ভারতে লৌহ-ইস্পাত শিল্পের সমস্যাগুলি আলােচনা করাে | দুর্গাপুরকে 'ভারতের রুর’ বলা হয় কেন?

ভারতে লৌহ ইস্পাত শিল্পের সমস্যাসমূহ

উন্নতমানের আকরিক লােহার অভাব : এখানকার ইস্পাতশিল্পে ব্যবহৃত আকরিক লােহা উন্নত মানের নয়। এর থেকে প্রচুর পরিমাণে অপদ্রব্য বের হয়। ফলে খাঁটি লােহা কম পাওয়া যায়।


কোক কয়লার অভাব : ভারতের ইস্পাত শিল্পে বিটুমিনাস কয়লা অপেক্ষা লিগনাইট জাতীয় কয়লা বেশি ব্যবহার করতে হয়। এসব কয়লায় ছাইয়ের পরিমাণ (21 শতাংশ) বেশি হয় এবং তাপশক্তির পরিমাণ কম হয়।


কয়লা ও আকরিক লোহার অসম বণ্টন : কয়লা ও আকরিক লােহা ভারতের সর্বত্র সমানভাবে পাওয়া যায় না। যেমন—উত্তর ভারতে শিল্পের উপযােগী এই দুটি কাঁচামালের কোনােটাই পাওয়া যায় না। ফলে উত্তর ভারতে এই শিল্প গড়ে তােলায় প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়।


পুরোনো যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি : ভারতের অধিকাংশ ইস্পাত কারখানাগুলিতে এখনও পুরােনাে ও অনুন্নত যন্ত্রপাতির সাহায্যে পুরােনাে পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয়। এর ফলে আশানুরূপ উৎপাদন হয় না এবং উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে যাওয়ায় ইস্পাতের মূল্যও বৃদ্ধি পায়।


কাঁচামালের বর্ধিত মূল্য এবং অত্যধিক পরিবহণ ব্যয় : বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকরিক লােহা, কয়লা, বিদ্যুৎশক্তির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে। এ ছাড়া, অনেক দূর থেকে কাঁচামাল আনতে পরিবহণ খরচও বেশি হয়। ফলে ইস্পাতের দাম লাগামছাড়া হয়ে যায়।


বিদ্যুৎশক্তির অভাব : ইস্পাত কারখানাগুলিতে বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক মতাে হয় না। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ ঘাটতি হয়। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়।


উৎপাদন ক্ষমতার আংশিক ব্যবহার : ইস্পাত কারখানাগুলি অনেকক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন করে না এবং এর জন্য চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন হয় না।


শিল্পের রুগ্নতা : শ্রমিক অসন্তোষ, কম উৎপাদন, ব্যয়বহুল উৎপাদন ইত্যদি কারণে বহু কারখানা দিনের পর দিন লােকসানে চলতে চলতে রুগ্ন হয়ে পড়েছে।


ত্রুটিপূর্ণ সরকারি নীতি : সরকারের অধীনস্থ ইস্পাত কেন্দ্রগুলির ত্রুটিপূর্ণ পরিচালনা, নীতি নির্ধারণে বিলম্ব প্রভৃতি কারণে উৎপাদন অলাভজনক ও ব্যয়বহুল হয়।


দুর্গাপুরকে 'ভারতের রুর' বলার কারণ


জার্মানির বিখ্যাত রাইন নদীর ডান তীরের ক্ষুদ্র উপনদীর নাম বুর। বুর উপত্যকায় উন্নতমানের কয়লা পাওয়া যায়। এই কয়লাখনিকে কেন্দ্র করে রুর উপত্যকায় বড়ো বড়াে লৌহ-ইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন প্রভৃতি কারখানা গড়ে উঠেছে। সমগ্র অঞ্চলটি রুর শিল্পাঞ্চল নামে খ্যাত। দামােদর উপত্যকার রানিগঞ্জ, অন্ডাল, দিশেরগড় প্রভৃতি কয়লা খনিকে কেন্দ্র করে নিকটবর্তী দুর্গাপুরেও লৌহ-ইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার প্রভৃতি কারখানা নির্মিত হয়েছে। এজন্য দুর্গাপুরকে 'ভারতের রুর’ বলা হয়।


আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পেট্রো-রসায়ন শিল্পের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এ দেশে পেট্রো-রসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণগুলি লেখাে।


উদীয়মান বা সূর্যোদয় শিল্প বলতে কী বােঝায়? অথবা, শিল্পদানব কাকে বলে? পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির অনুকূল ভৌগােলিক কারণগুলি আলােচনা করাে।


পেট্রো-রাসায়নিক শিল্পের গুরুত্ব আলােচনা করাে। পেট্রো-রাসায়নিক শিল্পকেন্দ্রগুলি বন্দর বা তেলশােধনাগারের কাছে গড়ে ওঠার কারণ কী?


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)