শিক্ষায় আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।

আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকের প্রধান ভূমিকা শিক্ষাদান হলেও একাধিক ভূমিকা পালনের কথা বলা হয়| নীচে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকের বিভিন্ন ভূমিকা উল্লেখ করা হল一


শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের ভূমিকা

শিক্ষা প্রক্রিয়াকে বিশ্লেষণ করে আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকাকে প্রধানত তিনটি দিক থেকে বিচার করা হয় শিখন সহায়কের ভূমিকা সংযােগরক্ষাকারীর ভূমিকা এবং মাধ্যমের ভূমিকা।


[1] শিখন সহায়কের ভূমিকা : শিক্ষক পাঠ্যবিষয়কে সহজ, স্পষ্ট এবং সুষ্ঠুভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরবেন। বিষয়বস্তুকে মনস্তত্ত্ব এবং যুক্তিসম্মতভাবে সংগঠিত করে শিক্ষার্থীদের শিখনকে সহজ করে তোলেন। যে সমস্ত শিক্ষার্থীদের বিষয়গত দুর্বলতা আছে, যারা পরীক্ষায় আশানুরূপ সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়নি, তাদের নির্দিষ্ট করে সংশােধনমূলক শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।


[2] সংযােগরক্ষাকারীর ভূমিকা : সহজ ও সরল ভাষা ব্যবহার করে আধুনিক শিক্ষোপকরণের সাহায্যে শিক্ষক পাঠ্য- বিষয়টি শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করে সংযােগ রক্ষাকারীর ভূমিকা পালন করেন। সংযােগরক্ষাকারীর ভূমিকা সার্থকভাবে পালন করার জন্য শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের চাট, মডেল, প্রােজেক্টর, ভিডিও, টেপরেকর্ডার ইত্যাদি প্রয়ােজনমতাে ব্যবহার করেন।


[3] মাধ্যমের ভূমিকা : বিদ্যালয় এবং কমিউনিটি উভয়ের বিকাশের জন্য শিক্ষক বিদ্যালয় ও কমিউনিটির মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তােলার মাধ্যম হিসেবে সক্রিয় হন।


[4] সাম্প্রতিকতম জ্ঞান সম্পর্কে সচেতনতা : বর্তমান দ্রুত পরিবর্তনশীল সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং জ্ঞানের জগতের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিক্ষক নিজেকে সমৃদ্ধ করবেন।


[5] প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ ভূমিকা : শিক্ষা আয়ত্তকরণে প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের যে বিশেষ বাধা, তাদের জ্ঞানমূলক প্রাক্ষোভিক এবং ভাষাগত আচরণের যে সীমাবদ্ধতা সে সম্পর্কে শিক্ষক সচেতন হবেন এবং প্রয়ােজন মতাে ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন।


[6] শিক্ষাপ্রযূক্তি এবং শিক্ষক : শিক্ষাপ্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে নিজের ভূমিকাকে আরও বিজ্ঞানসম্মত এবং উৎকর্ষ স্তরে নিয়ে যেতে শিক্ষক প্রয়াসী হবেন।


[7] শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি : শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনে উৎসাহ দেবেন, কৌতূহলী এবং অনুসন্ধিৎসাপ্রবণ করে তুলবেন।


[8] প্রশাসনিক এবং সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ : আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষককে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব যেমন, ছাত্ৰভরতি, সময়তালিকা প্রস্তুত, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির রেকর্ড রাখা, সর্বাত্মক বিবরণীপত্র প্রস্তুত, আলােচনা চক্র এবং অন্যান্য সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি সংগঠন ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে হয়।


[9] পরামর্শ দান : আধুনিক শিক্ষকের অন্যতম দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দান। বৌদ্ধিক, সামাজিক এবং প্রাক্ষোভিক আচরণগত সমস্যার সমাধানে প্রাথমিক দায়িত্ব শিক্ষককে গ্রহণ করতে হয়।


[10] সক্রিয় গবেষণায় অশগ্রহণ : বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের উন্নতি এবং সাধারণ প্রশাসনিক এবং শিক্ষা-সংক্রান্ত সমস্যা যাতে বিদ্যালয়েই সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে বর্তমান শিক্ষকগণ সক্রিয় গবেষণার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন।


সবশেষে বলা যায়, শিক্ষার পরিধি ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে এবং এই অবস্থায় শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে শিক্ষককে আগামী দিনে নতুন নতুন ভূমিকা পালন করতে হবে।


সামাজিক বিকাশের উপযােগিতা বা গুরুত্ব আলােচনা করাে।


সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার ভূমিকা আলােচনা করাে।


শিক্ষার লক্ষ্য সামাজিক বিকাশ– এ বিষয়ে বিস্তারিত আলােচনা করো।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে সামাজিক বিকাশের লক্ষ্যটি ব্যাখ্যা করাে।


ব্যক্তিগত বিকাশের উপযােগিতা বা গুরুত্ব আলােচনা করাে।


ব্যক্তিগত বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার ভূমিকা লেখাে।


শিক্ষার লক্ষ্য ব্যক্তিগত বিকাশ— এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করাে।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বিকাশের লক্ষ্যটি আলােচনা করাে।


বংশধারা এবং পরিবেশ কাকে বলে? শিক্ষার্থী হল বংশধারা এবং পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার গুণফল—উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।