উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর প্রতিবেদন কী? উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখাে।

উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর প্রতিবেদন


ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে পার্লামেন্টারি কমিটি যে তদন্ত করেন, তারই ভিত্তিতে 1854 খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন 'বাের্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি চালর্স উড-এর নির্দেশে একটি মূল্যবান শিক্ষা-সংক্রান্ত দলিল রচিত হয়। ভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে একেই ‘উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর প্রতিবেদন আখ্যা দেওয়া হয়।


উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

1813 খ্রিস্টাব্দের উড-এর ডেসপ্যাচ বা উড-এর দলিলে ভারতীয়দের শিক্ষার বিষয়ে যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল, তাতে বহু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও সেই সময়কার শিক্ষাব্যবস্থায় উড-এর ডেসপ্যাচ যে এক দিগন্ত খুলে দিয়েছিল, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনাে অবকাশ নেই। উড-এর ডেসপ্যাচের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে শিক্ষাব্যবস্থায় বহু পরিবর্তন সাধিত হয়। উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল一


(1) সর্বস্তরের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টি: উডএর ডেসপ্যাচ ভারতবর্ষের সর্বস্তরের শিক্ষাব্যবস্থাকে স্পর্শ করেছিল। উড-এর দলিলে সর্বনিন্ম স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের শিক্ষার বিষয়ে দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছিল। সেই সময়কার শিক্ষার বিতর্কমূলক দিকের সমাধান এই দলিলটির মধ্যেই নিহিত ছিল।


(2) চুঁইয়ে পড়া নীতির পরিবর্তন: উড-এর ডেসপ্যাচে শিক্ষায় চুঁইয়ে পড়া নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার প্রসার ঘটানাের সুপারিশ করা হয়। ফলে এটি পরােক্ষভাবে জনশিক্ষা বিস্তারের পথকেই প্রশস্ত করে।


(3) মাতৃভাষার স্বীকৃতি ও জনগণের ক্ষোভ প্রশমন: উডএর ডেসপ্যাচে ইংরেজির পাশাপাশি মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণকেও কিছু পরিমাণে হলেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে একদিকে শিক্ষাতত্ত্বের নীতির প্রয়ােগ ঘটার সুযােগ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়।


(4) উচ্চশিক্ষার বিস্তার: উড-এর ডেসপ্যাচে ভারতের প্রেসিডেন্সি শহরগুলিতে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। ফলে ভারতীয়দের উচ্চশিক্ষার পথ প্রশস্ত হয়।


(5) নিম্নস্তরের শিক্ষাগ্ন আর্থিক সাহায্যদান: উড-এর ডেসপ্যাচের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাতে আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে। ফলে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা কিছুটা হলেও পূরণ হয়।


(6) অন্যান্য সুপারিশ: উড-এর ডেসপ্যাচে স্ত্রীশিক্ষা, ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা, বৃত্তিমুখী শিক্ষা, মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে সুপারিশ করে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষার চাহিদাগুলিকে বাস্তবায়িত করার পক্ষে মত দেয়।


মধ্যযুগে হিন্দুশিক্ষা কেমন ছিল-সে সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে।


ইসলামিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মক্তবের ভূমিকা আলোচনা করাে।


ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসার ভূমিকা লেখাে।


1813 খ্রিস্টাব্দের চাটার অ্যাক্টের পটভূমি লেখাে। ওই অ্যাক্টের শিক্ষা বিষয়ক এবং মিশনারি- সংক্রান্ত ধারা দুটি লেখাে। ওই ধারা দুটি কতটা কার্যকরী হয়েছিল?


1813 খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টের বিষয়বস্তু আলােচনায় প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মতামত লেখাে। ওই চার্টার অ্যাক্টের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখাে।


উড-এর ডেসপ্যাচের পটভূমি আলােচনা করাে।


উড-এর ডেসপ্যাচের বৈশিষ্ট্য ও সুপারিশগুলি লেখাে।