কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রম কী? এর ত্রূটিগুলি আলােচনা করো।

কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রম

এই ধরনের পাঠক্রম মূলত শিক্ষাথীর সক্রিয়তা বা কাজের অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। কাজের মাধ্যমে শিক্ষা হল এর মূল বৈশিষ্ট্য।নানা ধরনের কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার সময়ে উদ্ভূত নানান সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর সম্ভাবনাগুলি বিকশিত হবে—এই হল কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমের মূল কথা। কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রমের যেমন কয়েকটি ভালাে দিক আছে, তেমনি কিছু ত্রুটি রয়েছে।


কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমের ত্রূটি


(১) শিক্ষার প্রতি আকর্ষণের অভাব : কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমে শিক্ষার্থীরা কাজের মাধ্যমে শিখতে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে কাজে নিযুক্ত করে ফেলে শিক্ষার তাত্ত্বিক জ্ঞানের দিকে তাদের আর ঝোঁক থাকে না। ফলে জ্ঞানের বিকাশের উদ্দেশ্য সফল হয় না।


(২) অতীত-অভিজ্ঞতাকে অবজ্ঞা : এই ধরনের পাঠক্রমে শিক্ষাকে কেবলমাত্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করা হয়। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কোনােরকম গুরুত্ব দেওয়া হয় না।


(৩) শিক্ষালয়ের অভাব : এই ধরনের পাঠক্রম রূপায়ণের জন্য প্রয়ােজনীয় বিশেষ শিক্ষালয় এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের যথেষ্ট অভাব দেখা দেয়। ফলে এই পাঠক্রম অনুসারে পড়ানাে সব শিক্ষালয়ে সম্ভব হয় না।


(৪) বৈচিত্রপূর্ণ বিষয়ের অভাব : এই ধরনের পাঠক্রমে অনেকগুলি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। কারণ একটি শিক্ষালয় যে-কোনাে একটি কর্মকেন্দ্রিক পাঠক্রম গ্রহণ করে, তার জন্য পরিকাঠামাে ঠিক করে, ফলে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করে না।


(৫) সময়ের অপ্রতুলতা : এই ধরনের পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষাদান করতে গেলে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়। নিম্নস্তরের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময় পাওয়া গেলেও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সময়ের অভাবের জন্য এই পাঠক্রমের দ্বারা শিক্ষাদান করা সম্ভব নয়।


(৬) আর্থিক অসচ্ছলতা : এই ধরনের পাঠক্রমের মাধ্যমে পাঠদান করতে গেলে অনেকক্ষেত্রে পৃথক কর্মশালার প্রয়ােজন হয়। কর্মশালার জন্য প্রয়ােজন হয় প্রচুর অর্থের।


(৭) বিমূর্ত চিন্তানের অভাব : মূর্ত চিন্তনের সঙ্গে বিমূর্ত চিন্তনের অনুশীলন শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই পাঠক্রমে বিমূর্ত চিন্তনের অনুশীলনের সুযােগ কম থাকায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই ধরনের পাঠক্রম যুক্তিযুক্ত নয়।


ওপরের আলােচনার ভিত্তিতে বলা যায়, কর্মকেন্দ্রিক বা সক্রিয়তাভিত্তিক পাঠক্রমকে ফলপ্রসূ করতে হলে এর জুটিগুলিকে দূর করতে হবে। পাঠক্রম প্রণয়নকারীদের এই দুটিগুলির প্রতি বিশেষ নজর রাখা প্রয়ােজন।


শিক্ষার লক্ষ্য ব্যক্তিগত বিকাশ— এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করাে।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বিকাশের লক্ষ্যটি আলােচনা করাে।


বংশধারা এবং পরিবেশ কাকে বলে? শিক্ষার্থী হল বংশধারা এবং পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার গুণফল—উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।


শিক্ষায় আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।


পাঠক্রমের সংজ্ঞা দাও। পাঠক্রম গঠনের উপাদানগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


পাঠক্রম কী? পাঠক্রম নির্ধারণে শিশুর কোন্ কোন্ চাহিদা ও ক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত?


পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্যাবলি সংক্ষেপে লেখাে।


গতানুগতিক পাঠক্রম কী? এর ত্রুটিগুলি আলােচনা করাে।