পূর্ব ও পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ কী | পেট্রোরসায়ন শিল্পজাত পণ্যের বিশ্ববাণিজ্য সংক্ষেপে লেখাে।

পূর্ব ও পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ

পূর্ব ভারতে অসমের বঙ্গাইগাঁও ও নুনমাটি; পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত হলদিয়া এবং পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্রের ট্রম্বে, থানে; গুজরাতের ভাদোদরা, নলধারি ও জামনগরে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে। এর কারণগুলি হল一


[1] কাঁচামাল পাওয়ার সুবিধা : পেট্রো-রসায়ন শিল্পের কাঁচামাল যেমন-ন্যাপথা, মিথেন, ইথিলিন প্রভৃতি এই দুই অঞ্চলে অবস্থিত তেল শােধনাগারগুলি থেকে ট্যাঙ্কার মারফত এবং শিল্পকেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত পাইপ লাইনের মাধ্যমে আনার সুবিধা রয়েছে। যেমন-হলদিয়া পেট্রো-রসায়ন শিল্পকেন্দ্রটি পাইপ যােগে বঙ্গাইগাঁও ও নুনমাটি থেকে এবং ভাদোদরা, জামনগর কেন্দ্রগুলি কয়ালি শােধনাগার থেকে কাঁচামাল পায়।


[2] বন্দরের নৈকট্য : পেট্রো-রসায়ন শিল্পকেন্দ্রগুলি বন্দরের কাছাকাছি বা বন্দরের পশ্চাদভূমিতে অবস্থিত। ট্রম্বে মুম্বাই বন্দরের, হলদিয়া নিজস্ব বন্দরের, জামনগর ওখা বন্দরের, ভাদোদরা সুরাট বন্দরের সুবিধা পায়। এই শিল্পকেন্দ্রগুলি বন্দর মারফৎ কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনার এবং উৎপাদিত পণ্য বাইরে পাঠানাের সুবিধা পায়।


[3] উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের অধিকাংশ পেট্রো-রাসায়নিক শিল্পকেন্দ্রগুলি রেলপথ ও জাতীয় সড়কপথের দ্বারা সমগ্র ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এর ফলে পেট্রোরসায়নজাত দ্রব্য উৎপাদনকেন্দ্র থেকে বাজারে পরিবহণ করা খুব সুবিধাজনক হয়েছে।


[4] জমির সহজলভ্যতা : পেট্রো রাসায়নিক শিল্প অধিক মাত্রায় পরিবেশ দূষণ ঘটায়। তাই এই শিল্পের অবস্থানের জন্য লোকালয় থেকে দূরে ও সস্তায় বিস্তীর্ণ জমি পেতে কোনাে অসুবিধা হয়নি।


[5] দক্ষ ও সুলড শ্রমিক : কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী ও কায়িক শ্রমের কর্মী এই দুটি অঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে সুলভে পাওয়ার সুবিধা আছে।


[6] মূলধন : বর্তমানে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। তাই শিল্প স্থাপনে প্রচুর পরিমাণে সরকারি ও বেসরকারি মূলধনের বিনিয়ােগ হয়েছে।


[7] চাহিদা বা বাজার : কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র, চটের বস্তা, কাপড়ের থলে, সুতিবস্ত্র, লােহার পাইপ ইত্যাদি নানাবিধ দ্রব্যের পরিপূরক দ্রব্য, ওষুধ, ডিটারজেন্ট, রং, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য, রাসায়নিক সার প্রভৃতি দ্রব্য এই শিল্প থেকে পাওয়া যায়। ফলে এইসকল দ্রব্যের অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক বিশাল বাজার রয়েছে।


পেট্রোরসায়ন শিল্পজাত পণ্যের বিশ্ববাণিজ্য


পেট্রো-রসায়ন শিল্পে যে সমস্ত দ্রব্য উৎপন্ন হয়, তার অল্প পরিমাণই রপ্তানি বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করে। পেট্রোরসায়ন শিল্প প্রধানত শিল্পোন্নত দেশগুলিতেই গড়ে উঠেছে। এই শিল্পের উৎপাদিত দ্রব্যগুলির চাহিদাও এই দেশগুলিতে অধিক। ফলে উৎপাদিত দ্রব্যের খুব স্বল্প অংশই রপ্তানি বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মতাে শিল্পোন্নত দেশ তার উৎপাদনের 33% রপ্তানি করলেও প্রায় প্রয়ােজনে 25% বিদেশ থেকে আমদানি করে। অতীতে ভারত তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণরূপে আমদানি-নির্ভর থাকলেও বর্তমানে ভারত দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করেছে।


পেট্রোপণ্য রপ্তানিকারক দেশসমূহ : আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ভারত প্রভৃতি।


পেট্রোপণ্য আমদানিকারক দেশসমূহ : চিন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, পূর্ব ইউরােপের দেশসমূহ, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, লাতিন আমেরিকার দেশসমূহ।


ভারতে স্বয়ংগতিযান (Automobile) শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা আলােচনা করাে। ভারতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও জিপ গাড়ি তৈরির চারটি কারখানার উল্লেখ করাে।


আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মােটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প সম্বন্ধে আলােচনা করাে।


ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)