নারীশিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে | হান্টার কমিশনের সুপারিশের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করাে।

নারীশিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশ

কমিশন নারীশিক্ষার প্রসারের জন্য যে সুপারিশগুলি করেছিল, সেগুলি হল一


  • বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয়গুলিকে উপযুক্ত পরিমাণে অনুদান দিতে হবে। প্রয়ােজনে সরকার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নিয়মকানুন শিথিল করবে।


  • বারাে বছরের থেকে বেশি বয়সি কোনাে মেয়ে বিদ্যালয়ে ভরতি হলে তাকে পুরস্কৃত করতে হবে।


  • মেয়েদের জন্য পৃথক পাঠক্রম প্রণয়ন করতে হবে৷ ওই পাঠক্রমে মেয়েদের ব্যাবহারিক জীবনের উপযােগী বিষয়গুলিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


  • আবাসিক বালিকা বিদ্যালয় গড়ে তােলার জন্য সরকারি অর্থ মঞ্জুর করতে হবে।


  • বালিকা বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকের পরিবর্তে শিক্ষিকা নিয়ােগ করতে হবে।


  • শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য পৃথক নর্ম্যাল স্কুল স্থাপন করতে হবে।


  • বালিকা বিদ্যালয়গুলির পরিদর্শনের জন্য মহিলা পরিদর্শক নিয়ােগের ব্যবস্থা করতে হবে।


  • অনুন্নত সম্প্রদায়ের মেয়েরা যাতে শিক্ষার সুযােগ লাভ করতে পারে, তার জন্য সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়ােজনে অনুন্নত অঞ্চলে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।


  • নিরক্ষর মহিলাদের শিক্ষার জন্য মহিলা নৈশ বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।


হান্টার কমিশনের সুপারিশের সীমাবদ্ধতা


শিক্ষাক্ষেত্রে হান্টার কমিশনের উল্লেখযোগ্য অবদান সত্ত্বেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সেগুলি হল


(1) বাস্তবে প্রয়োগের অভাব: হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি নানা দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই এই সুপারিশগুলি বাস্তবে প্রয়ােগ করা হয়নি। তার কারণ সুপারিশগুলিকে কীভাবে কার্যকারী করা হবে, সে সম্পর্কে কমিশন বিশেষ কিছু বলেননি।


(2) সর্বজনীন অবৈতনিক ও বাধ্যতামুলক শিক্ষা বিষল্পে নীরবতা: কমিশনের সুপারিশে প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে অনেকগুলি গুরত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলেও, একে অবৈতনিক, সর্বজনীন এবং বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে বিশেষ কিছু বলা হয়নি।


(3) 'ফলাফলের ভিত্তিতে সাহায্যদান’ নীতি: প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে 'ফলাফলের ভিত্তিতে সাহায্যদান’ —এই নীতি গৃহীত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষাকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও প্রসার ব্যাহত হচ্ছিল।


(4) ব্যাবহারিক শিক্ষার ক্ষেত্রে জনসমর্থনের অভাব: মাধ্যমিক শিক্ষার তত্ত্বগত A কোর্স এবং ব্যাবহারিক B কোর্স প্রবর্তনের সুপারিশ সময়ােপযােগী হলেও, B কোর্স শিক্ষার্থীর মধ্যে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারে না।


(5) মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের অভাব: মাধ্যমিক শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কে কমিশন কোনাে সুপারিশ না করায় শিক্ষার্থীরা ইংরেজি মাধ্যমেই পড়াশােনা করতে বাধ্য হয়েছিল। মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযােগ থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছিল এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাবৃদ্ধিও ঘটেনি।


(6) শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ: মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা পরবর্তীকালে সাম্প্রদায়িকতাকেই উৎসাহিত করেছিল।


(7) শিক্ষক-শিক্ষণের যথাযথ প্রয়োগের অভাব: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য শিক্ষক-শিক্ষণের প্রয়ােজনীয়তার কথা বলা হলেও, তা সঠিকভাবে প্রয়ােগের অন্য কোনাে পরামর্শ দেওয়া হয়নি। ফলে বিদ্যালয়গুলিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব থেকেই যায়।


উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর প্রতিবেদন কী? উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখাে।


প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে।


মাধ্যমিক শিক্ষা প্রসঙ্গে হান্টার কমিশনের সুপারিশসমূহ লেখাে।


উচ্চশিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে এবং ওই সুপারিশগুলি মূল্যায়ন করাে।


হান্টার কমিশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য লেখাে। হান্টার কমিশনের সাধারণ সুপারিশগুলি লেখাে।


হান্টার কমিশনের কর্মধারা লেখাে। ওই কমিশনের প্রাথমিক শিক্ষা-সম্পর্কিত সুপারিশের মূল্যায়ন করাে।


সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষা ও ধর্মশিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে। হান্টার কমিশনের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কিত সুপারিশের মূল্যায়ন করাে।