জনঘনত্ব কাকে বলে এবং তা কীভাবে নির্ণয় করা হয় | জনঘনত্ব বণ্টনের ওপর দুটি অর্থনৈতিক উপাদানের প্রভাব আলােচনা করাে।

জনঘনত্ব

কোনাে দেশ বা অঞ্চলের মােট জনসংখ্যা এবং ওই দেশ বা অঞ্চলের মােট জমির পরিমাণের অনুপাতকে অর্থাৎ প্রতি বর্গকিমিতে জনসংখ্যার পরিমাণকে জনঘনত্ব বলে। জনঘনত্ব মানুষ ও জমির পরিমাণগত সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এটি জনসংখ্যা বণ্টনের তারতম্যের সূচক।


জনঘনত্বের বৈশিষ্ট্য :


  • জনঘনত্ব হল মানুষ ও জমির পরিমাণগত সম্পর্ক।

  • জনসংখ্যার ঘনত্ব থেকে কোনাে দেশ বা অঞ্চলের জনসংখ্যার বণ্টন সম্পর্কে ধারণালাভ করা যায়। কিন্তু, মােট জনসংখ্যা সম্পর্কে কোনাে ধারণালাভ করা যায় না।

  • জনসংখ্যার ঘনত্ব থেকে কোনাে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন এবং কাম্য জনসংখ্যা সম্বন্ধে কোনাে ধারণা লাভ করা যায় না।


জনঘনত্ব নির্ণয়ের পদ্ধতি


কোনাে অঞ্চলের মােট জনসংখ্যাকে ওই অঞ্চলের মােট জমির পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে জনঘনত্ব পাওয়া যায়।


উদাহরণ : 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের মােট জনসংখ্যা ছিল 121 কোটি 01 লক্ষ 93 হাজার 422 এবং ভারতের আয়তন হল 31 লক্ষ 66 হাজার 414 বর্গকিমি।


জনঘনত্ব বন্টনের ওপর দুটি অর্থনৈতিক উপাদানের প্রভাব


জনঘনত্ব বণ্টনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী প্রধান দুটি অর্থনৈতিক উপাদান হল কৃষি এবং শিল্প।


(১) কৃষি : অর্থনৈতিক কারণ হিসেবে কৃষিকাজ জনঘনত্ব বণ্টনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। মানুষের জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ কৃষিক্ষেত্র থেকেই পাওয়া যায়। পৃথিবীর সর্বত্র কৃষিক্ষেত্রের পরিমাণ ও তার উর্বরাশক্তির ওপর জনঘনত্ব নির্ভরশীল। যেখানে চাষবাসের সুযােগসুবিধা রয়েছে সেইসব অঞ্চলে জনঘনত্ব অনেক বেশি। যেমন-দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উর্বর পলিগঠিত নদী-সমভূমি পৃথিবীর অত্যধিক জনবহুল অঞ্চল। প্রেইরি ও পম্পাস তৃণভূমির কৃষি-অঞ্চলও ঘনবসতিপূর্ণ। ভারতের গ্রামীণ জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে কৃষিনির্ভর। মরু অঞ্চলের বালি মাটি কৃষিকাজের অনুপযুক্ত। মালভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের অনুর্বর ল্যাটেরাইট মাটিতেও চাষ-আবাদ বেশি হয় না। তাই এসব অঞ্চলে জনঘনত্ব কম।


(২) শিল্প: শিল্পের কাঁচামাল পাওয়া যায় কৃষিক্ষেত্র, বনভূমি ও খনি থেকে। শিল্পোন্নতি প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযােগ যেমন বাড়ায় তেমনি সামগ্রিকভাবে অঞ্চল, দেশ ও জাতির অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটায়। সেজন্য কোনাে অঞ্চলের শিল্পের বিকাশ আকর্ষক শক্তি (Pull Factor) হিসেবে কাজ করে। পৃথিবীতে যেখানেই শিল্পের বিকাশ ঘটেছে সেখানে নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে ঘন জনবসতি গড়ে উঠেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মুম্বাইপুনে নাগপুর, আমেদাবাদ-সুরাট, দুর্গাপুর-আসানসােল-রানিগঞ্জ, শিকাগাে-গ্যারি এবং রুর প্রভৃতি শিল্পাঞলগুলি অত্যধিক জনবহুল।

কাম্য জনসংখ্যা, জনস্বল্পতা ও অতি-জনাকীর্ণতার ধারণাগুলি ব্যাখ্যা করাে।


জনঘনত্ব ও মানুষ-জমি অনুপাতের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করাে। 'মানুষ-জমি অনুপাত একটি গতিশীল ধারণা'-ব্যাখ্যা করাে।


মানুষ-জমি অনুপাত ধারণাটি ব্যাখ্যা করাে। অথবা, মানুষ-জমি অনুপাত বলতে কী বােঝায় ? কৃষিজ দ্রব্য উৎপাদনের ওপর এর প্রভাব লেখাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)