পর্যায়ন কী? বহির্জাত প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগুলি আলােচনা করাে।

পর্যায়ন

1876 খ্রিস্টাব্দে G. K. Gilbert সর্বপ্রথম 'Grade' শব্দটি ব্যবহার করেন। নদী ক্ষয় ও সঞয়কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ভারসাম্যজনিত অবস্থায় পৌঁছায়, যাকে বলা হয় গ্রেড। সাধারণভাবে একে ক্রমও বলা যেতে পারে।


অর্থাৎ ক্রমান্বয়ে ভারসাম্য অবস্থার সাপেক্ষে পর্যায়ন শব্দটি এসেছে। চেম্বারলিন (Chamberlin) ও স্যালিসবারি (Salisbury)-এর মতে পর্যায়ন বলতে বহির্জাত প্রক্রিয়াসমূহের সম্মিলিত ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজের মাধ্যমে উঁচুনীচু ভূভাগকে অর্থাৎ ভূমির উপরিভাগের অনিয়মিত রূপরেখাকে (Surface Irregularities) একটি সাধারণ তল বা পৃষ্ঠে (Common level) নিয়ে আসাকে বােঝায়। এখানে সাধারণ তল বা পৃষ্ঠ বলতে ক্ষয়ের শেষ সীমাকে (Base level of Erosion) বোঝায়।


সুতরাং ক্ষয়ের শেষ সীমার সাপেক্ষে ভূপৃষ্ঠের সমতলীকরণ হল পর্যায়ন। মূলত অবরােহণ (Degradation) ও আরােহণ (Aggradation) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ভূমিভাগের পর্যায়ন ঘটে থাকে। এই দুই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী প্রধান এজেন্টগুলি হল নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ, ভৌমজল প্রবাহ, ভর সঞ্চলন প্রভৃতি। তবে কিছু জৈবিক প্রক্রিয়া ও আবহবিকার ক্ষয় ও সঞচয়কাজে সাহায্য করে।


বহির্জাত প্রক্রিয়ার পদ্ধতিসমূহ


[1] ক্ষসাধন বা অবরােহণ প্রক্রিয়া: আবহবিকার, ভর-অপচয় বা পুঞ্জিত ক্ষয় (Mass Wasting), ক্ষয়ীভবন, নগ্নীভবন, নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি ভূত্বকের বাইরের প্রক্রিয়াসমূহ ভূপৃষ্ঠের উঁচু স্থানসমূহকে ক্রমাগত ক্ষয় করে এবং সমতল ভূমিতে পরিণত করে নতুন ভূমিরূপ গঠন করে। একে অবরােহণ প্রক্রিয়া বলে।


[2] আরােহণ বা স্তূপীকরণ প্রক্রিয়া: নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ, ভৌমজল, সমুদ্রস্রোত, সমুদ্রতরঙ্গ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির সঞ্চয়কার্যের ফলে নতুন নতুন ভূমিরূপ গঠিত হয়। একে আরােহণ বা স্তূপীকরণ প্রক্রিয়া বলে।


[3] জৈবিক প্রক্রিক্ষা: বিভিন্ন উদ্ভিদ এবং প্রাণী ক্ষয় ও সঞয়কার্যের মাধ্যমে ভূমিরূপের যে পরিবর্তন ঘটায়, তাকে জৈবিক প্রক্রিয়া বলে।