শিক্ষামনােবিজ্ঞান কী ধরনের বিজ্ঞান? শিক্ষা মনােবিজ্ঞানের গুরুত্ব বা তাৎপর্য আলােচনা করাে।

শিক্ষামনােবিজ্ঞানের প্রকৃতি

শিক্ষামনােবিজ্ঞানকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান হিসেবে গণ্য করা যায় না। শিক্ষামনােবিজ্ঞান হল মন-সম্পর্কিত বিজ্ঞান। এর সপক্ষে কয়েকটি যুক্তি আছে। প্রথমত, শিক্ষামনােবিজ্ঞান জড় পদার্থ নিয়ে কাজ করে না। মন, অনুভূতি, আবেগ নিয়ে এর কাজ। কিন্তু প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের ব্যক্তিমনের সঙ্গে কোনাে সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয়ত, শিক্ষামনােবিজ্ঞানের নিজস্ব পদ্ধতি হল শ্রেণিকক্ষ পর্যবেক্ষণ। এই পঞ্ধতিই শিক্ষামনােবিজ্ঞানকে অন্যান্য প্রাকৃতিক বিজ্ঞান থেকে স্বতন্ত্র করে রেখেছে।


শিক্ষামনােবিজ্ঞানের গুরুত্ব


শিক্ষাদানের প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষামনােবিজ্ঞানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শিক্ষার্থীর প্রকৃতি নির্ধারণ, শিখন প্রক্রিয়া, বুদ্ধির পরিমাণ, মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিক্ষা নির্দেশনা প্রভৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। নীচে এই গুরুত্বগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করা হল一


(১) সম্ভাবনার বিকাশে সহায়তা: শিক্ষামনােবিজ্ঞানের কাজ হল শিশু যেসব সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে সেসবের প্রকৃতি অনুধাবন করা এবং তার বিকাশে সাহায্য করা।


(২) শিখন প্রক্রিয়ার আলােচনা: শিশু কীভাবে শেখে, শিখনের নিয়মাবলি কী, শিখনের ওপর প্রভাব সৃষ্টিকারী উপাদানগুলির সঙ্গে শিখনের সম্পর্ক কী ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষামনােবিজ্ঞানে আলােচনা করা হয়, যা শিক্ষকের শিক্ষাদানের কাজকে সহজ ও কার্যকরী করে তােলে।


(৩) বুদ্ধির পরিমাপন: শিখনের সঙ্গে বুদ্ধির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শিখনে উৎকর্ষ, সহজাত ক্ষমতা বা বুদ্ধির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। শিশুকে শিক্ষা দিতে গেলে তাই তার বুদ্ধির পরিচয় নিতে হবে। বুদ্ধি কী, কীভাবে তার বিকাশ ঘটে, কীভাবে তার পরিমাপ করা যায় ইত্যাদি আলােচনা শিক্ষামনােবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত।


(৪) স্মৃতি, প্রেষনা ও মনােযোগ: স্মৃতি কাকে বলে, স্মৃতির উপাদান, কীভাবে স্মৃতিকে কার্যকরী করে তােলা যায়, কীভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেষনা আনা যায়, মনােযােগ কাকে বলে, মনােযােগের নির্ধারকগুলি কী, কীভাবে শিক্ষার্থীদের মনােযােগ আকর্ষণ করা যায় প্রভৃতি বিষয় শিক্ষামনােবিজ্ঞানে আলােচিত হয়ে থাকে।


(৫) পরীক্ষাগ্রহণ ও মূল্যায়ন: শিক্ষাদান করেই শিক্ষকের কাজ শেষ হয় না, সেই শিক্ষা শিশু ঠিকমতাে গ্রহণ করতে পারল কি না তার মূল্যায়ন করাও প্রয়ােজন। শিক্ষার উদ্দেশ্য কতখানি সফল হয়েছে মূল্যায়নের সাহায্যে তা জানা যায়। এর সঙ্গে জানা যায় পাঠক্রমের যথার্থতা এবং শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা।


(৬) সুপরিচালনা: আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। ভবিষ্যতে সে যাতে উপযুক্ত জীবিকা গ্রহণ করতে পারে, যথাযথভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেজন্য তাকে সঠিক পথে পরিচালনা করা প্রয়ােজন৷ শিশুকে সুপরিচালনার ক্ষেত্রেও শিক্ষামনােবিজ্ঞানের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


(৭) চরিত্রগঠন: আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। ভবিষ্যতে যাতে সে সুষম ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে যথাযথভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে পারে, আদর্শ মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিত হতে পারে, বাতি গুণাবলির অধিকারী হতে পারে সে-দায়িত্ব গ্রহণে শিক্ষাকে এগিয়ে আসতে হবে।


(৮) শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ: শিক্ষার্থীর বিভিন্ন দিকে বৃদ্ধি ও বিকাশের স্তর, শিখনের ওপর তার প্রভাব এবং কীভাবে বৃদ্ধি ও বিকাশে সহযােগিতা করা যায় -এসবই শিক্ষামনােবিজ্ঞানে আলােচিত হয়। এই বিষয়গুলি শিক্ষামনােবিজ্ঞানে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছে।


(৯) শিক্ষা-নির্দেশনা ও মানসিক স্বাস্থ্য: শিক্ষার্থীর শিক্ষা পরিকল্পনা, শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যার প্রতিবিধান ও প্রতিকারের জন্য শিক্ষা-নির্দেশনা বিষয়টিকে শিক্ষামনােবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে মানসিক স্বাস্থ্য কী, শিক্ষার ওপর তার কী প্রভাব, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য কীভাবে রক্ষা করা যায়, তার আলােচনা শিক্ষামনােবিজ্ঞানে স্থান পেয়েছে।


অনিয়ন্ত্রিত, নিয়ন্ত্রিত এবং প্রথাবিহির্ভূত শিক্ষা- ব্যবস্থার তুলনামূলক আলােচনা করাে।


psychology কথাটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ লেখাে এবং মনােবিজ্ঞানের সংজ্ঞার বিবর্তন আলােচনা করাে।


শিক্ষার সঙ্গে মনােবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলােচনা করাে।

অথবা, মনােবিজ্ঞান কীভাবে শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করাে


শিক্ষা ও মনােবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করাে। শিক্ষামনােবিজ্ঞানকে কি একটি স্বতন্ত্র বিষয় বলা যায়? এই প্রসঙ্গে শিক্ষামনােবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে।


শিক্ষা মনােবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং শিক্ষা মনােবিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলি সংক্ষেপে লেখাে।


শিক্ষামনােবিজ্ঞানের সংজ্ঞা ও লক্ষ্য আলােচনা করাে।


শিক্ষামনােবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও পরিধি আলােচনা করাে।