তৈলবীজ বলতে কী বােঝ? ভারতে কী ধরনের পরিবেশে তৈলবীজ উৎপন্ন হয়? ভারতের চিনাবাদাম ও সয়াবিন উৎপাদনকারী রাজ্যের নাম উল্লেখ করাে।

তৈলবীজ

যেসব শস্য থেকে তেল পাওয়া যায়, সেগুলিকে বলে তৈলবীজ। ভারতে দুধরনের তৈলবীজ উৎপন্ন হয় [1] ভােজ্য তৈলবীজ (সরষে, তিল, চিনাবাদাম, সয়াবিন প্রভৃতি) এবং [2] অভােজ্য তৈলবীজ (তিসি, রেডি প্রভৃতি)।


তৈলবীজ উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশ


(১) জলবায়ু : ভারতে শীতকালে রবিশস্য হিসেবে তৈলবীজ চাষ করা হয়।

  • উষ্ণতা : শীতকালের মৃদু ও শীতল আবহাওয়া এবং 15 °সেলসিয়াস থেকে 25 °সেলসিয়াস উষ্ণতা তৈলবীজ উৎপাদনের উপযােগী।

  • বৃষ্টিপাত : তৈলবীজ চাষে বেশি বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয় না, বৃষ্টিপাত 50 থেকে 125 সেন্টিমিটার হলে ভালাে হয়।


(২) মাটি : উর্বর দোআঁশ মাটি বা এঁটেল মাটিতে তৈলবীজ চাষ করা হয়।


(৩) ভূপ্রকৃতি : সামান্য ঢালু জমি বা জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত সমতল জমি তৈলবীজ চাষের উপযােগী।


(৪) শ্রমিক : তৈলবীজ চাষে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়।


ভারতের চিনাবাদাম উৎপাদক রাজ্যসমূহ


চিনাবাদাম উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে প্রথম স্থান (57.8 লক্ষ টন)-এর অধিকারী (FAO, 2012 )। এদেশে হেক্টর প্রতি চিনাবাদাম উৎপাদনের পরিমাণ 1,179 কেজি। ভারতের মােট তৈলবীজ উৎপাদক জমির প্রায় 20 শতাংশ অঞ্চলে চিনাবাদামের চাষ হয়। গুজরাত (জুনাগড়, রাজকোট, জামনগর), তামিলনাড়ু (উ. ও দ. আর্কট, সালেম), অবিভক্ত অপ্রদেশ (অনন্তপুর, চিত্তুর), রাজস্থান, কর্ণাটক (বেলগাঁও, গুলবর্গা, কোলার), মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে চিনাবাদামের চাষ করা হয়। চিনাবাদাম উৎপাদনে গুজরাত রাজ্যের স্থান ভারতে প্রথম। এখানে 16.5 লক্ষ হেক্টর জমিতে 26.4 লক্ষ টন চিনাবাদাম উৎপাদিত হয়।


ভারতের সয়াবিন উৎপাদক রাজ্যসমূহ


FAO-এর তথ্য অনুসারে 2012 খ্রিস্টাব্দে ভারতে 108 লক্ষ হেক্টর জমিতে সয়াবিন উৎপাদনের পরিমাণ 115 লক্ষ টন। এদেশে হেক্টর প্রতি সয়াবিন উৎপাদনের পরিমাণ 1,065 কেজি। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, অবিভক্ত অপ্রদেশ, কর্ণাটক প্রভৃতি রাজ্যে সয়াবিনের চাষ করা হয়। সয়াবিন উৎপাদনে মধ্যপ্রদেশের স্থান ভারতে প্রথম। এখানে 56.7 লক্ষ হেক্টর জমিতে 62.8 লক্ষ টন সয়াবিন উৎপাদিত হয়।