বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'হুতােম প্যাঁচার নক্সা'র অবদান | বাংলা গদ্যসাহিত্যে প্যারীচাঁদ মিত্রের অবদান | বাংলা প্রবন্ধ-সাহিত্যের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'হুতােম প্যাঁচার নক্সা'র অবদান সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

কালীপ্রসন্ন সিংহের হুতােম প্যাচার নক্সা’র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে ; প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড একত্রে প্রকাশিত হয় ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে। এটি বাংলা চলিত গদ্যে লেখা প্রথম গ্রন্থ। এর মধ্যে তৎকালীন কলকাতার সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা অবিকল ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি লােকমুখে উচ্চারিত ধ্বনিরূপ যথাযথ রাখার জন্য তিনি বানানকেও উচ্চারণের অনুরূপ করার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া, এই গ্রন্থের উল্লেখযােগ্য অবদানগুলি হল-


  • কলকাতা ও কাছাকাছি মফস্সল অঞ্চলের মানুষের প্রতিদিনকার জীবনচিত্রের প্রকাশ ঘটানাে।


  • তৎকালীন সমাজের নানা ধরনের ভণ্ডামির মুখােশ উন্মােচন করে দেওয়া।


  • এই গ্রন্থে সমাজের সকল স্তরের মানুষের ছবি ফুটে উঠেছে। চড়ক পার্বণের রঙ্গ থেকে শুরু করে গাজন, মাহেশের রথ, দুর্গাপুজো প্রভৃতির বর্ণনা যেমন পাওয়া যায়, তেমনই পাওয়া যায় জমিদার, ভিখারি, কেরানি, দোকানি, হাটুরে, পুরুত ঠাকুর প্রভৃতি বিভিন্ন পেশার মানুষের বর্ণনা।


  • ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে শুভবােধ জাগানাে ছিল আলােচ্য গ্রন্থটির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।


  • গ্রন্থটিতে যেমন প্রবাদ-প্রবচনের যথাযথ প্রয়ােগ লক্ষ করা যায়, তেমনই দেখা যায় লেখকের সাংবাদিক সুলভ দৃষ্টিভঙ্গি এবং তদ্ভব বা আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহারে অনায়াস দক্ষতা।


সব মিলিয়ে বলা যায়, সেই সময়কার কলকাতার সমাজ এবং বাংলা ভাষার চালচিত্র এ গ্রন্থে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।


বাংলা গদ্যসাহিত্যে প্যারীচাঁদ মিত্রের অবদান সম্পর্কে লেখাে

বাংলা গদ্যের বিকাশপর্বের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের নাম হল প্যারীচাঁদ মিত্র। তিনি অমর হয়ে আছেন তার আলালের ঘরের দুলাল গ্রন্থটির জন্য। বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে প্যারীচাঁদের গদ্যরচনাকে মােট পাঁচ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন-


প্রবন্ধ রচনা: 'কৃষিপাঠ’ (১৮৬১), যৎ কিঞিৎ’ (১৮৬৫)।


জীবনীমূলক: 'ডেভিড হেয়ারের জীবনচরিত' (১৮৭৮)।


সমাজ-সংস্কারমূলক রচনা: 'এতদ্দেশীয় স্ত্রীলােকেদের পূর্বাবস্থা’ (১৮৭৯)।


ব্যঙ্গাত্মক নকশাজাতীয় রচনা: 'আলালের ঘরের দুলাল' (১৮৫৮), 'মদ খাওয়া বড় দায়, জাত থাকার কি উপায়' (১৮৫৯)।


কথােপকথনমূলক নীতি-আখ্যান: 'রামারঞ্জিকা' (১৮৬০), 'অভেদী' (১৮৭১), 'আধ্যাত্মিকা' (১৮৮০), 'বামাতােষিণী’ (১৮৮১)। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বেশ কয়েকটি পুস্তক রচনা করলেও প্যারীচাদের মূল পরিচিতি কিন্তু আলালের ঘরের দুলাল গ্রন্থটির জন্য। গ্রন্থটিতে উনিশ শতকের এক ধনী পরিবারের আদুরে সন্তানের অনাচার, লাম্পট্য, দুর্নীতি, মদ্যপানের প্রতি প্রবল আসক্তি ইত্যাদি অত্যন্ত বিশ্বাসযােগ্যতার সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলের মানুষের জীবনচিত্র, এমনকি তাদের মুখের ভাষা পর্যন্ত এই গ্রন্থে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। মৌখিক ভাষা, সাধুভাষা আর সমকালীন যুগের কলকাতার উপভাষার যথাযথ সমন্বয় ঘটিয়েছেন লেখক। আলালী ভাষার গঠনরীতি সংস্কৃতের অনুসারী বলে এর ক্রিয়াপদে সর্বদা সাধুরীতিই গ্রহণ করা হয়েছে। এক কথায়, সমকালের সমাজ ও বাংলা ভাষাকে বােঝার জন্য আলালের ঘরের দুলাল আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক একটি গ্রন্থ।



বাংলা প্রবন্ধ-সাহিত্যের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে

সৃজনশীল রচনার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ অজস্র প্রবন্ধ রচনা করেছেন, যেগুলিকে নীচের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়-


ভাষা ও সাহিত্য-বিষয়ক প্রবন্ধ: 'প্রাচীন সাহিত্য', 'সাহিত্য', 'আধুনিক সাহিত্য', 'লােকসাহিত্য', 'সাহিত্যের পথে', 'সাহিত্যের স্বরূপ', 'বাংলা ভাষা পরিচয়', 'বাংলা শব্দতত্ত্ব’, ‘ছন্দ’ প্রভৃতি গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক ভাবনার পরিচয় ছড়িয়ে আছে।


রাজনীতি, সমাজ, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও শিক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধ: স্বদেশ, রাজনীতি, সমাজ, বিজ্ঞান, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য সংকলিত হয়েছে 'আত্মশক্তি', 'ভারতবর্ষ', 'রাজাপ্রজা', 'স্বদেশ', 'কালান্তর', 'সভ্যতার সংকট' প্রভৃতি পুস্তক-পুস্তিকায়। তাঁর শিক্ষা-সংক্রান্ত প্রবন্ধগুলি সংকলিত হয়েছে শিক্ষা নামক গ্রন্থে।


ধর্ম, দর্শন ও অধ্যাত্ম-বিষয়ক প্রবন্ধ: 'ধর্ম' ও 'শান্তিনিকেতন' প্রবন্ধগ্রন্থ দুটিতে দার্শনিক রবীন্দ্রনাথের পরিচয় পাওয়া যায়। মানুষের ধর্ম প্রবন্ধে মানবতা সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব দর্শন ও অভিমতের সন্ধান পাওয়া যায়।


ব্যক্তিগত রচনা: তাঁর ব্যক্তিগত রচনাগুলি নানারকমের, যেমন-ভ্ৰমণকাহিনি, স্মৃতিকথা, ডায়েরি, রম্যরচনা, ব্যক্তিগত প্রবন্ধ (Personal essay), চিঠিপত্র ইত্যাদি। 'য়ুরােপ প্রবাসীর পত্র’, ‘য়ুরােপ যাত্রীর ডায়ারি', 'জাপান যাত্রী', 'যাত্রী', 'জীবনস্মৃতি', 'ছেলেবেলা', 'রাশিয়ার চিঠি', 'পথের সঞ্চয়', 'ছিন্নপত্র', 'পঞ্চভূত', 'বিচিত্র প্রবন্ধ' প্রভৃতি গ্রন্থে এই জাতীয় রচনার পরিচয় পাওয়া যায়। 'জীবনস্মৃতি' ও 'ছেলেবেলা' গ্রন্থদুটিতে ঠাকুরবাড়ি ও শিশু রবীন্দ্রনাথের নানা পরিচয় বিবৃত হলেও তা আসলে রবীন্দ্রনাথের কবি হয়ে ওঠার ইতিবৃত্ত।


প্রমথ চৌধুরীর দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম লেখাে এবং তাঁর গদ্যরচনার বৈশিষ্ট্য বিচার করাে

প্রমথ চৌধুরীর দুটি গদ্যগ্রন্থ: প্রমথ চৌধুরীর দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম হল 'তেল-নুন-লকড়ী' (১৯০৬ খ্রি.) এবং 'বীরবলের হালখাতা' (১৯১৭ খ্রি.)। 'নানা কথা' (১৯১৯), 'নানা চর্চা' (১৯৩১) প্রভৃতি গদ্যগ্রন্থও তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।


প্রমথ চৌধুরীর গদ্যরচনার বৈশিষ্ট্য: প্রমথ চৌধুরীর গদ্যরচনার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল-


  • বুদ্ধিদীপ্ত ব্যঙ্গ ও অলংকারের চাকচিক্য, মার্জিত শহুরে ভব্যতা ও বাচনভঙ্গির তির্যকতা তাঁর রচনাকে বিশিষ্ট করেছে।


  • বিষয়গত দিক থেকে ভাষা, সাহিত্য, সমাজ, রাজনীতি প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে অবাধ পদচারণা করেছেন এই বুদ্ধিদীপ্ত লেখক।


  • আধুনিক, প্রগতিশীল, যুক্তিবাদী ও কুসংস্কারমুক্ত এই সাহিত্যিক সর্বপ্রকার দাসত্ব থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে চেষ্টা করেছেন।


  • চলিতভাষায় সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে তিনি প্রথম জোর সওয়াল করেন।


  • ভাবালুতা বর্জন করে রচনার মধ্যে ঋজুতা ও দৃঢ়তা আনা প্রমথ চৌধুরীর গদ্যরচনার এক অন্যতম বিশিষ্ট লক্ষণ।


  • তার গদ্যরচনায় একদিকে যেমন রয়েছে মজলিশি বৈঠকের আবহ, অন্যদিকে তেমন রয়েছে নাগরিক বৈদগ্ধ্য। এই অনায়াসসাধ্য বাংলা গদ্যের নির্মাণেই সমগ্র বাংলা গদ্যসাহিত্যের ইতিহাসে প্রমথ চৌধুরী বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন এবং চিরকাল থাকবেন।


সৈয়দ আলাওলের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।

কোন্ রাজসভার কোন্ কবি পদ্মাবতী রচনা করেন? এই কাব্যের বৈশিষ্ট্য কী?

অষ্টাদশ শতাব্দীর যুগবৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।

রামপ্রসাদ সেনের কবিপ্রতিভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


বাউল ধর্ম ও বাউলগানের স্বরূপ সম্পর্কে যা জান লেখাে।

লালন ফকিরের রচিত বাউলগান বিষয়ে যা জান লেখাে।

বাংলাদেশে প্রচারিত নাথ সাহিত্য সম্পর্কে যা জান লেখাে।

বাংলা সাহিত্যে পূর্ববঙ্গ গীতিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।


সংক্ষেপে উনিশ শতকের বাংলায় নবজাগরণের পরিচয় দাও।

উনিশ শতকের নবজাগরণ বাঙালির সমাজজীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল সংক্ষেপে তা আলােচনা করাে।

উনিশ শতকের নবজাগরণ বাংলা সাহিত্যে কী প্রভাব ফেলেছিল সংক্ষেপে তা আলােচনা করাে।

'দিগদর্শন' থেকে 'সমাচার চন্দ্রিকা' পর্যন্ত বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাস সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


সম্বাদ প্রভাকর থেকে 'বঙ্গদর্শন' পর্যন্ত বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিহাস সংক্ষেপে লেখাে।

সম্বাদ প্রভাকর সাময়িকপত্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও গুরুত্ব লেখাে।

'বঙ্গদর্শন' পত্রিকার সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও গুরুত্ব লেখাে।

বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে তত্ত্ববােধিনী পত্রিকার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে 'বিবিধার্থ সংগ্রহ' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা সংবাদ ও সাময়িকপত্রের ইতিহাসে পরিচয় পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'সবুজপত্র' পত্রিকার গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যে 'কল্লোল' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।


সমালােচনা সাহিত্যধারার 'শনিবারের চিঠি' পত্রিকাটির গুরুত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে 'ভারতী' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'সাধনা' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'প্রবাসী' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।


বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা সম্পর্কে আলােচনা করাে।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের লেখকগােষ্ঠীর মধ্যে প্রধান‌দুজনের নাম উল্লেখ করে বাংলা গদ্যের ক্রমবিকাশে এঁদের কৃতিত্বের পরিচয় দাও।

বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে আলােচনা করাে।

বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।