ঘূর্ণবাতের শ্রেণিবিভাগ করাে এবং তাদের বৈশিষ্ট্য লেখাে।

ঘূর্ণবাতের শ্রেণিবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য

ইংরেজি শব্দ 'Cyclone'এর অর্থ সর্পিল আকৃতির কুণ্ডলী। ক্রান্তীয় অঞ্চলে অথবা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্লের স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ু হঠাৎ খুব বেশি উত্তপ্ত হলে এক গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। তখন পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু পাক খেতে খেতে কুণ্ডলীর আকারে এই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসে। নিম্নচাপ অঞ্চলে পৌঁছে বায়ু উষ্ণ ও উধ্বমুখী। হয়। এইরূপ কেন্দ্রমুখী ও উর্ধ্বগামী কুণ্ডলী আকারে আবর্তিত বায়ুপ্রবাহকে ঘূর্ণবাত বা সাইক্লোন বলে। আঞ্চলিক অবস্থান ও প্রকৃতিগত পার্থক্য অনুযায়ী ঘূর্ণবাতকে [1] ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ও (2) নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত—এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।


[1] ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত : উভয় গােলার্ধের ক্রান্তীয় অঞ্চলে 5° থেকে 20° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অধিকাংশ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সংঘটিত হয়। এই অঞ্চলে অত্যাধিক উয়তার জন্য সমুদ্রের উপরিভাগের বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়। ফলে, এই অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। তখন চারপাশের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু প্রবল বেগে কুণ্ডলীর আকারে ঘুরতে ঘুরতে এইরূপ গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ধেয়ে আসে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে এইরূপ প্রবল গতিসম্পন্ন কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊধ্বগামী বায়ুপ্রবাহকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে।


ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য :


  • ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ এবং বাইরের দিকে থাকে উচ্চচাপ। বায়ুচাপের পার্থক্য 30 মিলিবারের বেশি হয়।


  • এই বায়ু উত্তর গােলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে এবং দক্ষিণ গােলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরতে ঘুরতে কেন্দ্রের দিকে ধেয়ে আসে।


  • প্রবল ঘূর্ণবাতের উচ্চতা প্রায় 12 কিমি থেকে 16 কিমি এবং ব্যাস 200 থেকে 700 কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।


  • ঘূর্ণবাতের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় 120 কিমি থেকে 160 কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর গতিবেগ ঘণ্টায় 200 কিলােমিটারের বেশি হলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলে।


  • বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে প্রায় বায়ুহীন, মেঘহীন, শান্ত অবস্থা বিরাজ করে। একে ঝড়ের চক্ষু বলে।


[2] নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত : নিরক্ষরেখার উভয় দিকে, 35° থেকে 65° অক্ষরেখার মধ্যে দুটি ভিন্নধর্মী বায়ু - মেরু অঞ্চলে থেকে আগত শুষ্ক ও শীতল ভারী বায়ুপুঞ্জের সঙ্গে ক্রান্তীয় অণল থেকে আগত উষ্ণ-আর্দ্র বায়ুপুঞ্জের সংঘর্ষ হয়। এদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শীতল ও ভারী বায়ু উষ্ণ বায়ুর স্থান দখল করে। ফলে, উষ্ণ বায়ু সীমান্ত বরাবর শীতল বায়ুর ওপর প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ওপরে উঠে যায়, এর ফলে যে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় তাকে নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত বলে।


নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য :


  • এই ঘূর্ণবাত দীর্ঘস্থায়ী হয়।

  • এই ঘূর্ণবাতে বায়ুর গতিবেগ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত অপেক্ষা কম, তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কম।

  • এদের প্রভাবে দীর্ঘক্ষণ ধরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়।


উদ্ভিদের মৃত্তিকাস্থিত পুষ্টিমৌল কাকে বলে? উদ্ভিদের পুষ্টিমৌলের শ্রেণিবিভাগ করাে ও প্রধান পুষ্টিমৌলের উপযােগিতা লেখাে।


উদ্ভিদের মৃত্তিকাঙ্খিত গৌণ পুষ্টিমৌলের উপযােগিতা আলােচনা করাে। মাটির pH বলতে কী বােঝ?


মুক্তিকার ক্ষয় ও মৃত্তিকার অবনমনের মধ্যে পার্থক্য লেখাে। মৃত্তিকার অবনমনের প্রক্রিয়াসমূহ উল্লেখ করাে। আবহবিকারের সঙ্গে মাটির উৎপত্তির সম্পর্ক আলােচনা করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)