সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির প্রকারভেদ আলােচনা করাে।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির প্রকারভেদ

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি নানা প্রকারের হয়। বর্তমানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যেসব সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির আয়ােজন করা হয়, সেগুলি সম্পর্কে নীচে আলােচনা করা হল一


(১) শরীরচর্চামূলক কার্যাবলি : বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলাে যেমন -ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল-টেনিস, ক্রিকেট, খাে খাে, হকি, যােগব্যায়াম, পিটি, লংজাম্প, হাইজাম্প, দৌড় প্রভৃতির দ্বারা শরীরচর্চা হয়ে থাকে।


(২) শিক্ষামূলক কার্যাবলি : যেসব পরিকল্পিত কাজের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে বলে নির্দিষ্ট করা হয়, সেগুলিকে শিক্ষামূলক কার্যাবলি বলে। শিক্ষামূলক কার্যাবলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠন, বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরষ্কার-বিতরণী অনুষ্ঠান, বিতর্কসভা, আলােচনাচক্র, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, শিক্ষামূলক ভ্রমণ ইত্যাদি।


(৩) সাংস্কৃতিক কার্যাবলি : যেসব পরিকল্পিত কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটে সেগুলিকে সাংস্কৃতিক কার্যাবলি বলে। বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যাবলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল বিদ্যালয়ের বার্ষিক সামাজিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী সভা, মহাপুরুষদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন, বিভিন্ন ধরনের চিত্রকলা প্রদর্শনী, বিজ্ঞান প্রদর্শনী, বিদ্যালয়ে সংরক্ষণশালা সংগঠন, নাট্য উৎসব ইত্যাদি।


(৪) আত্মপ্রকাশমূলক কার্যাবলি : যেসব কাজের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থী নিজেকে আত্মপ্রকাশ করার সুযােগ পায় সেগুলিকে আত্মপ্রকাশনামূলক কার্যাবলি বলে। আত্মপ্রকাশনামূলক কার্যাবলির মধ্যে রয়েছে শিক্ষামূলক ভ্রমণ, প্রকৃতি পরিচয়মূলক কার্যাবলি, পর্বতারােহণ, বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্প (NCC, NSS), সমাজসেবা, ব্রতচারী, বৃক্ষরােপণ উৎসব পালন, বিদ্যালয়ের বাগান তৈরি, পত্রিকা প্রকাশনা ইত্যাদি।


(৫) সহযােগিতামূলক কার্যাবলি : যেসব পরিকল্পিত কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযােগিতার ভাব উৎসাহিত হয় সেগুলিকে সহযােগিতামূলক কার্যাবলি বলে। স্কাউটিং, ব্রতচারী, সেবামূলক কাজ, বিভিন্ন যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পে অংশ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বতঃস্কূর্তভাবেই পারস্পরিক সহযােগিতার মনােভাব গড়ে ওঠে।


(৬) সামাজিক কার্যাবলি : সামাজিক চেতনা বিকাশে সহায়ক পরিকল্পিত কাজগুলিকেই সামাজিক কার্যাবলি বলে। এই সমস্ত কাজের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল রক্তদান শিবির পরিচালনা, সাক্ষরতা কর্মসূচির বাস্তবায়ন, পরিবেশ সচেতনতা কর্মসূচি, বিদ্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্যাপন ইত্যাদি।


(৭) গ্রাক্ষোভিক বিকাশমূলক কার্যাবলি : যেসব সংগঠিত কাজ শিক্ষার্থীর প্রাক্ষোভিক বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে তাদের প্রাক্ষোভিক বিকাশমূলক কার্যাবলি বলে। যেমন-সংগীত, সাহিত্যচর্চা, নৃত্যানুষ্ঠান, অভিনয় প্রভৃতি।


(৮) বিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসনমূলক কার্যাবলি : বিদ্যালয়ের যেসব সহপাঠক্রমিক কাজের সংগঠনে এবং পরিচালনায় শিক্ষার্থীরাই থাকে তাদের স্বায়ত্বশাসনমূলক কার্যাবলি বলে| বিদ্যালয় সমবায় সমিতি, হােস্টেল পরিচালনা প্রভৃতি শিক্ষার্থীদের স্বায়ত্বশাসনমূলক কার্যাবলির উদাহরণ।


(৯) অবসর জীবনযাপনমূলক কার্যাবলি : বিদ্যালয়ের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে কয়েকটি শিক্ষার্থীর অবসর জীবনযাপনে সহায়ক হয়। এই সমস্ত কাজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ক আলােচনা, বিনােদনমূলক সংঘ সংগঠন, শব্দকোষ তৈরি ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য।


(১০) সৃজনশীল কার্যাবলি : বিদ্যালয়ের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে যেসব কাজ শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশে সাহায্য করে, তাদের সৃজনশীল কার্যাবলি বলে। যেমন অভিনয়, আবৃত্তি, গানবাজনা, অঙ্কন, নৃত্য, বিতর্ক, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, সেমিনার, বিজ্ঞান প্রদর্শনী ইত্যাদি।


শিক্ষার লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে পাঠক্রমের উপযােগিতা বিশ্লেষণ করাে।


পাঠক্রমের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে আলােচনা করাে।


পাঠক্রম কী? কারিকুলাম কথাটি কোন্ শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে এবং এর অর্থ কী? পাঠক্রমের সাংগঠনিক উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।


অভিজ্ঞতাভিত্তিক, জীবনকেন্দ্রিক ও অবিচ্ছিন্ন পাঠক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের উপযােগিতা লেখাে।


পাঠক্রম প্রণয়নের উপাদানগুলি উল্লেখ করাে।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ধারণা এবং সংজ্ঞা দাও। এর বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।


সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির উদ্দেশ্যগুলি আলােচনা করাে।