন-ই-ইলাহির অনুগামীদের‌ পালনীয় কর্তব্য ছিল।


[5] ফলাফল: (a) আকবর এই ধর্মমতের মাধ্যমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐক্য গড়ে তুলে সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব রক্ষার চেষ্টা করেন। (b) সমস্ত ধর্মের সার নিয়ে গড়ে-ওঠা এই ধর্মমতের দ্বারা আকবর ভারতবর্ষকে সর্বধর্মসমন্বয়বাদী দেশ হিসেবে গড়ে তােলার প্রয়াস নেন। (c) আকবরের এই নতুন ধর্মমতের সুফল হিসেবে- হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক উন্নত হয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে উলেমা ও মােল্লাদের প্রভাব খর্ব হয়। সম্রাটের সর্বময় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।


[6] অবসান: দীন-ই-ইলাহির আয়ু ছিল খুবই স্বল্প। আকবরের মৃত্যুর আগেই এর অবক্ষয় শুরু হয়। আকবরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই এই ধর্মাদর্শের অবসান ঘটে।


প্রাচীন মিশরে নেফারতিতির পরিচয় ও কার্যাবলি সম্পর্কে আলােচনা করাে।


প্রাচীন মিশরে ক্লিওপেট্রার পরিচয় ও কার্যাবলি সম্পর্কে আলােচনা করাে।


রানি দুর্গাবতীর পরিচয় ও কার্যাবলি আলোচনা করাে।


মধ্যযুগে ভারতে সুলতান রাজিয়ার কার্যাবলি সম্বন্ধে লেখাে।


নূরজাহানের পরিচয় ও কার্যাবলি আলােচনা করাে।


অশােকের ধম্ম-র বিভিন্ন দিকগুলি ও ধর্মপ্রচারে অশােকের বিভিন্ন উদ্যোগগুলি লেখাে।


শরিয়ত অনুযায়ী মুসলিমদের অধিকার ও কর্তব্যগুলি এবং শরিয়ত সম্পর্কে আলাউদ্দিন খলজির মনােভাব সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


History সব প্রশ্ন উত্তর (একাদশ শ্রেণীর)