প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখাে।

প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশসমূহ

1854-1882 পর্যন্ত এদেশে প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার অত্যন্ত ধীরগতিতে হওয়ায় হান্টার কমিশন প্রাথমিক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ সম্পর্কে কমিশন কতকগুলি মূল্যবান সুপারিশ উপস্থাপন করে। সুপারিশগুলি হল一


(1) শিক্ষানীতি বিষয়ক সুপারিশ


  • প্রাথমিক শিক্ষা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষান্তর হিসেবে বিবেচিত হবে। এটিকে কখনােই মাধ্যমিক শিক্ষাক্রমের প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে গণ্য করা চলবে না।


  • প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে দেশের জনগণের জন্য ন্যূনতম শিক্ষার ব্যবস্থা করা।


  • দেশের যেসব ক্ষেত্রে নিরক্ষর ব্যক্তিদের নিয়ােগ করার ব্যবস্থা চালু আছে, সেইসব ক্ষেত্রে অল্পশিক্ষিত ব্যক্তিদের নিয়ােগ করার নীতি প্রণয়ন করতে হবে। এতে প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণের কাজ অনেক সহজ হবে।


  • প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি ও প্রসারের প্রতি সরকারকে বিশেষবাবে নজর দিতে হবে৷


(2) প্রশাসন বিষয়ক সুপারিশ


  • প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব ও পরিচালনার ভার জেলা বাের্ড ও মিউনিসিপ্যাল বাের্ডগুলির ওপর ছেড়ে দিতে হবে।


  • এই ধরনের স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলি নিজ নিজ এলাকায় একটি করে শিক্ষাবাের্ড গঠন করে তার ওপর নতুন বিদ্যালয় স্থাপন করার এবং দেশীয় বিদ্যালয়গুলিকে সাহায্য করার দায়িত্ব দেবে।


  • সরকারের পরিচালনাধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির দায়িত্বও এই শিক্ষাবাের্ড গ্রহণ করবে।


(3) অর্থ বিষয়ক সুপারিশ


  • প্রত্যেক জেলাবাের্ড এবং মিউনিসিপ্যাল বাের্ডকে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য একটি পৃথক তহবিল গঠন করতে হবে।


  • স্থানীয় এবং প্রাদেশিক রাজস্ব থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটা বড়াে অংশ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ব্যয় করতে হবে।


  • শিক্ষাখাতে বরাদ্দ অর্থের ওপর প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রাধিকার ও অধিকতর দাবি থাকবে।


  • সরকারকেও শিক্ষাখাতের সামগ্রিক বরাদ্দের অর্থ থেকে 1/3 অংশ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য অনুদান হিসেবে মঞ্জুর করতে হবে।


  • বিদ্যালয় পরিদর্শন ও নৰ্যাল স্কুল পরিচালনার জন্য প্রয়ােজনীয় খরচ প্রাদেশিক সরকারকে বহন করতে হবে।


  • দরিদ্র ছাত্র ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে বেতন গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।


  • পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যালয়গুলিকে অনুদান দিতে হবে।


(4) পাঠক্রম বিষয়ক সুপারিশ


  • প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হবে আঞ্চলিক ভাষা বা মাতৃভাষা।


  • প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার পাঠক্রম সারা ভারতে এক ধরনের হবে না। বরং বিষয়বস্তু নির্বাচনের সময় স্থানীয় মানুষের প্রয়ােজনের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে হবে।


  • প্রাথমিক স্তরের পাঠক্রমে থাকবে দেশীয় গণিত, হিসাব শিক্ষা, জরিপ, ভৌতবিজ্ঞান, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, শিল্পকলা, কৃষিবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়সমূহ।


  • বিদ্যালয়গুলির জন্য পাঠ্যপুস্তক নির্বাচনের ব্যাপারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা পরিচালকবৃন্দকে স্বাধীনতাদান করতে হবে।


  • প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের দৈহিক, মানসিক ও চারিত্রিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, ব্যায়াম, স্কুল ড্রিল ইত্যাদি বিষয়গুলিকে পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


(5) শিক্ষক-শিক্ষণ বিষয়ক সুপারিশ


  • প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে শিক্ষক-শিক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।


  • শিক্ষক-শিক্ষণের জন্য সারা দেশে বহু সংখ্যক ন্ম্যাল স্কুল স্থাপন করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষণের বিষয়টি সঠিকভাবে রূপায়িত করতে প্রত্যেক মহকুমায় একটি করে নাল স্কুল স্থাপন করতে হবে এবং প্রাদেশিক সরকারগুলিকে এর দায়িত্ব এবং ব্যয়ভার গ্রহণ করতে হবে।


ইসলামিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মক্তবের ভূমিকা আলোচনা করাে।


ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসার ভূমিকা লেখাে।


1813 খ্রিস্টাব্দের চাটার অ্যাক্টের পটভূমি লেখাে। ওই অ্যাক্টের শিক্ষা বিষয়ক এবং মিশনারি- সংক্রান্ত ধারা দুটি লেখাে। ওই ধারা দুটি কতটা কার্যকরী হয়েছিল?


1813 খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টের বিষয়বস্তু আলােচনায় প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মতামত লেখাে। ওই চার্টার অ্যাক্টের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখাে।


উড-এর ডেসপ্যাচের পটভূমি আলােচনা করাে।


উড-এর ডেসপ্যাচের বৈশিষ্ট্য ও সুপারিশগুলি লেখাে।


উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর প্রতিবেদন কী? উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখাে।