পৃথিবীর যে-কোনাে প্রধান দুটি দেশের লৌহইস্পাত শিল্পের বণ্টন বর্ণনা করাে | এশিয়ার প্রধান দুটি দেশের লৌহ ইস্পাত শিল্পের বণ্টন বর্ণনা করাে।

চিন ও জাপানের লৌহ-ইস্পাত শিল্পের বণ্টন

লৌহ- ইস্পাত শিল্পে বর্তমান পৃথিবীতে এশিয়া মহাদেশের দেশ হিসেবে চিন ও জাপান যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী। নীচে এই দু-দেশের লৌহ ইস্পাত শিল্পের বণ্টন আলােচনা করা হলㅡ


(১) চিন : চিন বর্তমানে ইস্পাতপিণ্ড উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। 2012 সালে এদেশে ইস্পাতপিণ্ড উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 71.6 কোটি মেট্রিক টন। এ ছাড়া লৌহপিণ্ড উৎপাদনেও এই দেশের স্থান প্রথম। 2012 সালে এদেশে লৌহপিণ্ড ও লৌহ-সংকর উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 130 কোটি মেট্রিক টন। চিনের প্রধান লৌহ-ইস্পাত উৎপাদক অঞ্চলগুলি হল


  • ইয়াংসি উপত্যকা : সিকিয়াং অঞ্চলের লােহা ও নানকিং অঞলের কয়লার ওপর নির্ভর করে ইয়াংসি নদীর উপত্যকা অঞ্চলে সাংহাই, উহান, চংকিং-এ ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।


  • ডংৰেই অঞ্চল : ফুশান, ফুক্সিন ও পেনশিহু প্রভৃতি অঞ্চলের উন্নত কয়লা এবং আনশান প্রদেশের লােহা-আকরিকের ওপর নির্ভর করে এই শিল্পাঞ্চলের প্রধান ইস্পাতকেন্দ্রগুলি গড়ে উঠেছে। দেশের মােট ইস্পাত উৎপাদনের 20% এখানে উৎপাদিত হয়। এই অঞ্চলের প্রধান লৌহ ও ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্রগুলি হল আনশান (বৃহত্তম), পেনকি ও ফুশান। এখানে 50টিরও বেশি ছােটো বড়াে লােহা ও ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে।


  • শানসি অঞ্চল : স্থানীয় কয়লা ও লােহা-আকরিকের ওপর নির্ভর করে ইয়ানচুয়ান, আইয়ুয়ান ও সিংতেই-তে ইস্পাত উৎপাদন কেন্দ্রগুলি গড়ে উঠেছে।


এ ছাড়া উত্তর চিনের বাওতাও, বেজিং-এর দক্ষিণে শিজিয়াঝুয়াং, পূর্ব দিকে জিনান এবং দক্ষিণ দিকে ইউনান অঞ্চলের ডুকু প্রভৃতি চিনের লৌহ ও ইস্পাত শিল্পকেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম।


(২) জাপান : 2011 সালে লােহাপিণ্ড উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 9.6 কোটি মেট্রিক টন। ইস্পাতপিণ্ড উৎপাদনে জাপানের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (10.7 কোটি মেট্রিক টন, 201:2)। জাপানের প্রধান লৌহ ইস্পাত অঞ্চলগুলি হল


  • উত্তর কিউশু : জাপানের মােট ইস্পাত উৎপাদনের 40-50% এখানে উৎপন্ন হয়। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, চিন, ফিলিপিনস্ প্রভৃতি দেশ থেকে আমদানি করা লােহা-আকরিকের ওপর ভিত্তি করে এখানে ইস্পাতকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। ইয়াওয়াটা-টোবাটা, নাগাসাকি, ফুকুওয়া, কোকুরা প্রভৃতি এই অঞ্চলের উল্লেখযােগ্য ইস্পাতকেন্দ্র। ইয়াওয়াটা জাপানের বৃহত্তম ইস্পাতকেন্দ্র।


  • কিনকি অঞ্চল : দেশের মােট উৎপাদনের 25% ইস্পাত এখানে উৎপন্ন হয়। অঞ্চলটির প্রধান কেন্দ্রগুলি হল—কোবে, ওসাকা, সাকাই, ওকায়ামা, হিমেজি, আমাগাসাকি প্রভৃতি। অস্ট্রেলিয়া, চিন প্রভৃতি দেশ থেকে আমদানি করা লােহার ওপর ভিত্তি করে এখানে ইস্পাতকেন্দ্র গড়ে তােলা হয়েছে। এখানকার ইস্পাত উৎপাদনকেন্দ্রে আমদানি করা স্ক্র্যাপ আয়রন বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।


  • কোয়ান্টো অঞ্চল : স্থানীয় জলবিদ্যুৎ ও বিদেশ থেকে আমদানি করা লােহার ওপর ভিত্তি করে এখানে ইস্পাত উৎপাদনকেন্দ্র গড়ে ওঠেছে। এখানে দেশের 10-15% ইস্পাত উৎপাদিত হয়। প্রধান কেন্দ্রগুলি হল—টোকিও, ইয়ােকোহামা, কাওয়াসাকি, চিবা প্রভৃতি।


  • উত্তর-পূর্ব হনশু অঞ্চল : দেশের মাত্র 5% ইস্পাত এখানে উৎপাদিত হয়। এখানকার প্রধান দুটি হল- কামাইশি ও ফুঞ্জি।


রাউরকেলা ইস্পাতকেন্দ্রের অবস্থানের কারণগুলি উল্লেখ করাে। দুর্গাপুরে লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলােচনা করাে।


জামশেদপুরে এবং বােকারােতে লৌহ-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণ আলােচনা করাে।


কাঁচামালের অভাব সত্ত্বেও জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ লৌহ-ইস্পাত উৎপাদক দেশ- ব্যাখ্যা করাে। জাপানের লৌহ-ইস্পাত অঞ্চলগুলির নাম উল্লেখ করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)