ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করাে। ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য লেখাে।

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের পার্থক্য


ঘূর্ণবাত

  • ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ।

  • ঘূর্ণবাতের বায়ু চারদিক থেকে কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে।

  • ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের বায়ু উষ্ণ ও ঊর্ধ্বমুখী।

  • উত্তর গােলার্ধে বায়ু বামাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতদিকে এবং দক্ষিণ গােলার্ধে। বায়ু দক্ষিণাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার দিকে প্রবাহিত হয়।

  • মাঝারি থেকে তীব্র গতিসম্পন্ন।

  • ঘূর্ণবাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।

  • আকাশ মেঘে পরিপূর্ণ থাকে।

  • অল্পক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে খুব শক্তিশালী ও বিধ্বংসী।


প্রতীপ ঘূর্ণবাত

  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে উচ্চচাপ।

  • প্রতীপ ঘুর্ণবাতে বায়ু কেন্দ্র থেকে চারদিকে প্রবাহিত হয়।

  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বায়ু শীতল ও অধােমুখী।

  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতে বায়ু উত্তর গােলার্ধে দক্ষিণাবর্তে এবং দক্ষিণ গােলার্ধে বায়ু বামাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে প্রবাহিত হয়।

  • ধীর গতিসম্পন্ন।

  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতে বৃষ্টি হয় না। আবহাওয়া শুষ্ক থাকে।

  • মেঘের কোনাে চিহ্ন থাকে না। আকাশ রােদে ঝলমল করে।

  • দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়। তবে ঘূর্ণবাতের মতাে শক্তিশালী ও বিধ্বংসী হয় না।


ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য


স্বল্প পরিসর স্থান কোনাে কারণে উয় হলে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। বায়ুচাপের সমতা রক্ষা করার জন্য পার্শ্ববর্তী অঞ্লের বায়ু নিম্নচাপ কেন্দ্রে ধাবিত হয় ও কালক্রমে উর্ধ্বগামী হয়। এই বায়ুকে ঘূর্ণবাত বলে। ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল一


  • কেন্দ্রে নিম্নচাপের উপস্থিতি: ঘূর্ণবাতের সমগ্র এলাকায় বায়ুর চাপ কম থাকে। বিশেষ করে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে চাপ সর্বনিম্ন হয়। ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে এই চাপ 850-900 মিলিবারও হয়ে থাকে।


  • বায়ুপ্রবাহের গতি: ঘূর্ণবাতে বায়ুপ্রবাহের গতি ঘণ্টায় 20 কিমির কম হয় না এবং গতিবেগ 400 কিমি পর্যন্ত হতে পারে।


  • বায়ুপ্রবাহের দিক: বায়ু নিম্নচাপকক্ষের চারদিকে আবর্তিত হতে হতে প্রবাহিত হয়। এটি উত্তর গােলার্ধে বাঁদিকে ও দক্ষিণ গােলার্ধে ডানদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়।


  • দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া: ঘূর্ণবাত যতক্ষণ অবস্থান করে, ততক্ষণ আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকে।


  • শীর্ষের উপস্থিতি: প্রত্যেক ঘূর্ণবাতে ঘূর্ণির একটি শীর্ষ থাকে। এই শীর্ষস্তর জেট বায়ুস্রোতের সঙ্গে যুক্ত হলে ঘূর্ণবাতের গতিপথ ওই বায়ুস্রোতের পথকে অনুসরণ করে। এ ছাড়া বায়ুর চাপ বলয়ের স্থানান্তরের ফলেও এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়।


  • চাপের পার্থক্য: ঘূর্ণবাতের বহিঃসীমানা ও কেন্দ্রের মধ্যে তাপের পার্থক্য যেমন তীব্র, তেমনি চাপের পার্থক্যও প্রবল।


  • কেন্দ্রমুখী বায়ু: চারিদিক থেকে বায়ু ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়, অর্থাৎ ঘূর্ণবাতে বায়ু কেন্দ্রমুখী।


  • শক্তিলাভ: লীনতাপ ও জলীয় বাষ্প থেকে ঘূর্ণবাত তার শক্তিলাভ করে। এই শক্তি গতিশক্তিতে পরিণত হয় ও ঘূর্ণর্বাতকে সক্রিয় রাখে।