প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষা কী? কোঠারি কমিশনের মতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি কী তা লেখাে।

প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষা

প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষা হল শিক্ষার সেই স্তর যেখানে শিশুর সুষ্ঠু বিকাশ ঘটে এবং তাকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের উপযােগী করে তােলা হয়।


বর্তমানে, নিয়ন্ত্রিত বা প্রথাগত প্রাথমিক শিক্ষা শুরুর আগের স্তরকে প্রাথমিক শিক্ষা বলে। এই শিক্ষা সাধারণত দুই বা তিন বছর বয়সে শুরু এবং ছয় বছর বয়সের আগে শেষ হয়। এই শিক্ষার বিভিন্ন শ্রেণি হল নার্সারি, কেজি ওয়ান, কেজি টু, কেজি থ্রি কিংবা ইনফ্যান্টওয়ান, ইনফ্যান্ট টু, ইনফ্যান্ট থ্রি বা প্রিপেরেটারি ওয়ান, প্রিপেরেটারি টু, প্রিপেরেটারি থ্রি ইত্যাদি।


কোঠারি কমিশনের মতে প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য


কোঠারি কমিশন প্রাক্প্রাথমিক শিক্ষার যেসব উদ্দেশ্য স্থির করেছেন সেগুলি হল一


(১) স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গঠন: প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে সু-অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করা।


(২) সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তােলা: প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তােলা।


(৩) প্ৰক্ষোভিক পরিণমনে সাহায্য: শৈশবে শিশু তার রাগ, ভয়, হিংসা প্রভৃতি মানসিক আবেগগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। প্রাথমিক স্তরে শিশুকে তার এই সমস্ত আবেগকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দেওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকার কর্তব্য।


(৪) ভাষার বিকাশসাধন: এই স্তরে শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশের সাথে ভাষারও দ্রুত বিকাশ ঘটে। শিশু নতুন নতুন শব্দ ব্যবহার করতে শেখে, বাক্য গঠন করতে শেখে।


(৫) সৌন্দর্যবােধের বিকাশ ঘটানো: সকল শিশুর মধ্যে সৌন্দর্যবােধের বিকাশ ঘটানাে প্রাথমিক শিক্ষান্তরের আর-একটি বিশেষ লক্ষ্য।


(৬) শৃঙ্খলাবােধের বিকাশসাধন: শৈশবে শিশুর আচরণগুলি অসংযত এবং বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকে। তাই প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের উদ্দেশ্য হল শিশুর মধ্যে শৃঙ্খলাবােধ গড়ে তােলা।


(৭) অত্মপ্রকাশে সহায়তা: শিশুর স্বাধীন চিন্তা এবং সৃজনশীল ক্ষমতার বিকাশের মাধ্যমে তাকে আত্মপ্রকাশের সুযােগ। করে দেওয়া প্রাক্প্রাথমিক শিক্ষার আর একটি বিশেষ লক্ষ্য।


(৮) কৌতুহলের বিকাশ ঘটানো: প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে কৌতূহল প্রবৃত্তির বিকাশ ঘটানাে।


(৯) দৈহিক বিকাশসাধন: প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রমে এমন সব দৈহিক সঞ্চালনমূলক কাজকর্মকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও ইন্দ্রিয় সুপরিণত এবং শক্তিশালী হয়।


ওপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রাথমিক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর তথা শিশুর সর্বাঙ্গীণ এবং যথাযথ বিকাশে সহায়তা করা। শিশুর জন্মগত প্রবণতার ভিত্তিতে তাকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সংগতিবিধানের উপযােগী করে গড়ে তােলা এই শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য।


প্রান্তীয় বাল্যের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য ও চাহিদাগুলি সম্পর্কে যা জনি লেখাে।


কৈশাের বা বয়ঃসন্ধি বলতে কী বােঝ? বয়ঃসন্ধিকালের বিকাশগত বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে। ওই সময়ে কী কী চাহিদা দেখা দেয়?


কৈশােরে ছেলেমেয়েদের চাহিদাপূরণের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং বাবা-মায়ের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত তা লেখাে।


কৈশাের কাকে বলে? কিশাের-কিশােরীদের ব্যক্তিগত অভিযােজনে মাধ্যমিক শিক্ষা কীভাবে সহায়তা করে?


কৈশােরকালকে ‘ঝড়-ঝঞ্ঝা ও দুঃখ-কষ্টের কাল’ বলা হয় কেন? 

অথবা, যৌবনাগম ‘ঝড়-ঝক্ষ্মা, পীড়ন ও কষ্টের কাল’ কেন? বয়ঃসন্ধি বা কৈশাের-এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা সম্পর্কে লেখাে।


প্রাপ্তবয়স্ক কাদের বলে? প্রাপ্তবয়স্কদের বিকাশ বিশেষ করে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশ সম্পর্কে আলােচনা করাে।


বয়সসীমাসহ জীবনবিকাশের স্তর ও প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।