জামশেদপুরে এবং বােকারােতে লৌহ-ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণ আলােচনা করাে।

জামশেদপুরে লৌহ ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণসমূহ

ভারতের একটি বৃহৎ বেসরকারি ইস্পাত কারখানা টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি (TISCO) ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে (পূর্বনাম সাকচি) সুবর্ণরেখা ও খরকাই নদীর মিলনস্থলে জামশেদজি টাটার উদ্যোগে 1907 সালে স্থাপিত হয়। কারখানাটি লােহা আকরিক ও কয়লাখনির মধ্যবর্তী অংশে অবস্থিত। এখানে লৌহইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠার অনুকূল কারণগুলি হলㅡ


[1] আকরিক লোহার সহজলভ্যতা : এই কারখানার জন্য প্রয়ােজনীয় আকরিক লােহা আসে 72-96 কিমি দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত ওডিশার গােরুমহিষানি, বাদামপাহাড়, ময়ূরভঞ্জ এবং ঝাড়খণ্ডের সিংভূম অঞ্চলের লােহাখনি থেকে।


[2] পর্যাপ্ত কয়লার জোগান : এই কারখানার প্রয়ােজনীয় কয়লা আসে 177 কিমির মধ্যে অবস্থিত রানিগঞ্জ ও ঝরিয়া কয়লাখনি থেকে।


[3] চুনাপাথর ও ম্যাঙ্গানিজ : 175 কিমি দূরে অবস্থিত ওডিশার সুন্দরগড় জেলার গাংপুর (ম্যাঙ্গানিজ) এবং বীরমিত্রপুর, হাতাবাড়ি (চুনাপাথর) থেকে প্রয়ােজনীয় চুনাপাথর ও ম্যাঙ্গানিজের জোগান দেওয়া হয়।


[4] জল সরবরাহ : কারখানার প্রয়ােজনীয় জল আসে সুবর্ণরেখা নদীর ডিমনা জলাধার থেকে।


[5] বন্দর ও যােগাযােগ ব্যবস্থা : এই অঞ্চল পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ ও সড়কপথের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যুক্ত। ফলে পণ্যের আদানপ্রদান ও শ্রমিকদের যাতায়াতের কোনাে অসুবিধা হয় না। এই অঞ্চলের কাছেই রয়েছে কলকাতা, হলদিয়া (250 কিমি) ও পারাদ্বীপ বন্দর। ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যেরও সুবিধা রয়েছে।


বােকারােতে লৌহ-ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠার কারণসমূহ


পূর্বতন সােভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার বােকারােতে দামােদর ও বােকারাে নদীর মিলনস্থলে বােকারাে স্টিল প্ল্যান্ট (1964) স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে ইহা SAIL-এর সাথে যুক্ত হয়। এই কারখানাটি গড়ে ওঠার কারণগুলি হল


[1] আকরিক লোহার পর্যাপ্ত জোগান : ওডিশার বাদামপাহাড়, গােরুমহিষানি, সুলাইপাত প্রভৃতি স্থান থেকে আকরিক লােহা আমদানি করা হয়।

[2] কয়লার সহজলভ্যতা : কাছেই বােকারাে ও ঝরিয়া থেকে কয়লা পাওয়ার সুবিধা।

[3] চুনাপাথর ও ম্যাঙ্গানিজ : গাংপুর ও বীরমিত্রপুর থেকে ম্যাঙ্গানিজ ও চুনাপাথর পাওয়ার সুবিধা।

[4] জল সরবরাহ : দামােদরের তেনুঘাট জলাধার থেকে জলের সরবরাহ।

[5] পর্যাপ্ত বিদ্যুৎশক্তি : দামােদর অববাহিকার জলবিদ্যুৎ এবং তাপবিদ্যুৎ।

[6] যােগাযােগ ব্যবস্থা : পূর্ব রেলের মাধ্যমে উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থা।

[7] বন্দরের সান্নিধ্য : কাছেই কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে বাণিজ্যের সুবিধা।

দক্ষিণ ভারতের প্রধান ইস্পাত কারখানাটির গড়ে ওঠার কারণ সংক্ষেপে আলােচনা করাে পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ উল্লেখ করাে।


মধ্যভারতের একটি প্রধান ইস্পাত কারখানার অবস্থান সংক্ষেপে আলোচনা করে। ভারতের পূর্ব উপকূলের বন্দর নির্ভর প্রধান ইস্পাতকেন্দ্রের অবস্থানের কারণ উল্লেখ করাে।


রাউরকেলা ইস্পাতকেন্দ্রের অবস্থানের কারণগুলি উল্লেখ করাে। দুর্গাপুরে লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি আলােচনা করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)