সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'বধূ' কবিতাটিতে গ্রাম-শহরের যে দ্বান্দ্বিক প্রেক্ষাপটটি রয়েছে, তার পরিচয় দাও।

সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'বধূ' কবিতাটিতে একদিকে যেমন যুগপ্রভাব পড়েছে অন্যদিকে মানবিকতার তীর্যক প্রকাশে সমৃদ্ধ হয়ে তা রসোত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলা যায়। নৈরাশ্যবাদীতাই এ যুগের কবিগোষ্ঠির চরম লক্ষণ। কখনো কখনো মনে হয়েছে যন্ত্রণার এই অন্ধ কারাগার থেকে বুঝি কারোরই মুক্তি নেই। ‘বধূ’ কবিতাটির রচনাকাল ১৯৩৭ থেকে ৪০-এর মধ্যে, একথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্বযুদ্ধের আঘাতে আঘাতে তখন ভেঙে পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চেহারা। সামন্ততান্ত্রিক গ্রামগুলির সীমা ভেঙে গিয়ে নগরায়ণ হচ্ছে দিকে দিকে। জাতীয় তথা বিশ্ব পরিস্থিতিও তখন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। গ্রামের সীমা ভেঙে ফেলে শহরে উঠে আসছে মানুষ। অথচ শহর তখনও প্রস্তুত হয়নি এই বিশাল জনসংখ্যার চাপ সহ্য করবার জন্য। শহরে গড়ে উঠেছে তখন বস্তি জীবন, বেকারত্ব। মূল্যবোধের অবক্ষয় সমস্ত শ্রেণির শিল্পী সাহিত্যিক কবিদের বিচলিত করে তুলেছিল সেদিন। অর্থনৈতিক মন্দা আর মানবিক ক্ষয় শহরকে তখন আপাত জটিল নাগরিক বৃত্তি গ্রহণে তৎপর করে তুলছে। ভালোবাসাহীন কৃত্রিম এই জীবন মানুষকে এমনভাবে বেঁধে ফেলেছিল সেদিন। সে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হতে হতে মানুষের পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। এমনই এক সামাজিক, অর্থনৈতিক চোরাস্রোতের অবিলতায়, না জেনেই নিমগ্ন হবার উপায়হীন পরিস্থিতিতে সহজ-সরল এক গ্রাম্যমেয়ে বধূ হয়ে পা ফেলল এই শহর কলকাতায়। কিন্তু এ শহর তো তখন অনিশ্চয়তা ভরা এক মৃত্যুহীন জীবনের আবর্ত রচনা করে চলেছে। ফলে নিষ্পাপ পল্লিতনয়া কানাগলিতে জীবনের সব সাধ বিসর্জন দিয়ে হারিয়ে যায় তখনই। সামাজিকভাবে, মানসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এ শহর সেদিন মানুষের পরিচয় নিয়ে তীব্র খেলা খেলে চলেছিল, কিন্তু মানুষতো নির্জীব যন্ত্রানুষঙ্গ নয়, তার স্মৃতি আছে, সত্তা আছে, আছে ভবিষ্যতও। তাই স্মৃতির অ্যালবামে প্রদীপ জ্বেলে মানুষের সামনে অতীত এসে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে এসে দাঁড়য় অতীতের সঙ্গে লগ্ন হয়ে থাকা গ্রামীণ জীবনানন্দের উৎসগুলি। বর্তমানকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে এক পল্লিতনয়া, আজকের নাগরিক বধূটিকে হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। গোধূলি লগ্নের রঙীন মুহূর্তগুলি মনে পড়ে তার। সেখানে রয়েছে দীঘির গহীন কালো জলে অরণ্যপ্রান্তরের নিবিড় ছায়া ঘেরা আহ্বান। বাধানো ঘাট যেখানে উদার হৃদয় নিয়ে বাউল বৈরাগীদের উত্তেজনাহীন শান্ত জীবন প্রবাহ উপহার দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। সেই বাঁধানো ঘাটে বাউল বৈরাগীর বেশ ধরে যদি কিছুক্ষণ বসে থাকা যায়, তাহলেও গ্রামের সাধারণ মানুষ সরল হৃদয়ে ভক্তপ্রাণের প্রণামী দিয়ে যাবে। জীবন সেখানে ব্যস্ত বা কোলাহলে মুখর নয়, সন্ধে হলে সেখানে তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বলে, শঙ্খধ্বনি রাত্রিকে আবাহন করে আনে। আকাশে জ্বলে ওঠে চাঁদ। দিগন্তরেখা ভেসে যায় জ্যোৎস্নায়। কলসি ভাসিয়ে গ্রাম্য মেয়েরা দীঘিতে স্নান করে ফেরে।


গ্রামের এই নিবিড় ছায়ায় বেড়ে ওঠা পল্লিতরুণীটি আজ নাগরিক বধূ। গ্রামজীবনের প্রতি মমতা শহরের সামগ্রিক পরিমণ্ডলটির ফাঁক আরও বেশি করে প্রকট করে তুলেছে। শহরেও সন্ধ্যা নামে, কিন্তু ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বলে ওঠে না। তার পরিবর্তে রাজপথে জ্বলে ওঠে গ্যাসের আলো। তরুণী বধূটির কাছে এই গ্যাসের আলো, বেতারের মায়াবী সুর অদ্ভুত আলো-আঁধারী এক জগৎ নিয়ে আসে। সান্ধ্য শাঁখের আওয়াজ নয়, তার বদলে ফেরিওয়ালাদের ঘরে ফেরার ক্লান্ত সুর শোনা যায়। আর এই গ্যাসবাতির আলো, ফেরিওয়ালাদের ক্লান্ত সুরই নাগরিক বধূটির কাছে জল আনতে যাওয়ার সঙ্কেত সূচক হয়ে যায়। সুভাষ মুখোপাধ্যায় অসাধারণভাবে নাগরিক জীবনের চূড়ান্ত প্রতিবেশটি তৈরি করেছেন। কারণ তরুণী বধূটির জল আনতে যাওয়ার পথ প্রান্তে কোনো দীঘি বা পুকুর নেই, আছে কর্পোরেশনের টাইমকল। কোনো সঙ্গী সাথী, বা সখী পরিবৃতভাবে সে জল আনতে যায় না এখানে বরং অদ্ভুত বিপন্নতায় সঙ্গীহীন জীবনকে প্রতীকায়িত করে চলে ‘সবার মাঝে একলা ফিরি আমি' বাক্যবন্ধে। অজস্র মানুষের ভিড়েও এই নাগরিক বধূটি অনিশ্চিত জীবনের আবর্ত রচনা করে চলে। কারণ, যে মানুষটির হাত ধরে এই ইট-কাঠ পাথরের জঞ্জাল পরিকীর্ণ শহরে পা রেখেছিল সেই প্রিয় মানুষটিও ঋণের ভারে জর্জরিত হতে হতে অবশেষে উধাও হয়ে গেছে। ফলে পাড়া প্রতিবেশী মানুষজনের তীব্র দৃষ্টি প্রতিটি মুহূর্তেই বধূটিকে অস্বস্তিতে ভরে দেয়। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হতে হতে, প্রেমহীন এক সার্বিক অসহায়তার তীব্র বোধই জীবন থেকে বিযুক্ত হবার মতো মানসিক অবস্থান তৈরি করেছে বধূটির জীবনে।


সদ্য গ্রাম থেকে উঠে আসা এই তরুণী বধূটির জীবনে যেমন যন্ত্রণা আছে তেমনি রয়েছে গ্রামজীবনের সুখময় মুহূর্তগুলির স্মৃতি। নাগরিক হতে হতে এই গ্রাম্যতরুণী পরিবর্তিত জীবনভূমিটিকেও বুঝে নিয়েছে। আজ তার কাছে তেজারতির ব্যবসা, পুঁজিবাদ, ধনতন্ত্রের নির্মম পীড়ন, বাণিজ্য ও বণিকি সভ্যতার মাশুলহীন লাভের প্রেক্ষাপটটি অজানা নয়। তাই উঁচু উঁচু বাড়িগুলোর মাথা ছাড়িয়ে এ শহরেও যখন চাঁদের আলোর বন্যা নামে, তখনও সে জ্যোৎস্নায় প্লাবিত হওয়ার পরিবর্তে সুদখোর মহাজন পেশোয়ারীকে দেখতে পায় লাঠি উঁচিয়ে আসতে। আসলে জীবনের আর এক নাম যে এই নাগরিক সভ্যতায় ক্রমশই বিপণন বা বিনিময় সম্পর্ক হয়ে যায় সেদিনের গ্রাম থেকে উঠে আসা মেয়েটির কাছে আজ আর তা অজানা নয়। জীবনযুদ্ধে লড়াই করে যাওয়াই যে আজ একমাত্র সত্য, কান্না বা চোখের জল এমনকি মৃত্যুও যে অর্থহীন এক ভ্রুকুটি তৈরি করে এই নাগরিক জীবনে, মেয়েটি বধূ হতে হতে তা বুঝে গেছে। নাগরিকতা মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটাতে ঘটাতে মেয়েটিকে বুঝিয়ে দিয়েছে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জীবনের উপযোগী হয়ে কীভাবে প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠতে হয়। এখানে রবীন্দ্রনাথ ও তার উত্তরসূরীদের ভাবনাগত ব্যবধানটিও প্রকট হয়ে পড়ে। রবীন্দ্র সৃষ্ট বধূটি শহরের বিরুদ্ধ পরিবেশে জীবনকে মানিয়ে নিতে না পেরে দীঘির শান্তশীতল জলে ডুবে মরতে চেয়েছে। কিন্তু সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতার বধূ মৃত্যুতেই যে জীবনের সব প্রশান্তি সম্ভব—একথা মেনে নিতে পারেনি। কারণ সে জানে, প্রাণহীন এ রাজধানীতে মৃত্যুও বড়ো তুচ্ছ হয়ে যায়। পলায়নী এই মনোবৃত্তি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের নাগরিক বধূটিকে শেষ পর্যন্ত তাই আচ্ছন্ন করতে পারেনি। জীবনের সমস্ত যন্ত্রণা-গ্লানিকে অক্লেশে মেনে নিয়ে সে বলেছে,

“বুঝেছি কাঁদা হেথায় বৃথা; তাই 

কাছেই পথে জলের কলে, সখা

কলসি কাঁখে চলেছি মৃদু চালে।”


রবীন্দ্রনাথ বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব নাগরিক জীবন তথা সমাজ সভ্যতার নিদারুণ টানাপোড়েনে নারীর অন্তঃপুরকেন্দ্রিক জীবনযাপন ও তার বন্ধনমুক্তির আকুলতাকে পরতে পরতে বিন্যস্ত করে দেখিয়েছিলেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের দাবী তখন সম্পূর্ণ উপেক্ষিত ছিল। সেই একই পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে রবীন্দ্র উত্তরপর্বের কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় দেখালেন বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নগর জীবনের অবক্ষয়িত চেহারা। জনবসিতপূর্ণ ঘিঞ্জি গলি, বস্তিজীবন সর্বস্ব এ শহরের চিত্র। কিন্তু এসব কিছুর পরেও নতুন যুগের আলো তথা বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিদ্যার প্রয়োগের ভিন্নমুখী সম্প্রসারণ এসেছে নগরে। নবজাগরণের মুক্তির আলো এযুগের মেয়েদের বন্দী জীবনের পাশাপাশি এনে দিয়েছিল অনেকখানি খোলা আকাশ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মেয়েদের জীবনে বন্দী হয়ে থাকার উদ্বেগ-আকুলতা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছিল সেদিন। রবীন্দ্রসৃষ্ট বধূটি তাই অনেক ক্ষেত্রেই সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখনীর জাদুস্পর্শে যুগের উন্মুক্ত চেতনায় নগর জীবনকে গ্রহণ ও বর্জনের মাধ্যমে উপযোগী করে নিয়েছে। এই সূত্রে গ্রামের নিস্তরঙ্গ পরিবেশের আকুলতা ও মায়ার পাশাপাশি নগর জীবনের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ইতিহাসটিকে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে।


কবিতাটির ছত্রে ছত্রে উন্মোচিত হয়েছে নাগরিক সন্ধ্যা নেমে আসার চিত্র। ফেরিওয়ালার ডাক, বেতারের মায়াবী সুর, রাস্তার ধারে টাইমকলে জল আনতে যাওয়ার সময় মেপে শহরে সন্ধ্যা আসে। লক্ষণীয় জল আনতে যাওয়ার এক ধরনের প্রতীকীবিন্যাস গ্রাম ও নগরের ব্যবধানটিকে আমাদের কাছে যেন স্পষ্ট করে তোলে। ‘জল’ আমাদের জাগতিক জীবনে ‘জীবন' শব্দেরই অন্য প্রতিনাম। মানুষের প্রতিদিনের নিয়মনিষ্ঠ পরিক্রমণে একটু অনিয়ম, একটু অন্যরকম পরিবেশনা, অপ্রয়োজনের অবিরাম আনন্দ আমাদের জীবনকে ভরিয়ে রাখে। গ্রামজীবনে এই অপ্রয়োজনের আনন্দ প্রকৃতির অজস্র উপকরণ ও সজ্জায় নিহিত থাকে। জল আনতে যাওয়ার পথে জীবনের অনেক গ্লানি এই পরিবেশ মিটিয়ে দেয়। কিন্তু গ্রামের সেই অনাবিল জীবন থেকে উঠে এসে নাগরিক সভ্যতার নিয়মনিষ্ঠ মেপে চলা পথযাত্রায় ইঁট-কাঠ-পাথরের ইমারতে পূর্ণ রাস্তায় জীবন যাপনের মৌল রসদটিকে খুঁজে পায়নি বধূটি। দীঘির গহীন কালো জলের পরিবর্তে, কংক্রীটে মোড়া লেক রয়েছে তার সামনে, যেখানে মৃত্যুও মাথা কুটে মরবে। ছায়াঘন শ্যামল বনছায়ার প্রান্তে জীবনের পূর্ণচন্দ্র নাগরিক জীবনে প্রহসন হয়ে যায়, বধূটি দেখে ছাদের ওপরে কপাটের ফাঁকে সেই চাদের হাতছানি। মুক্তজীবনের অনাবিল আনন্দের বিপ্রতীপে এই নগর বধূটিকে দিয়েছে বন্দী জীবনের বিষাদ। কান্না ভেজা আঁচলে সে পেয়েছে শুধু শাসন-শোষণের নিদারুণ যন্ত্রণা প্রীতিহীন সম্পর্কের অবিশ্বাস তাকে ক্রমশই মৃত্যুচিন্তা বা বিতৃষ্ণাময় যাপিত প্রহরের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গ্রামের সঙ্গী-সাথী-সখী পরিবৃত জীবনের বদলে বিচ্ছিন্ন একক একটি জীবন পেয়েছে বধূটি। শহর তাকে দিয়েছে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখবার জন্য, কেবলমাত্র বেঁচে থাকবার জন্য প্রয়োজনীয় রসদটুকু। অর্থাৎ টাইমকলের মাপা হিসেবের জল। যেখানে রয়েছে ব্যবহারের সতর্ক অঙ্গুলি সঙ্কেত।


প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতায় নাগরিক ধূসরতার এমন বর্ণহীনতাই প্রকট হয়ে উঠেছিল সেদিন। যুগগত ক্লান্তি আর বিষণ্ণতা গ্রামের নিভৃত জীবনচর্যার পাশে হয়ে উঠেছিল অসহনীয়। ক্লেদাক্ত এই জীবন অসহায় সীমাবদ্ধতার সঙ্গেই এক রেখা ও রঙে অভিব্যক্ত হয়ে পড়েছিল সেদিন। যুদ্ধ যেমন আমাদের সমাজ, ব্যক্তিসত্তা, জীবনবোধকে গ্রাস করেছিল তেমনি পুঁজিবাদী বর্বরতা, ধনতন্ত্রের নিবিড় স্বৈরাচার নাগরিক মানুষকে করে তুলেছিল ফাঁপা একটি সত্তা। রোমান্টিক প্রেমের চিরায়ত স্রোতটিও তাই অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল মানবের চিন্তা-চেতনা থেকে। জীবনানন্দ তাই লিখেছিলেন, “দেহ ঝরে, ঝরে যায় মন তারও আগে” যুগগত বন্ধ্যাত্ব, নাগরিক ক্লান্তিজনিত বিষণ্ণতাই নিয়তির মতো তার ক্ষমাহীন হাত প্রশস্ত করে চলে মানবজীবনে। নিয়তির এই ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা থেকে, নাগরিক আগ্রাসনের হাত থেকে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের একদা গ্রাম্য তরুণী সদ্য নাগরিক বধূটিও মুক্তির আকাশখানা খুঁজে নিতে পারেনি। অস্তিত্বের জড়তা, আর অসহায় যাপিত জীবনের প্রবল অনিশ্চয়তা এক অন্তঃসারশূন্য বেঁচে থাকার তীব্র যন্ত্রণায় জারিত করে দিয়েছে তাকে। মূল্যবোধহীন নগ্ন নাগরিক মানসিকতায় কবিতার শেষ স্তবকটি আশ্চর্য শ্লেষ নিয়ে উচ্চারিত হয়েছে তার কণ্ঠে,

“কাছেই পথে জলের কলে, সখা, 

কলসি কাঁখে চলেছি মৃদু চালে।”