"কাঁচামালের অভাব সত্ত্বেও জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ লৌহ-ইস্পাত উৎপাদক দেশ”- ব্যাখ্যা করাে | জাপানের লৌহ-ইস্পাত অঞ্চলগুলির নাম উল্লেখ করাে।

কাঁচামালের অভাব সত্ত্বেও লােহা ও ইস্পাত শিল্পে জাপানের অগ্রগতির কারণ

বর্তমানে জাপান পৃথিবীতে লৌহপিণ্ড এবং ইস্পাত উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। কাঁচামালের অভাব থাকা সত্ত্বেও লােহা ও ইস্পাত শিল্পে জাপানের অগ্রগতির কারণগুলি হলㅡ


[1] বন্দরের নৈকট্য : জাপানের বেশির ভাগ লােহা ও ইস্পাত শিল্প সমুদ্রবন্দরের কাছে অবস্থিত। বন্দরের কাছে স্থাপিত হওয়ায় কাঁচামাল আমদানি ও শিল্পজাত দ্রব্যাদি রপ্তানির পরিবহণ ব্যয় খুব কম।


[2] বাজার : জাপানের ইস্পাত ও ইস্পাতজাত দ্রব্য খুব উচ্চমানের। এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে, এমনকি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশেও এইসব দ্রব্যের প্রচুর চাহিদা আছে। এ ছাড়া, জাপানের অভ্যন্তরীণ বাজারের আয়তনও সুবিশাল।


[3] আমদানিকৃত আকরিক লোহার ব্যবহার : আকরিক লােহার অভাব থাকায় জাপান প্রচুর পরিমাণে আকরিক লােহা ভারত ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করে। উন্নতমানের আমদানিকৃত লােহা ব্যবহারের ফলে প্রচুর ইস্পাত উৎপন্ন হয়।


[4] বর্জ্য লোহার ব্যবহার : জাপানে লােহা ও ইস্পাত উৎপাদনে বর্জ্য লােহার ব্যবহার ক্রমবর্ধমান। বর্জ্য লােহা এ দেশের বড়াে বড়াে শহর ও শিল্পকেন্দ্রগুলি থেকে পাওয়া যায়। এ ছাড়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকেও বর্জ্য লােহা আমদানি করা হয়।


[5] আমদানিকৃত কয়লার ব্যবহার : লােহা ও ইস্পাত শিল্পের প্রয়ােজনীয় কয়লা অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা হয়।


[6] উন্নত প্রযুক্তি : জাপানে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে লােহা ও ইস্পাত উৎপাদন করা হয়। এ দেশে বেসিক অক্সিজেন পদ্ধতি ও বিদ্যুৎশক্তির সাহায্যে ইলেকট্রিক আর্ক ফার্নেসে ইস্পাত উৎপাদন করা হয়। জাপানে জলবিদ্যুৎ শক্তি সুলভে ও অতি সহজেই পাওয়া যায়।


[7] শ্রমিকের নৈপুণ্য : জাপানের শিল্পোন্নতির অন্যতম কারণ শ্রমিকের নৈপুণ্য। এখানকার শ্রমিক খুবই পরিশ্রমী ও নিপুণ। শ্রমিকদের মাথাপিছু উৎপাদনশীলতা খুবই বেশি।


[8] সরকারি সাহায্য : শিল্পের উন্নতির জন্য জাপান সরকার উদ্যোগীদের প্রচুর ঋণ এবং শিল্পপতিদের নানাভাবে উৎসাহ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।


[9] উন্নত ব্যবস্থাপনা : জাপানের শিল্পপতিরা উৎপাদন ব্যয় ও বাজার সম্পর্কে খুবই সচেতন, তারা সংস্থা-ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত দক্ষ। যা এখানকার শিল্পোন্নতির একটি প্রধান কারণ।


[10] উন্নত পরিবহশ ব্যবস্থা : এ দেশের সড়ক, রেল ও জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। এর ফলে বড়াে বড়াে শহর থেকে বজ্য লােহা সংগ্রহ করতে এবং শিল্পকেন্দ্রগুলি থেকে লােহা ও ইস্পাতজাত সামগ্রী বাজারে পাঠাতে সুবিধা হয়।


জাপানের প্রধান প্রধান লৌহ-ইস্পাত অঞ্চল


জাপানের প্রধান চারটি অঞ্চলে লৌহ ইস্পাত কারখানাগুলি কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এগুলি হল

  • [1] উত্তর কিউশু শিল্পাঞ্চল, 

  • [2] কিনকি শিল্পাঞ্চল, 

  • [3] কোয়ান্টো শিল্পাঞ্চল, 

  • [4] উত্তর-পূর্ব হনশু শিল্পাঞ্চল এবং 

  • [5] দক্ষিণ হােক্কাইডাে শিল্পাঞ্চল।


মধ্যভারতের একটি প্রধান ইস্পাত কারখানার অবস্থান সংক্ষেপে আলোচনা করে। ভারতের পূর্ব উপকূলের বন্দর নির্ভর প্রধান ইস্পাতকেন্দ্রের অবস্থানের কারণ উল্লেখ করাে।


রাউরকেলা ইস্পাতকেন্দ্রের অবস্থানের কারণগুলি উল্লেখ করাে। দুর্গাপুরে লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলােচনা করাে।


জামশেদপুরে এবং বােকারােতে লৌহ-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণ আলােচনা করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)