পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্যাবলি সংক্ষেপে লেখাে।

পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্য

(1) অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দ্বারা নির্ধারিত : পাঠক্রম নির্ধারণ করার জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা এই বিষয়ে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের প্রয়ােজন হয়।


(2) পূর্বনির্ধারিত : পাঠক্রম পূর্বনির্ধারিত সুপরিকল্পিত উপায়ে শিক্ষার্থীদের বয়স, বিকাশগত বৈশিষ্ট্য, সামর্থ্য প্রভৃতি বিষয়গুলি মাথায় রেখে এটি স্থির করা হয়।


(3) পরিবর্তনযোগ্য : মানবজীবন পরিবর্তনশীল আর তার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠক্রমও পরিবর্তিত হচ্ছে। অর্থাৎ, পাঠক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এটি পরিবর্তনযােগ্য।


(4) শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ও বাইরে বিস্তৃত : শ্রেণিকক্ষের ভেতরে এবং বাইরের সমস্ত সুপরিকল্পিত অভিজ্ঞতাই পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত।


(5) শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে সহায়ক : আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সহায়তা করা। তাই পাঠক্রমে এমন সব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়—যা শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশে প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে সাহায্য করে।


(6) উদ্দেশ্যনির্ভর : পাঠক্রমের আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যনির্ভরতা। সমাজের প্রয়ােজনে, জীবন ও জীবিকার তাগিদে পরিবর্তনশীল পরিবেশের উপযােগী বিষয়বস্তু এবং অভিজ্ঞতাকে এমনভাবে পাঠক্রমে সংগঠিত করতে হয়, যাতে শিক্ষার্থী বর্তমান জীবনের সমস্যা সমাধানের সাথে সাথে আগামী দিনের সমস্যা সমাধানের কৌশলগুলিও আয়ত্ত করতে পারে৷


(7) আদর্শগত ও বাস্তবসম্মত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত : পাঠক্রমের ভিত্তি হল তার আদর্শগত ও বাস্তবগত দিক। তাই আদর্শ ও বাস্তব দুটি দিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।


(8) তান্ত্রিক ও ব্যবহারিক দিকসম্পন্ন : আধুনিক পাঠক্রমে দুটি দিক দেখা যায়—তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক শিক্ষার্থীকে সুপরিকল্পিত পথে পরিচালনার জন্য পাঠক্রমের তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক উভয় দিকই সমান গুরুত্বপূর্ণ।


(9) চাহিদা ও সামর্থ্যভিত্তিক : পাঠক্রম প্রস্তুতির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, চাহিদা ও সামর্থ্যের ওপর যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়, তেমনই চাহিদা ও সামর্থ্যের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, তার প্রতিও লক্ষরাখা হয়ে থাকে।


(10) মূল্যায়নসাপেক্ষ : মূল্যায়নযােগ্যতা পাঠক্রমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।পাঠক্রমের প্রধানত দুধরনের মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। এগুলি হল যথাক্রমে প্রস্তুতকালীন মূল্যায়ন ও চূড়ান্ত মূল্যায়ন। পাঠক্রম প্রণয়নে যে বিভিন্ন স্তরগুলি রয়েছে সেগুলির উৎকর্ষ বিচারের জন্য যে মূল্যায়নের সাহায্য নেওয়া হয় তাকে বলে প্রস্তুতকালীন মূল্যায়ন। পাঠক্রম প্রস্তুত ও প্রয়ােগের পর পাঠক্রমের উদ্দেশ্য কী পরিমাণে অর্জিত হয়েছে, ছাত্রদের কাছে এর গ্রহণযােগ্যতা ইত্যাদির বিচার করতে যে মূল্যায়ন করা হয় তাকে বলে চূড়ান্ত মূল্যায়ন।


এই আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, আধুনিক পাঠক্রম হল উদ্দেশ্যমুখী, অভিজ্ঞতানির্ভর, পরিবর্তনশীল, জীবনকেন্দ্রিক, কর্মভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক।


ব্যক্তিগত বিকাশের উপযােগিতা বা গুরুত্ব আলােচনা করাে।


ব্যক্তিগত বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার ভূমিকা লেখাে।


শিক্ষার লক্ষ্য ব্যক্তিগত বিকাশ— এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করাে।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বিকাশের লক্ষ্যটি আলােচনা করাে।


বংশধারা এবং পরিবেশ কাকে বলে? শিক্ষার্থী হল বংশধারা এবং পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার গুণফল—উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।


শিক্ষায় আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।


পাঠক্রমের সংজ্ঞা দাও। পাঠক্রম গঠনের উপাদানগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


পাঠক্রম কী? পাঠক্রম নির্ধারণে শিশুর কোন্ কোন্ চাহিদা ও ক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত?