গতানুগতিক পাঠক্রম কী? এর ত্রূটিগুলি আলােচনা করাে।

গতানুগতিক বা বিষয়মুখী পাঠক্রম

যে ধরনের পাঠক্রম প্রধানত পাঠ্যপুস্তককে কেন্দ্র করে রচিত হয়। কেবলমাত্র কতকগুলি তাত্ত্বিক জ্ঞানকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাকে গতানুগতিক বা বিষয়মুখী পাঠক্রম বলে। ভাষা, বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস, ভূগােল ইত্যাদি জ্ঞানের বিষয়ের ওপর আলাদা আলাদা পাঠ্যসূচি নির্দিষ্ট করা হয়। ছাত্রছাত্রীরা এই পাঠ্যসূচিগুলি বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের পরামর্শমতাে পৃথকভাবে অনুশীলন করে। এটাই হল বিষয়মুখী পাঠক্রমের মূল বৈশিষ্ট্য।


গতানুগতিক বা বিষয়মুখী পাঠক্রমের ত্রূটি


(1) জ্ঞানের বিচ্ছিন্নতা : গতানুগতিক বা বিষয়মুখী পাঠক্রমে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগােল, বিজ্ঞান, গণিত ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের বিষয় পৃথকভাবে পড়ানাের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরাও এগুলিকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখে।


(2) ভাষার চাপ : গতানুগতিক বা বিষয়মুখী পাঠক্রমে ভাষার ওপর অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। অনেক সময় মাতৃভাষা ছাড়াও আরও দুটি ভাষা শিখতে হয়।


(3) অপরিবর্তনশীলতা : গতানুগতিক পাঠক্রমে দীর্ঘ সময় ধরে একই পাঠক্রম চলতে থাকে। পরিবর্তনের কথা চিন্তা করা হয় না।


(4) মনােবিজ্ঞানসম্মত নয় : এই ধরনের পাঠক্রম মনােবিজ্ঞানসম্মত নয়। কারণ শিক্ষার্থীর চাহিদা, রুচি, সামর্থ্য, আগ্রহ প্রভৃতির কোনাে মূল্য এখানে দেওয়া হয় না।


(5) পরীক্ষভিত্তিক : এই পাঠক্রম মূলত পরীক্ষাভিত্তিক। কোনােরকমে বিষয়বস্তু মনে রেখে পরীক্ষায় পাস করা বা ভালাে নম্বর পাওয়া এবং বৃত্তি গ্রহণ করাই এই পাঠক্রমের মূল লক্ষ্য।


(6) বৈচিত্রহীন শিখন ও শিক্ষা : এই পাঠক্রমে পূর্বনির্ধারিত কতকগুলি বিষয়বস্তু মুখস্থ করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। ফলে শিক্ষক ও ছাত্র উভয়েই শিক্ষা ও শিখনে গতানুগতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে।


(7) বৃত্তিমুখী শিক্ষার অভাব : এই পাঠক্রমে কেবল তত্ত্বগত জ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে পাঠক্রম শেষ করার পর বৃত্তির সুযােগ খুবই কম।


(8) শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার অভাব : এই পাঠক্রম প্রধানত তাত্ত্বিক হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযােগ খুবই কম। ফলে তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযােগও পায় না।


(9) অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা কম : গতানুগতিক পাঠক্রমে অপ্রথাগত সংস্থা (যেমন—গৃহ, প্রেস, রেডিয়াে, টিভি ইত্যাদি) র ভূমিকা খুবই কম। এইগুলির সাথে শিক্ষার্থীদের মিথস্ক্রিয়ার কোনাে ব্যবস্থা নেই।


ওপরের আলােচনা থেকে বলা যায়, গতানুগতিক পাঠক্রম সংকীর্গ, পুথিকেন্দ্রিক ও পরীক্ষাভিত্তিক হওয়ায় এটি বৈচিত্র্যহীন। এটি কৃত্রিম পরিবেশে গড়ে ওঠায় শিক্ষার্থীদের কাছে খুব একটা আকর্ষণীয় নয়। এই দুটিগুলি সংশােধন করে একে আরও গ্রহণযােগ্য করে তুলতে হবে।


ব্যক্তিগত বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার ভূমিকা লেখাে।


শিক্ষার লক্ষ্য ব্যক্তিগত বিকাশ— এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করাে।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বিকাশের লক্ষ্যটি আলােচনা করাে।


বংশধারা এবং পরিবেশ কাকে বলে? শিক্ষার্থী হল বংশধারা এবং পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার গুণফল—উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।


শিক্ষায় আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।


পাঠক্রমের সংজ্ঞা দাও। পাঠক্রম গঠনের উপাদানগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


পাঠক্রম কী? পাঠক্রম নির্ধারণে শিশুর কোন্ কোন্ চাহিদা ও ক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত?


পাঠক্রমের বৈশিষ্ট্যাবলি সংক্ষেপে লেখাে।