পাট চাষের অনুকূল পরিবেশ সম্পর্কে আলােচনা করাে।

পাট চাষের অনুকূল অবস্থাসমূহ


(ক) পাট চাষের ভৌগোলিক অবস্থা :

  • জলবায়ু: পাট উয়ুমণ্ডলের ফসল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের পলি-গঠিত সমভূমিতে পাট চাষ সীমাবদ্ধ। উয় ও আর্দ্র জলবায়ু পাট চাষের উপযােগী।


  • উষ্ণতা: পাট চাষের জন্য গড়ে 25 °সে.-এর বেশি উষ্ণতা প্রয়ােজন।


  • বৃষ্টিপাত: বছরে 150-200 সেমি বৃষ্টিপাত পাট চাষের জন্য একান্ত প্রয়ােজন।


  • মৃত্তিকা: উর্বর পলিমাটি কিংবা ভারী দোআঁশ মাটি পাট চাষের উপযােগী। নদীর দ্বারা প্লাবিত নতুন পলিসঞ্জিত অঞ্চলে পাট চাষ ভালাে হয়। এই কারণেই গঙ্গা ও ব্ৰত্মপুত্র নদীর বদ্বীপ অঞ্চল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পাট উৎপাদক অঞ্চল।


  • জলাশয়: পাট চাষের জমির কাছে জলাশয় থাকা একান্ত প্রয়ােজন। কারণ, পাট গাছ কেটে জলাশয়ে কিছুদিন ভিজিয়ে রাখার পরই কাণ্ড থেকে তন্তু ছাড়ানাে যায়।


  • ভূপ্রকৃতি: সমতল ও নিম্নভূমি পাট চাষের পক্ষে আদর্শ। কারণ এতে বৃষ্টি বা প্লাবনের ফলে পলি সঞ্চিত হয়ে জমি উর্বরতা লাভ করে।


(খ) পাট চাষের অর্থনৈতিক অবস্থা :

  • শ্রমিক: পাট চাষের জন্য প্রচুর সুলভ শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়ে থাকে। পাটের বপন থেকে আরম্ভ করে পাট কাটা, ভেজানাে, আঁশ ছাড়ানাে প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর সুলভ শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়।


  • মূলধন: বর্তমানে উন্নত পদ্ধতির মাধ্যমে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাট চাষের জন্য উন্নত সার, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক, উচ্চফলনশীল বীজ ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হয়। সুতরাং, এইসবের জন্য পাট চাষে প্রচুর মূলধনেরও প্রয়ােজন হয়।


  • পরিবহণ: পাট শিল্পের কাঁচামাল হওয়ায় শিল্পাঞ্চল ও পাট চাষের এলাকাগুলির মধ্যে উপযুক্ত পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে ওঠা প্রয়ােজন।


  • চাহিদা বা বাজার: শিল্পকেন্দ্রগুলির পাটের চাহিদা বৃদ্ধি, পাটের উপযুক্ত বিক্রয়মূল্য ও স্থিতিশীল বাজারই কেবল পাট চাষের উন্নতি ঘটাতে পারে।