অভিজ্ঞতাভিত্তিক, জীবনকেন্দ্রিক ও অবিচ্ছিন্ন পাঠক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের উপযােগিতা লেখাে।

অভিজ্ঞতাভিত্তিক পাঠক্রম

এই জাতীয় পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সামগ্রিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত। শিক্ষার্থীর চাহিদা, রুচি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সংগঠিত বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার সমবায়ই হল অভিজ্ঞতাভিত্তিক পাঠক্রম। এই পাঠক্রমের মূল কথা হল, শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুকে নানা ধরনের প্রত্যক্ষ কাজের মাধ্যমে পরিবেশন করা। শিক্ষার্থীরা সেই কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের সাথে সাথেই শিখবে।


জীবনকেন্দ্রিক পাঠক্রম


জীবনকেন্দ্রিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীর জীবনের বিভিন্ন দিক এবং তার পরিবেশের প্রতি লক্ষ রেখে বিষয়বস্তু নির্বাচন করা হয়। এই পাঠক্রম মূলত শিক্ষাথীকেন্দ্রিক হলেও এতে পরিবর্তনশীল সমাজের চাহিদা ও প্রত্যাশার ওপরেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক প্রভৃতি দিকের সুষম বিকাশের উপযােগী বিষয়বস্তু রাখা হয়। আবার, শিক্ষার্থীকে সমাজজীবনের উপযােগী করে গড়ে তােলার জন্য বিভিন্ন সামাজিক কাজকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


অবিচ্ছিন্ন পাঠক্রম


অবিচ্ছিন্ন পাঠক্রমের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পাঠক্রম রচনা করা হয়। জিলার বলেছিলেন, ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্ক বা অনুবন্ধন স্থাপন করে বিদ্যালয়ের সব পাঠ্যবিষয়কে উপস্থাপিত করা যেতে পারে৷ আবার পার্কার বলেছেন, বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়কে উপস্থাপন করলে সেই বিষয় এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের কাছে সহজ ও সাবলীল হয়ে ওঠে। গান্ধিজি তাঁর বুনিয়াদি শিক্ষার ক্ষেত্রে ক্রাফট বা হস্তশিল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের উল্লেখ করেছেন।


কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের উপযােগিতা


শিক্ষার্থীর উপযুক্ত বিকাশের জন্য চাই কাজের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন কাজে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। কাজের মাধ্যমে শিক্ষাই কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার মূল কথা। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের গুরুত্বপূর্ণ উপযােগিতা হল—


  • শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশে কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

  • শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম বিশেষভাবে উপযােগী হয়।

  • স্বাধীনভাবে নানা কাজ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর প্রাক্ষোভিক বিকাশ ঘটে, আত্মসব্রিয়তার মাধ্যমে পাঠগ্রহণ করে শিক্ষার্থী আনন্দ পায়।

  • একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার সুযােগ থাকায় কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সামাজিক বিকাশে সহায়তা করে।

  • কর্মভিত্তিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীকে একজন স্বনির্ভর, দায়িত্ববান, কর্তব্যপরায়ণ নাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করে, শিক্ষার্থীর নৈতিক বিকাশেও সহায়তা করে।

  • এই ধরনের পাঠক্রমে শিক্ষা শিক্ষার্থীর কাছে আগ্রহপূর্ণ ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

  • এই ধরনের পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম ছাত্রছাত্রীদের সাথে শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও সক্রিয় করে তােলে।


কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম শিক্ষার্থীর সামগ্রিক বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ উপযােগী। এটি শিক্ষার্থীকে পরবর্তীকালে জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রেও সহায়তা করে। তবে এই পাঠক্রম পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। এর বাস্তব রূপায়ণও যথেষ্ট কঠিন।


একটি আদর্শ পাঠক্রম গঠনের ক্ষেত্রে কী কী নীতি অনুসরণ করা উচিত?

অথবা, পাঠক্রম গঠনের নীতিগুলি আলােচনা করাে।


পাঠক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার উদ্দেশ্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা আলােচনা করাে।


পাঠক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর চাহিদা ও সামর্থ্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ? 

অথবা, পাঠক্রম সংগঠনে শিশুর চাহিদা ও সামর্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করাে।


পাঠক্রমের গতানুগতিক ধারণা এবং আধুনিক ধারণার মধ্যে পার্থক্য কী কী? প্রাপ্ত সুযােগসুবিধার ভিত্তিতে কীভাবে পাঠক্রম রচনা করা যায়?


শিক্ষার লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে পাঠক্রমের উপযােগিতা বিশ্লেষণ করাে।


পাঠক্রমের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে আলােচনা করাে।


পাঠক্রম কী? কারিকুলাম কথাটি কোন্ শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এর অর্থ কী? পাঠক্রমের সাংগঠনিক উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।