আরাকান রাজসভার দুই মুসলমান কবি : দৌলত কাজী ও সৈয়দ আলাওল

দৌলত কাজী ও সৈয়দ আলাওল


ইসলামধর্মের একটি গৌরবময় বাণী হল— “কানান্না সো উন্মাতান ওয়াহেদাতান” (সমগ্র মানবমণ্ডলী এক জাতি)। এই এক জাতির আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্বের সমগ্র মানব সমাজের মধ্যে ন্যায় সততা ও কল্যাণবোধের উদ্বোধন করাই ছিল তার কাম্য। একই বিশ্বাসের ভিত্তিভূমিতে (ইসলামের একেশ্বরবাদ) সমস্ত মানুষকে যুক্ত করাই ছিল এই ধর্মের ধ্রুব লক্ষ্য। কিন্তু ধর্ম-কলহের ফলে বাংলাদেশে মুসলমান সমাজের মধ্যে ঐ বিশ্বাস ও আদর্শের লক্ষ্যচ্যুতি ঘটে গেল। তবে ধীরে ধীরে শাসনকার্য স্থিতিশীল হলে অবস্থার অনেকটা পরিবর্তন ঘটল। মুসলমান শাসকগণ এই দেশকে ‘দার-উল হার্ব’ বা শত্রুর দেশ বলে ভাবার পরিবর্তে রাজনৈতিক তথা শাসনতান্ত্রিক প্রয়োজনেই বাংলা তথা দেশীয় ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি কৌতূহলী হলেন। এমন কি, বাংলাদেশের সুদূর সীমাত্তে আরাকান-চট্টগ্রামের শাসকেরাও অনেকেই বাংলা ভাষায় সাহিত্যরচনার জন্য কবিদের নির্দেশ দিলেন। ফলে রোসাঙ রাজসভাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠল এক বিচিত্র ও অভিনব সাহিত্য-আসর।


বহুকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আরবদেশীয় মুসলমান বণিকদের যাতায়াত ছিল। ফলে বাংলাদেশে মুসলমানদের আসার আগেই সমুদ্রোপকূলে অবস্থিত চট্টগ্রামে আরবীয় মুসলমানদের উপনিবেশ গড়ে উঠেছিল। তাদের অনেকেই বাংলা ভাষার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। ব্রহ্মপ্রদেশের নিম্নভাগের সংলগ্নবর্তী অঞ্চল আরাকান বা রোসাঙ চট্টগ্রামের সন্নিহিত অঞ্চল বলে সেখানেও তাদের প্রভাব পড়েছিল। নিজ নিজ প্রতিভার গুণে কোন কোন মুসলমান রাজসভায় অমাত্য, সেনাপতি প্রভৃতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁরা বাংলা ভাষার ও সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। এই অমাত্য ও সেনাপতিদের প্রেরণায় এবং উৎসাহে মুসলমান কবিরা বাংলা ভাষায় কাব্যরচনায় প্রণোদিত হয়েছিলেন। এঁদের রচিত কাব্য বাংলা সাহিত্যে এক স্বতন্ত্র নতুন ধারার সূচনা করেছিল। প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে দেব-দেবীর কাহিনী প্রধান ছিল। মানুষের কথা ছিল নিতান্ত গৌণ। আরাকান রাজসভার মুসলমান কবিরাই সর্বপ্রথম মধ্যযুগের দেবমাহাত্ম্যপূর্ণ কাব্য রচনার গতানুগতিকতা ভঙ্গ করেন। রক্তমাংসের মানুষের রোমান্টিক প্রেমগাথা রচনা করলেন, এখানে ধর্ম-নিরপেক্ষ আবেদন লক্ষণীয়।


এই সাহিত্যদর্শের প্রধান প্রতিভূ ছিলেন দুই কবি– দৌলত কাজী এবং সৈয়দ আলাওল।


দৌলত কাজী :

চট্টগ্রামের রাউজান থানার অন্তর্গত সুলতানপুরে কবি দৌলত কাজীর জন্ম। পিতৃপুরুষ ছিলেন হিন্দু। সম্ভবত, কবি ধর্মে ছিলেন সুফী মতাবলম্বী, বিখ্যাত সুফী সাধক মুইনুদ্দীন মহম্মদ চিস্তীর অনুগামী। অতি অল্প বয়সেই তিনি নানা বিদ্যায় পারদর্শী হয়েছিলেন। আপন কবিত্ব শক্তির প্রকাশ এবং যশোলাভের উদ্দেশ্যে তিনি আরাকান রাজসভায় এসেছিলেন। সেনাপতি আশ্রফ খাঁ তাঁকে সাদরে অভিনন্দিত করেন। কবির জীবনকাহিনীর বিশেষ পরিচয় জানা যায় না।


গোহারি ভাষায় রচিত কাব্য বাঙালী বুঝতে না পারায় আরাকানরাজ শ্রীসুধর্মার সমরসচিব আশ্রফ খাঁ কবিকে বাংলায় কাব্য রচনার পরামর্শ দেন :

“দেশীভাষে কহ তাকে পাঞ্চালীর ছন্দে। 

সকলে শুনিয়া যেন বুঝয়ে সানন্দে ।।”


তারই পৃষ্ঠপোষকতায় কবি ১৬২২-১৬৩৮ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে ‘লোর-চন্দ্রানী’ বা ‘সতী ময়নাবতী’ (অসম্পূর্ণ) নামে গ্রন্থটি রচনা করেন। কাব্যটির তিনভাগের মাত্র দুভাগ লেখা হয়। গ্রন্থটির উৎস-উপাদান হল মিঞা সাধনের গুজরাটি গোহারি-ঠেট ভাষায় লেখা 'মৈনা কো সৎ', চতুর্দশ শতকে মুল্লা দাউদের লেখা 'চন্দায়ন' কাব্য এবং ‘লোরক-চন্দ্রানী’ লোকগাথা। এই গ্রন্থ পরে কবি আলাওল আরাকানরাজ সান্দ-থু-ধম্মার (চন্দ্রসুধর্মা) প্রধানমন্ত্রী সোলেমানের নির্দেশে ১৬৫৮ খ্রীস্টাব্দে কাব্যের বাকী অংশ লিখে সমাপ্ত করেন।


নায়ক লোরক এবং নায়িকা চন্দ্রানীর থেকেই একাব্যের নাম ‘লোর-চন্দ্রানী’ হয়েছিল। কাব্যটি দুই খণ্ডে বিভক্ত : প্রথম খণ্ডে ময়নামতীর স্বামী লোরক এক যোগীর নির্দেশে গোহারি দেশের রাজকন্যা চন্দ্রানীকে বিবাহের উদ্দেশ্যে সে দেশে যাত্রা করেন। চন্দ্রানী বিবাহিত হলেও লোরকের সঙ্গে তাঁর প্রণয় ঘটে। সেইজন্য চন্দ্রানীর নপুংসক স্বামীর সঙ্গে লোরকের যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে চন্দ্রানীর স্বামী বামনবীর-এর মৃত্যু হলে উভয়ের বিবাহ হয়েছিল। দ্বিতীয় খণ্ডে আছে ময়নামতীর কাহিনী। স্বামী লোরকের অনুপস্থিতিতে ময়নামতী নানা প্রলোভন উপেক্ষা করে স্বামীর প্রতীক্ষা করেন। অবশেষে একদিন লোরক চন্দ্রানীর কাছে ফিরে এলে কাব্যটির উপসংহার ঘটে।


স্বামীহীনা ময়নামতীর মর্মবেদনা কবি অপূর্ব নৈপুণ্যে প্রকাশ করেছেন। ছন্দজ্ঞান, অলঙ্কার শাস্ত্রে কবির পাণ্ডিত্য সর্বত্র প্রকাশিত। সর্বোপরি, দৌলত কাজীর গ্রন্থে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মানবপ্রেমের বিজয়বার্তা :

“নর সে পরম জান, তন্ত্র মন্ত্র জ্ঞান। 

নর সে পরম দেব নর সে ঈশ্বর ।।

নর বিনে ভেদ নাহি ঠাকুর কিঙ্কর।”


সমালোচকের ভাষায় “দৌলত কাজীর কল্যাণে নিছক নর আসিয়া বাংলা কাব্যের প্রধান ভূমিকা আত্মপ্রকাশ করিল।” (দ্রষ্টব্যঃ 'কাব্য-মালঞ্চ', সম্পাদনা আবদুল কাজির ও রেজাউল করিম, কলকাতা, ১৯৪৫, পৃ. ১২)। বস্তুত, দৌলত কাজীর এই নর-বিষয়ক উক্তির সঙ্গে ‘চৈতন্যচরিতামৃত' গ্রন্থের নর-বিষয়ক বক্তব্যের পার্থক্য প্রচুর। প্রকৃতপক্ষে চৈতন্যবাদে মানুষের উত্তরণ ঘটেছিল স্বর্গগঙ্গার পথে, আর সপ্তদশ শতাব্দীতে তার অবরোহণ ঘটেছে ভোগবতীর গভীরে।


দৌলত কাজীর কবিতায় অনেক সময় বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, প্রমুখের বাক্রীতি ও শব্দচর্যা মিশে আছে; যেমন এই প্রসঙ্গে পদটি স্মরণযোগ্য :

“মালিনী। কি কহব বেদন ওর। 

লোর বিনে বামহি বিধি ভেল মোর !!”


সৈয়দ আলাওল :

দৌলত কাজীর পরেই আরাকান রাজসভার উল্লেখযোগ্য কবি হলেন সৈয়দ আলাওল। তার 'সিকন্দার-নামা' ও 'সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জমাল’ কাব্যের আত্মপরিচয় অংশ থেকে জানা যায় যে, কবির জন্ম ফতেহাবাদে। কারোর মতে তা চট্টগ্রামে, আবার কারোর মতে তা ফরিদপুরে অবস্থিত, ষোড়শ শতকের অন্তিম পর্বে তাঁর জন্ম। তাঁর মৃত্যু হয় ১৬৭৩ খ্রীস্টাব্দে।


কবির পিতা ছিলেন ফতেহাবাদের শাসনকর্তা মজলিস কুতুবের অমাত্য। প্রথম যৌবনে কবি পিতার সঙ্গে জলযাত্রায় বেরিয়ে পর্তুগীজ জলদস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হন। সেই বিপর্যয়ে কবির পিতার মৃত্যু হয় এবং কবি আরাকানের হাটে দাসরূপে বিক্রীত হন। এরপর তিনি রোসাঙে এসে রাজ-অশ্বারোহী রূপে নিযুক্ত হন। অচিরেই তিনি আরাকানরাজের প্রধানমন্ত্রী মাগন ঠাকুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মাগনের মৃত্যুর পর তিনি হন রাজমন্ত্রী সোলেমানের আশ্রিত। তারপরে প্রধান সেনাপতি সৈয়দ মহম্মদের অনুগ্রহ-নির্ভর। এই সময় শা-সুজার সঙ্গে বন্ধুত্বের অপরাধে কবির জীবনে দ্বিতীয়বার ভাগ্য-বিপর্যয় ঘটে। রাজরোষে বিনা অপরাধে বন্দী হন। এই ঘটনার কয়েক বছর পর তিনি কাজী মামুদ শাহের আশ্রয়লাভ করেন। আলাওল তাঁর 'সিকান্দারনামা' কাব্যে এই ভাগ্যবিপর্যয়ের উল্লেখ করেছেন :

“শাহ সুজা রোসাঙ্গে আইলা দৈবগতি।

হতবুদ্ধি পাত্র সবে দিল হতমতি ৷৷ 

আপনার দোষ হোস্তে পাইলা প্রমাদ।

এক পাপী আম্মরেহ দিল মিথ্যাবাদ !”


সৈয়দ আলাওলের গ্রন্থসমূহ:

সৈয়দ আলাওলের গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য আওধী ভাষায় মুহম্মদ জায়সীর রচিত ‘পদুমাবৎ’ গ্রন্থের অনুবাদ ‘পদ্মাবতী’ (১৬৫১ খ্রীঃ), আরব্য রজনীর বৃত্তান্ত ‘সয়ফুল মুল্‌ল্ক-বদিউজ্জমাল’ (১৫৫৯-৬৯ খ্ৰীঃ), হপ্ত-পয়কর (১৬৬০ খ্রীঃ), নিজামী-গঞ্জা বীর রচনার তর্জমা ‘সিকান্দার-নামা’, ধর্ম-উপদেশ সম্বলিত গ্রন্থ ‘তোহফা’ (১৬৬২ খ্রীঃ)।


সৈয়দ আলাওলের প্রধান কাব্য পদ্মাবতী। রাণা ভীমসিংহের পত্নী পদ্মাবতীর জীবনকেন্দ্রিক কাব্যটির কাহিনীটিতে আলাউদ্দীন খলজীর লুব্ধ দৃষ্টি থেকে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে তাঁর জহরব্রত অবলম্বনের বিবরণ আছে। কবি সুমার্জিত সংস্কৃত অলঙ্কারে সমৃদ্ধ ভাষায় কাব্যটি রচনা করেন। কাব্যটিতে ইতিহাস অপেক্ষা কল্পনারই প্রাধান্য। ধর্মের কোন গোড়ামী তাঁর কাব্যে প্রকট হয় নি। কবি জায়সী মূলে কাব্যটিকে জীবাত্মা পরমাত্মার রূপক হিসেবেই দেখিয়েছেন। কিন্তু আলাওল এই রূপক রীতি গ্রহণ করেন নি। দেবলীলা নয়, পৌরাণিক জীবনকথা নয়, সত্যকার ইতিহাসের বাস্তব-মানবজীবন কথা এই কাব্যের অবলম্বন। পদ্মাবতী প্রকৃতই রোমান্টিক ঐতিহাসিক কাব্য।


কবি সৈয়দ আলাওল ছিলেন সুফী মতের উপাসক। আদর্শ সুফী ভাবুকের মত তিনি ছিলেন প্রেম-সত্যের চরম মূল্যে বিশ্বাসী। 'পদ্মাবতী' কাব্যের সূচনাতেই কবি প্রেমের বিজয়মহিমা ঘোষণা করেছেন

“প্রেম বিনে ভাব নাহি ভাব বিনে রস। 

ত্রিভুবনে যত দেখ প্রেম হস্তে বশ ৷৷

প্রেমমূল ত্রিভুবন যত চরাচর।

প্রেমতুল্য বস্তু নাই পৃথিবী ভিতর ৷৷”


কেবল প্রেমতত্ত্ব প্রচারে নয় প্রেমিক-প্রেমিকার চরিত্র চিত্রণেও গভীর প্রেমাদর্শ নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবি জায়সীর গ্রন্থ থেকে অনুবাদ করলেও তার মধ্যে মৌলিক কল্পনার দীপ্তি লক্ষিত হয় নিম্নোক্ত পদে

“পুপ সুগন্ধ করহি সব আসা। 

মকু হিরিকাই লেই হাম বাসা ॥” (জায়সী)

“সো নাসা পরশ হেতু যত পুষ্পগণ।

সৌরভ হৈতে কৈল বিধি আরাধন ।।” (আলাওল)


জায়সীর অভীপ্সিত অর্থ, ফুল এই আশায় গন্ধ ছড়ায় যে পদ্মাবতী নাসার কাছে নিয়ে তার ঘ্রাণ গ্রহণ করবে। অন্যদিকে আলাওলের আরোপিত অর্থনাসার স্পর্শ পাবার বাসনায় যতো ফুল সৌরভে আকীর্ণ হবার আরাধনা করল। আলাওলের চিত্রিত পদ্মিনীর সৌন্দর্য বর্ণনা

“স্বর্গ হইতে আসিতে যাইতে মনোরথ।

সৃজিল অলকারণ্যে স্বর্ণ সিঁথি-পথ ॥ 

সেই পথে বাটপাড় বৈসে অনুদিন। 

কুটিল অলকাপথে ব্যক্ত রক্ত-চিন্ ॥ 

কিবা কবরীর মাঝে স্বর্ণ রেখাকার। 

যমুনার মাঝে যেন সুরেশ্বরী ধার ॥”


এই অংশে যেমন আলাউদ্দীনের পদ্মিনী-হরণের দস্যুতা বর্ণনায় নাটকীয়তা আছে, তেমনি যমুনা বা সুরেশ্বরীর (গঙ্গা) উল্লেখে হিন্দু ঐতিহ্যের প্রতি কবির অনুরক্তির পরিচয় নিহিত আছে। তবে শেষ পর্যন্ত তা হিন্দু-মুসলমানের মিলনে এক অপূর্ব গাথাকাব্যে পরিণত হয়েছে।


কবির ‘সয়ফুলমুলুক-বদিউজ্জমাল’ ইসলামী রোমান্টিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত। এই কাব্যের নায়ক সয়ফুলমুলুক ও নায়িকা বদিউজ্জমালের প্রেমকাহিনীই এর মূল উপজীব্য। সেই প্রেম মর্ত্য প্রেমেরই এক পবিত্র আদর্শ থেকে গৃহীত। তাছাড়া কবির ব্যক্তিগত জীবনের মর্মন্তুদ কাহিনী কাব্যটির সঙ্গে জড়িত।


‘হপ্তপষ্কর’ গ্রন্থে আরবের রাজকুমার বাহ্রামের যুদ্ধজয় ও সপ্ত পত্নীর গল্প বর্ণিত হয়েছে।

কবি আলাওল একাধিক গ্রন্থ রচনা করলেও ‘পদ্মাবতী’র তুলনায় সেগুলি দুর্বলতর। তবু বলা যায়, প্রতিটি গ্রন্থই কবির রচনানৈপুণ্যে অসাধারণ গৌরব অর্জন করেছে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আলাওল অদ্বিতীয় স্রষ্টা না হলেও হয়েছেন জাতির নব চেতনার প্রভাত তারকা।

আরাকান রাজ্যসভার কবি দৌলত কাজী ও আলাওলের কবিপ্রতিভার মূল বৈশিষ্ট্য এই যে, তাঁদের রচনায় এই ধূলি-ধূসরিত ধরণীর রক্ত-মাংসের মানুষের প্রেম ভালোবাসা দুঃখ-সুখ, আশা-আকাঙ্ক্ষার কাহিনী ব্যক্ত হয়েছে। এই মানবিকতা সে যুগের সাহিত্যে নেই বললেই চলে। আর এই কারণেই তাঁদের রচনা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য রত্ন বলে স্বীকৃত হয়েছে।