সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কার্যকর করার পথে অন্তরায় এবং কার্যাবলি সংগঠনের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করাে।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কার্যকর করার অন্তরায়

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির গুরুত্ব সম্পর্কে সমস্ত চিন্তাবিদ এবং শিক্ষাবিদ একই মত প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশে, বিদ্যালয়ের শিক্ষাকে সার্থক করে তােলায় এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করায় এর প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য।


(১) উপযুক্ত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব: উপযুক্ত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাবে এবং বিদ্যালয়গুলির আর্থিক সংগতির উপযুক্ত বন্দোবস্ত না থাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি সংগঠিত করতে গিয়ে অসুবিধা হচ্ছে।


(২) পরীক্ষাকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা: পরীক্ষাকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা এর জন্য অনেকাংশে দায়ী।


(৩) পরিকল্পনাকারী কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা: শিক্ষামূলক পরিকল্পনা যারা রচনা করেন, তাদের উদাসীনতাও অনেক ক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি পরিচালনার পথে বাধার সৃষ্টি করে।


(৪) উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব: উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আর একটি বিশেষ বাধা।


(৫) গুরুত্ব হ্রাস: 1964-66 সালের কোঠারি কমিশনের রিপাের্টে কর্ম-অভিজ্ঞতা, সমাজসেবা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়কে পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।


এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকে সার্থকভাবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পঠনপাঠনে সহায়ক বিষয় হিসেবে প্রয়ােগ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি সংগঠনের সীমাবদ্ধতা


বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষাবিজ্ঞানীরা সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির পুরুত্ব স্বীকার করে নিলেও এগুলির বাস্তব রূপায়ণের ক্ষেত্রে তথা বিদ্যালয়ে এইসব কার্যাবলি সংগঠনের ক্ষেত্রে কয়েকটি তলটি বা সীমাবদ্ধতা লক্ষ করা যায়। নীচে তেমন কয়েকটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হল一


(১) গতানুগতিক মনােভাব: আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে বা শিক্ষালয়ে আসে ডিগ্রি লাভের আশায়। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ডিগ্রি লাভের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। তাই শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকে অবহেলা করে।


(২) পরীক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা: আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত পুথিকেন্দ্রিক এবং পরীক্ষানির্ভর। পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীরা এই বিষয়গুলিকে তেমনভাবে গুরুত্ব দিতে চায় না।

(৩) অর্থাভাব: অর্থের অভাবেও বহু বিদ্যালয়ে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ব্যবস্থা করা যায় না৷


(৪) উপযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব: আমাদের দেশের বিদ্যালয়গুলিতে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।


(৫) অভিভাবক ও অভিভাবকাদের উদাসীনতা: আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে আজও এই ধারণা রয়েছে যে, শিক্ষালয় হল শুধুমাত্র পাঠক্রমের বিভিন্ন বিষয়ের চর্চার স্থান। ফলে শিক্ষার্থীদের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির চর্চা অনেকাংশে অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।


পাঠক্রম কী? কারিকুলাম কথাটি কোন্ শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এর অর্থ কী? পাঠক্রমের সাংগঠনিক উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।


অভিজ্ঞতাভিত্তিক, জীবনকেন্দ্রিক ও অবিচ্ছিন্ন পাঠক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের উপযােগিতা লেখাে।


পাঠক্রম প্রণয়নের উপাদানগুলি উল্লেখ করাে।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ধারণা এবং সংজ্ঞা দাও। এর বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির উদ্দেশ্যগুলি আলােচনা করাে।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির প্রকারভেদ আলােচনা করাে।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির শিক্ষামূলক গুরুত্ব বা উপযােগিতা এবং ওই কার্যাবলি পরিচালনার নীতিগুলি আলােচনা করাে।