ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি: নিয়মিত ও অনিয়মিত সাম্রাজ্য (Short-Q&A)

ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি: নিয়মিত ও অনিয়মিত সাম্রাজ্য


সর্বপ্রথম কোন্ ইউরােপীয় নাবিক কবে জলপথে ভারতে আসেন?

পাের্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেন। তিনি ভারতের পশ্চিম উপকূলে কালিকট বন্দরে এসে পৌঁছােন।


এশিয়ার কোন দুটি দেশে ইউরােপীয়দের সর্বাধিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখানে কোন্ শক্তির সর্বাধিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়?

এশিয়া মহাদেশের ভারত ও চিনে ইউরােপীয়দের সর্বাধিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখানে সর্বাধিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটেন।


মােগল সাম্রাজ্যের অবক্ষয়ের সময় ভারতে গড়ে ওঠা কয়েকটি আঞ্চলিক শক্তির নাম লেখাে।

মােগল সাম্রাজ্যের অবক্ষয়ের সময় ভারতে গড়ে ওঠা কয়েকটি উল্লেখযােগ্য আঞ্চলিক শক্তি ছিল বাংলা, হায়দ্রাবাদ, অযােধ্যা, মহীশূর, মারাঠা প্রভৃতি।


মুর্শিদকুলি খাঁ কে ছিলেন?

মুর্শিদকুলি খাঁ ছিলেন মােগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের বিশ্বস্ত অনুচর। তিনি ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার দেওয়ান এবং ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ও উড়িষ্যার সুবাদার বা নবাব নিযুক্ত হন।


পাের্তুগিজরা ভারতের কোথায় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে?

পাের্তুগিজরা ভারতের কালিকট, কোচিন, গােয়া, দমন, দিউ, সলসেট, বেসিন, বােম্বাই, হুগলি প্রভৃতি স্থানে তাদের বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে।


ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের কোথায় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে?

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের সুরাট, আগ্রা, আহম্মদনগর, ব্রোচ, মাদ্রাজ, কলকাতা প্রভৃতি স্থানে তাদের বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে।


১৬১২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কোথায় প্রথম ইংরেজ বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়?

১৬১২ খ্রিস্টাব্দে সুরাটে প্রথম ইংরেজ বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়।


অতীত স্মরণ (Short-Q&A)

উনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার (Short-Q&A)

সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া (Short-Q&A)

ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (Short-Q&A)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ (Short-Q&A)

ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগ (Short-Q&A)

অব-উপনিবেশীকরণ (Short-Q&A)


স্যার টমাস রাে কবে, কী উদ্দেশ্যে এবং ভারতের কোন্ সম্রাটের দরবারে হাজির হন?

ব্রিটিশ রাজ প্রথম জেমসের দূত স্যার টমাস রাে ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে মােগল সম্রাট জাহাঙ্গিরের দরবারে হাজির হন। তার উদ্দেশ্য ছিল জাহাঙ্গিরের কাছ থেকে কিছু বাণিজ্যিক সুযােগসুবিধা লাভ করা।


'দস্তক' কী?

মােগল সম্রাট ফারুখশিয়ার ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুকূলে এক ফরমান জারি করেন। এই ফরমান অনুসারে কোম্পানি বার্ষিক ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য ও অন্যান্য কিছু অধিকার পায়। এটি ফারুখশিয়ারের ফরমান বা দস্তক নামে পরিচিত।


সিরাজউদদৌলা কবে কলকাতা আক্রমণ ও ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করেন?

সিরাজ-উদদৌলা ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা আক্রমণ ও ২০ জুন ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করেন।


অন্ধকূপ হত্যা কী?

হলওয়েল নামক জনৈক ইংরেজ কর্মচারী উল্লেখ করেছেন যে, সিরাজ-উদদৌলা কর্তৃক কলকাতা আক্রমণের (১৭৫৬ খ্রি.) পরে তার নির্দেশে কলকাতায় বন্দি ১৪৬ জন ইংরেজ সৈন্যকে ১৮ ফুট লম্বা ও ১৪ ফুট ১০ ইঞ্চি চওড়া একটি ছােটো ঘরে আটক রাখা হয়। এর ফলে ১২৩ জন শাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। এই ঘটনা অন্ধকূপ হত্যা (Black Hole Tragedy) নামে পরিচিত।


কলকাতা দখল করে সিরাজ-উদদৌলা কলকাতার কী নামকরণ করেন এবং তিনি কাকে সেখানকার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন?

কলকাতা দখল করে সিরাজ-উদদৌলা এর নতুন নামকরণ করেন 'আলিনগর এবং তিনি সেখানকার শাসনকর্তা হিসেবে মানিকচাদকে নিযুক্ত করেন।


আলিনগরের সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলার নবাব সিরাজ-উদদৌলা ও কলকাতার ইংরেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


আলিনগরের সন্ধির দ্বারা ইংরেজরা কী কী অধিকার লাভ করে?

আলিনগরের সন্ধির দ্বারা ইংরেজরা বিনাশুল্কে বাণিজ্য, কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ ও নিজ নামাঙ্কিত মুদ্রা প্রচলনের অধিকার লাভ করে।


কবে, কাদের মধ্যে পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল?

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে (২৩ জুন) বাংলার নবাব সিরাজ-উদদৌলা এবং কলকাতার ইংরেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল।


পলাশির যুদ্ধে উভয় পক্ষের প্রধান সেনাপতি কারা ছিলেন?

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশির যুদ্ধে সিরাজ-উদদৌলার বাহিনীর মিরজাফর এবং ইংরেজ বাহিনীর লর্ড ক্লাইভ প্রধান সেনাপতি ছিলেন।


পলাশির লুণ্ঠন বলতে কী বােঝ?

পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা থেকে অর্থ ও সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করেছিল। ইংরেজরা সােনা, রুপাে বা অন্য কোনাে পণ্যসামগ্রীর বিনিময়ে এই সম্পদের নির্গমন ঘটায়নি। তাই এই ঘটনাকে অনেকে লুণ্ঠন বলে উল্লেখ করেছেন। ব্রুকস অ্যাডামস আর্থিক নির্গমনের এই ঘটনাকে ‘পলাশির লুণ্ঠন' বা "Plassey Plunder' বলে অভিহিত করেছেন।


কবে, কাদের মধ্যে এলাহাবাদের প্রথম সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং অয্যোধার নবাব সুজাউদদৌলার মধ্যে এলাহাবাদের প্রথম সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


কবে, কাদের মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং দিল্লির মােগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের মধ্যে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


কে, কবে ভারতের প্রথম গভর্নর-জেনারেল নিযুক্ত হন?

লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম গভর্নর-জেনারেল নিযুক্ত হন।


ওয়ারেন হেস্টিংসের কাউন্সিলের প্রথম চারজন সদস্য কারা ছিলেন?

ওয়ারেন হেস্টিংসের কাউন্সিলের প্রথম চারজন সদস্য ছিলেন ক্লেভারিং, মনসন, বারওয়েল এবং ফিলিপ ফ্রান্সিস।


পিটের ভারত শাসন আইন বলতে কী বােঝ?

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম পিটের উদ্যোগে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অ্যাক্ট' নামে একটি আইন পাস হয়। এটি পিটের ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত।


পিটের ভারত শাসন আইনের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

পিটের ভারত শাসন আইনের দ্বারা—[i] ব্রিটিশ অর্থসচিব, একজন রাষ্ট্রসচিব ও মনােনীত প্রিভি কাউন্সিলের ৪ জন সদস্যকে নিয়ে বাের্ড অব কন্ট্রোল' (Board of Control) গঠিত হয়। [ii] বাের্ড অব কন্ট্রোলের যাবতীয় নির্দেশ ভারতে কোম্পানির কাছে পাঠানাের দায়িত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যে কোম্পানির ৩ জন ডিরেক্টরকে নিয়ে 'সিক্রেট কমিটি’ (Secret Committee) গঠিত হয়।


পিটের ভারত শাসন আইনের দুটি ত্রুটি উল্লেখ করাে।

পিটের ভারত শাসন আইনের দুটি ত্রুটি হল- [i] কোম্পানির শাসন পরিচালনার জন্য পূর্বেকার পরিচালক সভার অস্তিত্ব থাকলেও নতুন এই আইনের দ্বারা 'বাের্ড অব কন্ট্রোল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। [ii] বাের্ড অব কন্ট্রোলের নির্দেশগুলি 'সিক্রেট কমিটির মাধ্যমে ভারতে আসতে প্রচুর সময় লাগত। ফলে গভর্নর-জেনারেল অধিকাংশ সময় নিজে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতেন।


পিটের ভারত শাসন আইনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করাে।

পিটের ভারত শাসন আইনের দুটি গুরুত্ব হল—[i] রেগুলেটিং আইনের ত্রুটিগুলিকে পিটের ভারত শাসন আইনে দূর করার চেষ্টা করা হয়। [ii] পিটের আইনের দ্বারা গভর্নর-জেনারেলের ক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।


কোন আইনের দ্বারা কলকাতা সুপ্রিমকোর্ট স্থাপিত হয়?

১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুসারে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট স্থাপিত হয়।


ভারতের সুপ্রিমকোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি কে ছিলেন?

ভারতের সুপ্রিমকোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন এলিজা ইম্পে।


ব্রিটিশ ভারতে চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইনগুলি কী?

ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যের সনদ নবীকরণের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রতি ২০ বছর অন্তর মােট ৪টি আইন পাস করে। এগুলি চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন নামে পরিচিত।


১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি ধারা উল্লেখ করাে।

১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি উল্লেখযােগ্য ধারা হল- [i] ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের আধিকার আরও ২০ বছর বাড়ানাে হয়। [ii] বাের্ড অব কন্ট্রোলের সদস্য সংখ্যা ৬ থেকে কমিয়ে ৫ জন করা হয়।


কোন্ চার্টার আইনে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অবসান ঘটে?

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার আইন দ্বারা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার বন্ধ হয়ে যায়।


১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি ধারা উল্লেখ করাে।

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি উল্লেখযােগ্য ধারা হল- [i] ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আরও ২০ বছরের জন্য ভারতে শাসন পরিচালনার অধিকার পায়। [ii] ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার লােপ করা হয় এবং যে-কোনাে ইংরেজ বণিক ভারতে ব্যাবসা করার অধিকার পান।


১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি ধারা উল্লেখ করাে।

১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি উল্লেখযােগ্য ধারা হল—[i] ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আরও ২০ বছরের জন্য ভারতে শাসন পরিচালনার অধিকার পায়। [ii] বাংলার গভর্নর-জেনারেল সেই সময় থেকে 'ভারতের গভর্নর-জেনারেল বলে বিবেচিত হন।


সর্বশেষ চার্টার আইন কবে প্রবর্তিত হয়?

সর্বশেষ চার্টার আইন প্রবর্তিত হয় ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে।


১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি ধারা উল্লেখ করাে।

১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট-এর দুটি উল্লেখযােগ্য ধারা হল- [i] অবাধ প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে কোম্পানির আমলাদের নিয়ােগের সিদ্ধান্ত হয়। [ii] আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে বড়ােলাটের অধীনে ১২ জন সদস্যবিশিষ্ট আইন পরিষদ গঠিত হয়।


১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দুটি ধারা উল্লেখ করাে।

১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দুটি উল্লেখযােগ্য ধারা হল- [i] ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে। [ii] ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ সরকার অর্থাৎ ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়ার হাতে প্রদান করা হয়।


ঔপনিবেশিক ভারতের নিরিখে 'আইনের শাসন বলতে কী বােঝ?

ব্রিটিশ শাসকরা ঔপনিবেশিক ভারতে 'আইনের শাসন'-এর ধারণার প্রবর্তন করেন। এর অর্থ ছিল যে, ব্রিটিশ প্রশাসন আইন মেনে শাসন পরিচালনা করবে।


কোন্ আইনের দ্বারা ভারতে 'ভাইসরয় পদের সৃষ্টি হয় এবং ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?

১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা ভাইসরয় পদের সৃষ্টি হয় এবং ভারতের প্রথম ভাইসরয় ছিলেন লর্ড ক্যানিং।


কোড কর্নওয়ালিশ কী?

ভারতের বড়ােলাট লর্ড কর্নওয়ালিশ এদেশে কোম্পানির কর্মচারীদের দুর্নীতি দমন ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন নীতি ও কর্মপদ্ধতির প্রবর্তন করেন। এই কর্মপদ্ধতি কোড কর্নওয়ালিশ’ নামে পরিচিত।


কে, কবে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ভারতের বড়ােলাট লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।


লর্ড ওয়েলেসলি কী উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

ভারতে ইংরেজ প্রশাসকদের ভারতীয় ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক রীতিনীতি প্রভৃতি বিষয়ে যথার্থ প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে লর্ড ওয়েলেসলি কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।


ভারতবর্ষে আমলাতন্ত্রের জনক কে?

ভারতবর্ষে আমলাতন্ত্রের জনক হলেন কর্নওয়ালিশ।


প্রথম ভারতীয় আইসিএস (ICS)-এর নাম কী?

প্রথম ভারতীয় আইসিএস (ICS)-এর নাম সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।


কবে, কার উদ্যোগে ভারতে নিয়মিত পুলিশ বাহিনী গড়ে ওঠে?

১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বড়ােলাট লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের উদ্যোগে এদেশে নিয়মিত পুলিশ বাহিনী গড়ে ওঠে।


কে, কবে ভারতে স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তােলেন?

ক্যাপটেন স্ট্রিঞ্জার লরেন্স ১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয়দের নিয়ে এদেশে একটি স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তােলেন।


ইংরেজরা কোন্ জাতিগুলিকে 'যুদ্ধােপযােগী জাতি হিসেবে চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর নিয়ােগে অগ্রাধিকার দেয়?

ইংরেজরা তাদের অনুগত উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের পাঠান, পাঞ্জাবের জাঠ, উত্তর ভারতের রাজপুত, নেপালের গােরখা প্রভৃতিকে যুদ্ধােপযােগী জাতি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের সেনাবাহিনীতে নিয়ােগে অগ্রাধিকার দেয়।


ওয়ারেন হেস্টিংস ভারতে কোন্ কোন্ ভূমি বন্দোবস্ত চালু করেন?

ওয়ারেন হেস্টিংস ভারতে পাঁচসালা ও একসালা বন্দোবস্ত চালু করেন।


রায়তওয়ারি ব্যবস্থার জনক কে?

টমাস মনরাে ছিলেন রায়তওয়ারি ব্যবস্থার জনক।


রায়তওয়ারি ও মহলওয়ারি বন্দোবস্ত কোথায় চালু হয়?

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত এবং উত্তরপ্রদেশ, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাঞ্জাব ও মধ্য ভারতের কোনাে কোনাে অঞ্চলে মহলওয়ারি বন্দোবস্ত চালু হয়।


কোন্ ভূমিব্যবস্থা জমিদারদের জমির ওপর মালিকানা স্বত্ব দিয়েছিল?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত জমিদারদের জমির ওপর মালিকানা স্বত্ব দিয়েছিল।


রেজা খান ও সিতাব রায় কে ছিলেন?

ক্লাইভের আমলে মহম্মদ রেজা খান ছিলেন বাংলার এবং সিতাব রায় ছিলেন বিহার ও উড়িষ্যার 'নায়েব দেওয়ান' বা রাজস্ব আদায়কারী।


কে, কবে এবং কী উদ্দেশ্যে 'ভ্রাম্যমাণ কমিটি গঠন করেন?

লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস তার কাউন্সিলের চারজন সদস্যকে নিয়ে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ভ্রাম্যমাণ কমিটি গঠন করেন। ভ্রাম্যমান কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল রাজস্ব আদায় করা।


ইজারাদারি ব্যবস্থা কাকে বলে এবং কে এই ব্যবস্থার প্রচলন করেন?

ব্রিটিশ শাসনকালে রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে ভ্রাম্যমাণ কমিটি জেলায় জেলায় ঘুরে জমির বন্দোবস্ত দিত। যে জমিদার সর্বোচ্চ পরিমাণ রাজস্ব দিতে রাজি হত ভ্রাম্যমাণ কমিটি তাকে জমির বন্দোবস্ত দিত, এটি ইজারাদারি ব্যবস্থা নামে পরিচিত। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ইজারাদারি ব্যবস্থার প্রচলন করেন।


কে, কোন্ কমিটি বাতিল করে কবে রাজস্ব বাের্ড গঠন করেন?

লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ভ্রাম্যমাণ কমিটি বাতিল করে ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রাজস্ব বাের্ড গঠন করেন।


কে, কবে এবং কী উদ্দেশ্যে আমিনি কমিশন গঠন করেন?

বড়ােলাট লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে আমিনি কমিশন গঠন করেন। আমিনি কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য ছিল রাজস্ব-সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা।


কে, কবে এবং কোথায় দশসালা বন্দোবস্ত চালু করেন?

বড়ােলার্ট লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ও বিহারে এবং ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যায় দশসালা বন্দোবস্ত চালু করেন।


কে, কবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন?

লর্ড কর্নওয়ালিশ ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মার্চ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন করেন।


চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের শর্তে বলা হয় যে, [i] জমিদার-তালুকদাররা বংশানুক্রমিকভাবে জমি ভােগদখল করতে পারবেন। [ii] জমিদার ইচ্ছামতাে জমি দান, বিক্রি বা বন্ধক রাখতে পারবেন।


সূর্যাস্ত আইন কী ছিল?

কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অন্যতম শর্ত ছিল সূর্যাস্ত আইন। এই আইনে বলা হয় বাংলা সালের হিসেবে বছরের শেষ দিনে সূর্যাস্ত হওয়ার আগেই জমিদাররা তাদের বকেয়া রাজস্ব জমা দিতে বাধ্য থাকবে, না হলে তাদের জমিদারি বাজেয়াপ্ত হবে।


কর্নওয়ালিশের আগে কারা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান?

কর্নওয়ালিশের আগে আলেকজান্ডার ডাও, হেনরি পাত্তুলাে, ড্যাক্রিস, টমাস ল, ফিলিপ ফ্রান্সিস প্রমুখ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সপক্ষে যুক্তি দেখান।


পত্তনিপ্রথা কী?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে জমিদাররা সময়মতাে খাজনা আদায়ের জন্য তাদের জমির এক-একটি অংশ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য অন্য কোনাে ব্যক্তিকে নিয়ােগ করতেন। একে পত্তনিপ্রথা বলে।


কোথায়, কাদের উদ্যোগে কবে রায়তওয়ারি ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়?

ভারতের দক্ষিণ (মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির কিছু অঞ্চল বাদে) ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ক্যাপটেন আলেকজান্ডার রিড ও স্যার টমাস মনরাের উদ্যোগে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে রায়তওয়ারি ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়।


রায়তওয়ারি বন্দোবস্তের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।

রায়তওয়ারি ব্যবস্থার দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—[i] এই ব্যবস্থায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করার ফলে সরকার ও কৃষকদের মাঝে কোনাে মধ্যস্বত্বভােগী শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল না। [ii] এই ব্যবস্থায় জমির সম্পূর্ণ মালিকানা ছিল সরকারের হাতে, কৃষকদের জমির ওপর কোনাে অধিকার ছিল না।


কবে, কোথায় মহলওয়ারি বন্দোবস্ত চালু হয়?

১৮২২ খ্রিস্টাব্দে গাঙ্গেয় উপত্যকা, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মধ্য ভারতের কিছু কিছু অঞ্চলে মহলওয়ারি ব্যবস্থা চালু হয়।


ভাইয়াচারি বন্দোবস্ত বলতে কী বােঝ?

ব্রিটিশ সরকার উনবিংশ শতকে পাঞ্জাবে ভাইয়াচারি ব্যবস্থা চালু করে। এই ব্যবস্থা অনুসারে, রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব গ্রামেরই একজন ব্যক্তির হাতে প্রদান করা হত এবং গ্রামের প্রত্যেক চাষির ওপর পৃথক পৃথক ভাবে রাজস্ব ধার্য করা হত। এই ব্যবস্থায় কয়েক বছর পরপর রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানাে হত।


এজেন্সি ব্যবস্থা কাকে বলে?

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বিভিন্ন কর্মচারীকে এজেন্ট হিসেবে নিয়ােগ করে ১৭৫৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তাদের মাধ্যমে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করত। এটি এজেন্সি ব্যবস্থা নামে পরিচিত।


অষ্টাদশ শতকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বস্ত্রশিল্প কেন্দ্রের নাম লেখাে।

অষ্টাদশ শতকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বস্ত্রশিল্প কেন্দ্র ছিল বাংলা, বারাণসী, লক্ষ্ণেী, আগ্রা, মুলতান, লাহাের, বুরহানপুর, সুরাট, ব্রোচ, আমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালাের, মাদুরাই, বিশাখাপত্তনম প্রভৃতি।


ঔপনিবেশিক ভারতের নিরিখে 'সম্পদের বহির্গমন’ বলতে কী বােঝ?

পলাশির যুদ্ধ জয়ের পর কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে বাংলা ও ভারতের অন্যান্য প্রান্ত থেকে কোনাে প্রতিদান ছাড়াই বিপুল পরিমাণ অর্থ, বিভিন্ন পণ্য ও উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী ইংল্যান্ডে চালান করেছিল। এই ঘটনাটিই ঐতিহাসিক ও সমালােচকদের মতে সম্পদের নির্গমন ও অর্থনৈতিক নিষ্ক্রমণ (Economic Drain) নামে পরিচিত।


অব-শিল্পায়ন কী?

ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের বাজারগুলি ইংল্যান্ডের শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত পণ্যে ছেয়ে গেলে দেশের চিরাচরিত কুটিরশিল্প ধ্বংস হয়ে যায়। এই ঘটনা অব-শিল্পায়ন নামে পরিচিত।


ভারতে কবে রেলপথ প্রথম স্থাপিত হয়?

১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতে রেলপথ প্রথম স্থাপিত হয়।


ভারতে প্রথম কারা রেলপথের প্রতিষ্ঠা করে?

বড়ােলাট লর্ড ডালহৌসির (১৮৪৮-৫৬ খ্রি.) আমলে গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেল কোম্পানি (GIPR) ভারতে সর্বপ্রথম রেলপথের প্রতিষ্ঠা করে।


কে, কবে পাঞ্জাব জয় করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন?

১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড ডালহৌসি পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।


ভারতীয় রেলপথের জনক কাকে বলা হয়?

ডালহৌসিকে ভারতীয় রেলপথের জনক বলা হয়।


ভারতে কবে, কোথায় প্রথম রেলযােগাযােগ স্থাপিত হয়?

ভারতে লর্ড ডালহৌসির আমলে ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ২১ মাইল পথে রেলযােগাযােগ স্থাপিত হয়।


ভারতের দ্বিতীয় রেলপথ কবে, কোথায় চালু হয়?

ভারতের দ্বিতীয় রেলপথ ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দ হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত চালু হয়।


গ্যারান্টি ব্যবস্থা কাকে বলে?

ভারতে রেলপথ নির্মাণে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলিকে উৎসাহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার তাদের বিনামুল্যে জমি দান, বার্ষিক বিনিয়ােগের ওপর নির্দিষ্ট হারে সুদপ্রদান প্রভৃতি বিষয়ে গ্যারান্টি বা প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি গ্যারান্টি ব্যবস্থা নামে পরিচিত।


গ্যারান্টি ব্যবস্থার দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

গ্যারান্টি ব্যবস্থায় বলা হয় যে, [i] সরকার কোম্পানিগুলিকে রেলপথ নির্মাণের জন্য বিনামূল্যে জমি দেবে। [ii] কোম্পানিগুলির বিনিয়ােগ করা মূলধনের ওপর বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দেবে।


অ্যাকওয়ার্থ কমিটি গঠন হওয়ার পিছনে কারণ কী ছিল?

রেলপথের সম্প্রসারণ ও রেল প্রশাসন সংস্কারের উদ্দেশ্যে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে স্যার উইলিয়াম অ্যাকওয়ার্থের সভাপতিত্বে অ্যাকওয়াথ্থ কমিটি নিযুক্ত করা হয়। এই কমিটি রেলপথ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে প্রতি পাঁচ বছরে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়ােগ, পৃথক বাজেট, সরকারি নিয়ন্ত্রণে রেলপথ নির্মাণ প্রভৃতি প্রস্তাব দেয়।


ব্রিটিশ পুঁজিপতিদের উদ্যোগে ভারতে কোন কোন্ শিল্পের বিকাশ ঘটে?

ব্রিটিশ পুঁজিপতিদের উদ্যোগে ভারতে রেলপথ, সেচের যন্ত্রপাতি, সুতিবস্ত্র, চা, কফি, নীল, আখ, পাট, কয়লা, লৌহ-ইস্পাত, জাহাজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, কাগজ, চামড়া, মদ, সিমেন্ট প্রভৃতি শিল্পের বিকাশ ঘটে।


কবে, কোথায় বাউড়িয়া কটন মিল প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৮১৮ খ্রি. হাওড়ায় বাউড়িয়া কটন মিল প্রতিষ্ঠিত হয়।


ভারতে কে, কবে এবং কোথায় চা গাছের আবিষ্কার করেন?

ভারতে রবার্ট ব্রুস নামে জনৈক ইংরেজ ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে আসামের জঙ্গলে সর্বপ্রথম চা গাছ আবিষ্কার করেন।


কে, কবে ও কোথায় ভারতে প্রথম পাটকল প্রতিষ্ঠা করেন?

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জনৈক কর্মচারী জর্জ অকল্যান্ড ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার নিকটবর্তী রিষড়ায় ভারতের প্রথম পাটকল প্রতিষ্ঠা করেন।


কবে, কার উদ্যোগে ভারতে সর্বপ্রথম কাপড়ের কল প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে পারসি শিল্পপতি কাউয়াসজি নানাভাই দাভরের উদ্যোগে বােম্বাইয় সর্বপ্রথম একটি কাপড়ের কল প্রতিষ্ঠিত হয়।


কে, কবে জামশেদপুরে কী নামে লৌহ- ইস্পাত কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন?

পারসি শিল্পপতি জামশেদজি টাটা ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জামশেদপুরে ‘টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি (TISCO) নামে লৌহ-ইস্পাত কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন।


কে, কবে এবং কোথায় বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস' প্রতিষ্ঠা করেন?

বিখ্যাত বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায় ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা 'বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস' প্রতিষ্ঠা করেন।


হিতবাদ বা উপযােগিতাবাদ কাকে বলে?

হিতবাদী বা উপযােগিতাবাদী দর্শনের মৌলিক আদর্শ হল সর্বাধিক মানুষের সুখের বিধান, দুঃখমােচন এবং মঙ্গলসাধন। উপযােগবাদী মতাদর্শের উদ্ভাবক ছিলেন জেরেমি বেন্থাম। উপযােগবাদের অন্যান্য প্রবক্তাগণের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন জেমস মিল, জেমস মিলের পুত্র জন স্টুয়ার্ট মিল, জন অস্টিন প্রমুখ। তাদের মতে, যখন কোনাে কাজের ফল কোনাে ব্যক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বা ক্ষতি করে না, তখন সেটাকেই উপযােগিতাবাদ অনুসারী কর্মোদ্যোগ বলা হয়।


জেমস মিল কে ছিলেন?

জেমস মিল (১৭৭৩-১৮৩৬ খ্রি.) ছিলেন একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ ঐতিহাসিক, রাষ্ট্রনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং দার্শনিক।


জেমস মিল ভারতের ইতিহাসকে কয়টি যুগে বিভক্ত করেছেন ও কী কী?

জেমস মিল ভারতের ইতিহাসকে তিনটি যুগে বিভক্ত করেছেন, যথা—[i] হিন্দু যুগ, [ii] মুসলিম যুগ ও [iii] ব্রিটিশ যুগ।


উপযােগবাদের কয়েকজন উল্লেখযােগ্য প্রবক্তার নাম লেখাে।

উপযােগবাদের কয়েকজন উল্লেখযােগ্য প্রবক্তা হলেন জেরেমি বেন্থাম, জেমস মিল, জন স্টুয়ার্ট মিল, জন অস্টিন প্রমুখ।


মেকলে কে ছিলেন?

মেকলে ছিলেন একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ চিন্তাবিদ, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক এবং হুইগ দলের নেতা।


বন্দিবাসের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল এবং এই যুদ্ধে কোন্ সেনাপতির বাহিনী পরাজিত হয়?

বন্দিবাসের যুদ্ধ ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ইংরেজ ও ফরাসি কর্তৃপক্ষের মধ্যে হয়েছিল। বন্দিবাসের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি স্যার আয়ার কূটের বাহিনীর কাছে ফরাসি সেনাপতি কাউন্ট লালি র বাহিনী পরাজিত হয়।


দাক্ষিণাত্য কর্ণাটকের যুদ্ধগুলিতে অংশগ্রহণকারী ইংরেজ ও ফরাসি শক্তির কয়েকজন সেনাপতির নাম লেখাে।

দাক্ষিণাত্যে কর্ণাটকের যুদ্ধগুলিতে অংশগ্রহণকারী ইংরেজ সেনাপতি ছিলেন স্যান্ডার্স, আয়ার কূট, ফোর্ড, লরেন্স প্রমুখ এবং উল্লেখযােগ্য ফরাসি সেনাপতি ছিলেন ডুপ্লে, কাউন্ট লালি, বুসী প্রমুখ।


বিদারার যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল এবং এই যুদ্ধে কারা পরাজিত হয়?

বিদারার যুদ্ধ ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ইংরেজ বাহিনী ও ওলন্দাজ বাহিনীর মধ্যে হয়েছিল। এই যুদ্ধে ওলন্দাজরা পরাজিত হয়।


বক্সারের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে সংঘটিত হয় এবং এই যুদ্ধে কারা জয়লাভ করে?

বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব মিরকাশিম, অযােধ্যার নবাব সুজাউদদৌলা ও দিষ্লির মােগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ্ আলমের মিলিত বাহিনী ও ইংরেজ বাহিনীর মধ্যে হয়েছিল। এই যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনী জয়লাভ করে।


কবে, কাদের মধ্যে এলাহাবাদের প্রথম ও দ্বিতীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

এলাহাবাদের প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও অযােধ্যার নবাব সুজা-উদদৌলার মধ্যে। এলাহাবাদের দ্বিতীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও দিল্লির মােগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের মধ্যে।


ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ও বিহারের নায়েব-নাজিম পদে কাদের নিযুক্ত করে?

ইংরেজ কোম্পানি ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নায়েব-নাজিম পদে মহম্মদ রেজা খা এবং বিহারের নায়েব নাজিম পদে সিতাব রায়-কে নিযুক্ত করে।


দেওয়ানি কথার অর্থ কী?

দেওয়ানি কথার অর্থ হল রাজস্ব আদায়ের অধিকার।


দ্বৈত শাসন বলতে কী বােঝায়?

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলার দেওয়ানি লাভ করার পর নবাবের হাতে আইনত বাংলার শাসনভার থাকলেও প্রকৃত শাসনক্ষমতা কোম্পানির হাতে চলে যায়। ফলে বাংলায় একদিকে নবাবের এবং অন্যদিকে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত।


কোন্ সময় পর্যন্ত বাংলায় দ্বৈত শাসন চলে এবং কবে, কার দ্বারা দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটে?

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় দ্বৈত শাসন চলে। গভর্নর লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে বাংলার যাবতীয় শাসনভার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে তুলে নিলে বাংলায় দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটে।


মহীশূরের শাসক হায়দার আলি ও টিপু সুলতান ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে কয়টি যুদ্ধ হয় ও কী কী?

মহীশুরের শাসক হায়দার আলি ও টিপু সুলতান এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে চারটি যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়, যথা—[i] প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ (১৭৬৭-৬৯ খ্রি.), [ii] দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ (১৭৮০-৮৪ খ্রি.), [iii] তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ। (১৭৯০-৯২ খ্রি.) ও [iv] চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ (১৭৯৯ খ্রি.)।


কোন যুদ্ধের পর কবে এবং কাদের মধ্যে ম্যাঙ্গালােরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের পর ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের শাসক টিপু সুলতান ও ইংরেজদের মধ্যে ম্যাঙ্গালােরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় এবং এই সন্ধির দুটি প্রধান শর্ত উল্লেখ করাে।

১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের শাসক টিপু সুলতান এবং ইরেজদের মধ্যে শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধির দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ছিল—[i] টিপু সুলতান যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা এবং নিজ রাজ্যের অর্ধাংশ ইংরেজ, নিজাম ও মারাঠাদের ছেড়ে দেবেন। [ii] ক্ষতিপূরণের টাকার জামিন হিসেবে টিপু তাঁর দুই পুত্রকে ইংরেজদের হাতে তুলে দেবেন।


কোন্ যুদ্ধে টিপু সুলতান পরাজিত হন ও নিহত হন?

চতুর্থ ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধে টিপু সুলতান পরাজিত ও নিহত হন।


সুরাটের প্রথম সন্ধি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

সুরাটের প্রথম সন্ধি ১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে রঘুনাথ রাও-এর সঙ্গে বােম্বাই-এর ইংরেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।


ইংরেজ ও মরাঠাদের মধ্যে কয়টি যুদ্ধ হয়েছিল ও কী কী?

ইংরেজ ও মারাঠাদের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছিল, যথা—[i] প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ (১৭৭৫-৮২ খ্রি.), [ii] দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ (১৮০৩-০৫ খ্রি.), [iii] তৃতীয় ইঙ্গ- মারাঠা যুদ্ধ (১৮১৭-১৯ খ্রি.)।


কবে, কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস মারাঠার পেশােয়ার সঙ্গে ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষর করেন।


কবে, কাদের মধ্যে সবাই-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় এবং এই সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও মারাঠাদের মধ্যে সবাই-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধির দ্বারা- [i] ইংরেজরা দ্বিতীয় মাধব রাওকে পেশােয়া বলে মেনে নেয়। [ii] রঘুনাথ রাওকে বার্ষিক ৩ লক্ষ টাকা বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।


কবে এবং কাদের মধ্যে বেসিনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?

১৮০২ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা পেশােয়া দ্বিতীয় বাজীরাও ও ইংরেজদের মধ্যে বেসিনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।


বেসিনের সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

বেসিনের সন্ধির দ্বারা—[i] পেশােয়া ইংরেজদের সঙ্গে 'অধীনতামূলক মিত্রতা চুক্তিতে আবদ্ধ হন। [ii] পেশােয়ার সুরক্ষার জন্য পুনায় ইংরেজ সেনাবাহিনী নিয়ােগ করা হয়।


তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজয়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল উল্লেখ করাে।

তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে মরাঠাদের পরাজয়ের দুটি ফল ছিল—[1] পেশােয়া বাজীরাও পদচ্যুত হন ও কোম্পানির বৃত্তিভােগীতে পরিণত হন। [2] পেশােয়ার পদ বিলুপ্ত করে তার রাজ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত হয়।


ভারতের ইতিহাসে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দকে জলবিভাজিকা বলা হয় কেন?

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক পার্সিভ্যাল স্পিয়ারের মতে, ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে জলবিভাজিকা নামে পরিচিত কারণ, সেই বছরে তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে জয়ী হয়ে ভারতে ব্রিটিশের আধিপত্য নতুন রূপ পায় অর্থাৎ, ভারতের বহু অঞ্চল ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়।


মহারাষ্ট্রের ম্যাকিয়াভেলি কাকে বলা হয়?

মহারাষ্ট্রের ম্যাকিয়াভেলি নানা ফড়নবিশকে বলা হয়।


ইংরেজ ও শিখ শক্তির মধ্যে কয়টি যুদ্ধ হয় ও কী কী?

ইংরেজ ও শিখদের মধ্যে দুটি যুদ্ধ হয়, যথা- [i] প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ (১৮৪৫-৪৬ খ্রি.) এবং [ii] দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ (১৮৪৮-৪৯খ্রি.)।


লাহােরের সন্ধি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়? এই সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

লাহােরের সন্ধি ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবের শিখ শক্তি ও ইংরেজদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।


লাহােরের সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

লাহােরের সন্ধির দুটি শর্ত হল- [i] জলন্ধর-দোয়াব অঞ্চল এবং শতদুর দক্ষিণাঞ্চল ইংরেজদের রাজ্যভুক্ত হয়। [ii] শিখরা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেড় কোটি টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কাশ্মীর রাজ্যটি ইংরেজদের ছেড়ে দেয়।


আলিনগরের সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে আলিনগরের সন্ধি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ও বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদদৌলার মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।


চিনে 'নজরানা ব্যবস্থা' বলতে কী বােঝায়?

কোনাে বিদেশি দুত বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে চিন সম্রাটের সাক্ষাৎপ্রার্থী হলে প্রথমে তাকে চিন সম্রাটের প্রতি বশ্যতা স্বীকারের নিদর্শনস্বরূপ উপটৌকন দিতে হত। এটি নজরানা পদ্ধতি নামে পরিচিত।


কাও-তাও প্রথা কী?

কোনাে বিদেশি দূত বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে চিন সম্রাটের সাক্ষাৎপ্রার্থী হলে প্রথমে তাকে চিন সম্রাটের প্রতি বশ্যতা স্বীকারের নিদর্শনস্বরূপ সম্রাটের সামনে ভূমি পর্যন্ত নত হতে হত। এটি 'কাও-তাও প্রথা নামে পরিচিত।


কোন্ ইউরােপীয় দেশ চিনের সঙ্গে প্রথম ব্যাবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল?

পাের্তুগাল চিনের সঙ্গে প্রথম ব্যাবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল।


বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য চিনের কোন্ বন্দর দুটি সীমাবদ্ধ ছিল?

চিনের ক্যান্টন ও ম্যাকাও বন্দর দুটি বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল।


তাইপিং বিদ্রোহ কবে ও কেন হয়?

চিনে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে (১৮৫০-১৮৬৪ খ্রি.) মাং সরকারের অপশাসন ও দুর্নীতির কারণে তাইপিং বিদ্রোহ হয়।


তাইপিং’ শব্দের অর্থ কী?

তাইপিং শব্দের অর্থ হল মহান শান্তি।


ইউরােপের প্রথম কোন নাবিক কবে চিনে পৌঁছােন?

প্রথম পাের্তুগিজ নাবিক রাফয়েল পেরস্টেলাে ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দে চিনে পৌছােন।


ঔপনিবেশিক আমলে চিনের কোন্ কোন্ অঞ্চলে খনিজ সম্পদের বিপুল ভাণ্ডার ছিল?

ঔপনিবেশিক আমলে চিনের মাধুরিয়া, বেজিং, সিন চিয়াং, সানজি, হেইলংজিয়াং, লিয়াওনিং, জিনিন, হেবেই, শানডং, ইউনান, কোয়াংসি, কোয়াং টুং প্রভৃতি স্থানে বিভিন্ন খনিজ সম্পদের বিপুল ভাণ্ডার ছিল।


চিনে কোন্ বছর আফিম আমদানি বন্ধ হয়?

১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে চিনে আফিম আমদানি বন্ধ হয়।


অসম চুক্তি কী?

উনিশ শতক ও বিশ শতকের শুরুতে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান প্রভৃতি বহিরাগত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি চিনকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিত করে যুদ্ধের পর চিনের ওপর বিভিন্ন শােষণমূলক সন্ধি বা চুক্তি চাপিয়ে দেয়। এই চুক্তিগুলি সাধারণভাবে 'অসম চুক্তি' বা বৈষম্যমূলক চুক্তি' নামে পরিচিত।


চিনের ওপর আরােপিত দুটি অসম চুক্তির উদাহরণ দাও।

চিনের ওপর আরােপিত দুটি অসম চুক্তি হল ব্রিটেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নানকিং-এর চুক্তি (১৮৪২ খ্রি.) এবং জাপানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শিমােনােসেকির সন্ধি (১৮৯৫ খ্রি.)।


প্রথম অহিফেন যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল?

প্রথম অহিফেন যুদ্ধ বা প্রথম ইঙ্গ-চিন যুদ্ধ ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ব্রিটেন ও চিনের মধ্যে হয়েছিল।


কাদের মধ্যে নানকিং-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

ব্রিটেন ও চিনের মধ্যে নানকিং-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।


নানকিং-এর সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

নানকিং-এর সন্ধির প্রধান দুটি শর্ত ছিল—[i] ক্যান্টন, সাংহাই, অ্যাময়, ফুচাও, নিংপাে—চিনের এই পাঁচটি বন্দর ইউরােপীয় বণিকদের বাণিজ্য ও বসবাসের জন্য খুলে দেওয়া হবে। [ii] উক্ত বন্দরগুলিতে ইউরােপীয়রা নিজ নিজ কনসাল নিয়ােগের অধিকার পাবে।


চিনের কোন বন্দরগুলি চুক্তি বন্দর নামে পরিচিত ছিল?

ক্যান্টন, সাংহাই, অ্যাময়, ফুচাও, নিংপােচিনের এই পাঁচটি বন্দর চুক্তি বন্দর নামে পরিচিত ছিল।


কে, কবে ও কাদের ওপর ওয়াংসিয়ার অসম চুক্তি আরােপ করে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে চিনের ওপর ওয়াংসিয়ার অসম চুক্তি আরােপ করে।


কে, কবে ও কাদের ওপর হােয়ামপােয়ার অসম চুক্তি আরােপ করে?

ফ্রান্স ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে চিনের ওপর হাোয়ামপােয়ার অসম চুক্তি আরােপ করে।


কবে, কারা, কাদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধ ঘােষণা করে?

১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেন চিনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধ ঘােষণা করে।


কোন যুদ্ধের পর কবে, কাদের মধ্যে টিয়েনসিনের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধের (১৮৫৬-৬০ খ্রি.) পর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে চিন এবং ইঙ্গ-ফরাসি শক্তির মধ্যে টিয়েনসিনের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।


টিয়েনসিনের সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

টিয়েনসিনের সন্ধির দ্বারা—[i] চিন সরকার ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়। [ii] বিদেশি বণিকদের জন্য চিনের আরও ১১টি বন্দর খুলে দেওয়া হয়৷ 


কোন্ যুদ্ধের পর শিমােনােসেকির সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

চিন-জাপান যুদ্ধের (১৮৯৪-৯৫ খ্রি.) পর শিমােনােসেকির সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


উন্মুক্ত দ্বার নীতি কী এবং কে এর প্রবক্তা?

১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব জন হে চিনে উন্মুক্ত দ্বার নীতি প্রয়ােগের কথা ঘােষণা করেন। চিনের উন্মুক্ত বাণিজ্য নীতি সবদেশের জন্য সমান হওয়াই এই নীতির মূল কথা।


শিমােনােসেকির সন্ধির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

শিমােনােসেকির সন্ধির দ্বারা- [I] চিন কোরিয়াকে স্বাধীনতা দান করে। [i] জাপানকে চিন ২৩০ মিলিয়ন টেল ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়।


চিনে বক্সার বিদ্রোহ কোন্ গুপ্ত সমিতির নেতৃত্বে শুরু হয়?

আই-হাে-চুয়ান নামক গুপ্ত সমিতির নেতৃত্বে চিনে বক্সার বিদ্রোহ শুরু হয়।


বক্সার প্রােটোকল কবে সম্পাদিত হয়?

১৯০১ খ্রিস্টাব্দে বক্সার প্রােটোকল’ সম্পাদিত হয়।


কাদের মধ্যে বক্সার প্রােটোকল স্বাক্ষরিত হয়?

চিনে বক্সার বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে ১১টি বিদেশি শক্তির মধ্যে বক্সার প্রােটোকল’ স্বাক্ষরিত হয়।


বক্সার প্রােটোকলের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।

বক্সার প্রােটোকলের দুটি উল্লেখযােগ্য শর্ত হল- [1] বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত ১২ জন রাজপুরুষের প্রাণদণ্ড এবং শতাধিক রাজপুরুষকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। [2] চিনের ওপর বিরাট অঙ্কের ক্ষতিপূরণের বােঝা চাপানাে হয়।


ক্যান্টন বাণিজ্য বলতে কী বােঝায়?

বিদেশি বণিকদের কাছে চিনের সব বন্দর উন্মুক্ত ছিল না। চিনা আদালত ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে এক নির্দেশনামার দ্বারা শুধু ক্যান্টন বন্দরকেই বিদেশি বাণিজ্যের জন্য খুলে দেয়। এভাবে ক্যান্টন বন্দরকে কেন্দ্র করে চিনে বিদেশিদের এক বন্দরকেন্দ্রিক যে বাণিজ্য প্রথার সূচনা হয় তা ক্যান্টন বাণিজ্য প্রথা' নামে পরিচিত।


চিনের রুদ্ধদ্বার নীতি কী ছিল?

ক্যান্টন বাণিজ্যে অংশগ্রহণকারী বিদেশি বণিকদের চিনা ফৌজদারি ও বাণিজ্যিক আইন মেনেচলতে হত এবং বাণিজ্যের মরশুম শেষেবন্দর ছেড়ে চলে যেতে হত। বণিকদের চিনা ভাষা ও আদবকায়দা শিক্ষা, বাণিজ্য কুঠিতে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রবেশ, দাসী নিয়ােগ প্রভৃতি নিষিদ্ধ ছিল। চিনে বিদেশি বণিকদের প্রতি এই কঠোর নীতি রুদ্ধদ্বার নীতি নামে পরিচিত।


বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্য দৌত কাজের জন্য ব্রিটেন চিনে কাকে কাকে পাঠায়?

বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে দৌত কাজের জন্য ব্রিটেন চিনে যাদের পাঠায়- [i] চার্লস ক্যাথকার্ট ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে চিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। [ii] জর্জ ম্যাকার্টনির নেতৃত্বে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে একটি মিশন চিনে যায়।


কে চিনে মুক্তদ্বার নীতি প্রয়ােগের কথা ঘােষণা করেন?

মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব জন হে চিনে মুক্তদ্বার নীতি প্রয়ােগের কথা ঘােষণা করেন।


কবে, কার নেতৃত্বে চিনে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় মিশন পৌঁছায়?

১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে জর্জ ম্যাকার্টনির নেতৃত্বে চিনে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় মিশন পৌঁছায়।


অ্যারাে কী?

চিনের অন্যতম একটি বাণিজ্যপােত হল অ্যারাে।


ওয়াংঘিরা চুক্তি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

'ওয়াংঘিরা চুক্তি' ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।


'বগ-এর চুক্তি’ কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

'বােগ-এর চুক্তি’ ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে, চিন ও ইংরেজদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।


কোহং কী?

চিনে বণিক সম্প্রদায়ের অন্যতম হং বণিকগােষ্ঠী একটি বাণিজ্যিক নিগম প্রতিষ্ঠা করেন (১৭২০ খ্রি.)। এই বাণিজ্যিক নিগম হল কো-হং।


চিনের যে পাঁচটি বন্দরে বিদেশিরা বাণিজ্যের অধিকার পায় সেগুলির নাম লেখাে।

চিনের যে পাঁচটি বন্দরে বিদেশিরা বাণিজ্যের অধিকার পায় সেগুলি হল—ক্যান্টন, অ্যাময়, নিংপাে, ফুচাও ও সাংহাই।