‘সৌন্দর্য যেমন আমাদিগকে ক্রমে ক্রমে শোভনতার দিকে সংযমের দিকে আকর্ষণ করিতেছে, সংযমও তেমনি আমাদের ভোগের গভীরতাকে বাড়াইয়া দিতেছে।–আলোচনা করো।

'সৌন্দর্যকে ভোগ করিতে গেলে এই সংযমের প্রয়োজন।

প্রাণীতত্ত্বের পরিভাষার মানুষকে বলা হয় rational animal—অর্থাৎ যুক্তিশক্তিসমন্বিত পশু বা সুসভ্য পশু। দার্শনিক স্পিনোজা (Benedict Spinoza, ১৬৩২–১৬৭৭) আবার এর উপরেও মানুষের গায়ে আরও একটি লেবেল এঁটে দিয়ে বলেছেন, man is a social animal—মানুষ সামাজিক পশু। তা সে যাই হোক, এই এক-দু-কথার পরিচয়ের মধ্যেই কিন্তু মানুষের লক্ষ লক্ষ বছরের জীবনেতিহাস আত্মগোপন করে আছে। খুব সংক্ষেপে এই ইতিহাসের সার কথাটুকু হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ বছর আগে মানুষ এই গ্রহে পশু রূপেই জন্মগ্রহণ করেছিল। প্রবৃত্তি, চরিত্র, বোধ, ইন্দ্রিয়চেতনা, খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচার- সবকিছুতেই পশু । লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই পশু-জীবনই সে যাপন করছিল। তারপর হঠাৎ ইতিহাসের অপর কোন্ এক ঊষালগ্নে মানুষের জীবকোষে কী তার স্নায়ুকোষে কী একটা বৈপ্লবিক পরিব্যপ্তি বা মিউটেশান ঘটে গেল, মানুষের মস্তিষ্কে জন্ম নিল যুক্তিচেতনা—এক সত্তা থেকে উন্নততর আর-এক সত্তায় মানুষের উত্তরণ শুরু হল। শুরু হল তার যুক্তি-সচেতন গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন সাধনা—যে সাধনায় মানুষ আজো পর্যন্ত ব্যাপৃত রয়েছে।


মানুষের এই মনুষ্যত্ব সাধনার দীর্ঘ ইতিবৃত্ত অবশ্য ইতিহাসের অসংখ্য পাতায় বিচিত্ররূপে দলিলবদ্ধ হয়ে আছে। তার সংক্ষিপ্ততম উল্লেখও এই আলোচনায় সম্ভব নয়। তবে এই উত্তরণের প্রথম পর্বটা বোধ করি আমরা নিজেরাও কিছুটা অনুমান করে নিতে পারি। পশুত্বকে অতিক্রম করে গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন। অতএব পশুর মতো কেবলমাত্র নিজ প্রবৃত্তির তাড়নাতেই চালিত হয়ে এমন কিছু করা চলবে না, যাতে গোষ্ঠীকল্যাণ ব্যাহত হতে পারে। যে-অসংযত প্রবৃত্তি গোষ্ঠীকল্যাণকে ব্যাহত করে তা অসংগত, অশোভন। আর যে সংযম গোষ্ঠী-কল্যাণকে পুষ্ট করে তাইতেই সাফল্যের আনন্দ, একের নয়, সকলের। সুতরাং সেটাই যেহেতু গোষ্ঠী-কল্যাণের প্রকৃত পথ, সেটাই সত্য, সেটাই সুন্দর।


অর্থাৎ মানুষের এই নবলব্ধ চেতনায় প্রায় একই সঙ্গে ধরা দিয়েছিল বা গড়ে উঠেছিল—সংযমের বোধ, কল্যাণের বোধ, সংগতি ও শোভনতার বোধ, আনন্দের বোধ ; এবং সত্যেরও বোধ। এবং সর্বোপরি সেই বোধ যে এগুলি প্রত্যেকটিই প্রত্যেকের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গাঙ্গী সম্পর্কে শৃঙ্খলাবদ্ধ। এই শৃঙ্খলার একটি পাব ছিন্ন বা ভিন্ন হলেই অপর পাবগুলিও পঙ্গু হয়। সভ্য জীবনের আদর্শটাও বেঢপ এবং বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে। সংযম শিথিল হলে শোভনতা ক্ষুণ্ন হয়, শোভনতা ক্ষুণ্ণ হলে কল্যাণের বিঘ্ন। আর বিঘ্নিত কল্যাণ আনন্দকে আবিল করে, সত্যের জ্যোতির্ময় পথকেও রুদ্ধ করে।


আমাদের প্রাচীন সমাজপতিরা, যাঁরা কখনও কখনও প্রজাপতি রূপেও অভিহিত হয়েছন, তাঁরা নিশ্চয়ই মানুষের এই পশুসত্তা থেকে উন্নততর সত্তায় উত্তরণের আন্তর সত্যটা যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। এই কারণেই চতুবর্গ ফল লাভের উদ্দেশ্যে আদর্শ মনুষ্য-জীবন সাধনার জন্য তাঁরা যে চতুরাশ্রমের বিধান দিয়েছেন, তার প্রথম আশ্রমের নামই হচ্ছে ব্রহ্মচর্য অর্থাৎ কঠার সংযম ও নিবৃত্তি মার্গের সাধনা। কেননা তাঁরা বুঝেছিলেন, পশুত্ব থেকে মনুষ্য-সত্তায় উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে জৈববৃত্তিগুলিকে সংযত করার অনুশীলন। এটাই গোষ্ঠীবদ্ধ মনুষত্বের প্রথম ভিত। এই ভিটাকে শক্ত করে না গাঁথলে পরবর্তীকালীন জীবনের সবকিছুরই গাঁথুনি নড়বড়ে হয়ে থাকবে।


কিন্তু এই ভি-গাঁথার উদ্দেশ্যটাকে যারা তলিয়ে বুঝতে প্রস্তুত নন; তাদের কেউ কেউ এই সংযমের সাধনাটাকে অনাবশ্যক মনে করেন। কার্যত এদের এই মনোভাবটা অবশ্যই তাদের পূর্বতন পশু-সত্তারই স্মারক। আবার সংযমের সাধনায় মানুষের স্বাভাবিক ভোগেচ্ছাটাকেও প্রথম প্রথম খানিকটা রীতিমতো কঠোরতার সঙ্গেই নিবৃত্ত করতে হয় বলে, একথাও কেউ কেউ মনে করে থাকেন যে, এই অনাবশ্যক নিবৃত্তি সাধনার দ্বারা মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তিগুলিকেই অবদমিত করে দেওয়া হচ্ছে, বিশেষত তার সৌন্দর্যভোগের ইচ্ছাটাকে। এদের এই মনে করাটা, রবীন্দ্রনাথের মতে, কৃষিকর্মের সেই আনাড়ি দর্শকটির মতো।


কৃষক তীক্ষ্ণ লাঙলের ফলা দিয়ে মাটিটাকে ফালা ফালা করে চিরছে, নিড়েন দিয়ে মাটির ঢেলাগুলি ভাঙছে, কচি-কচি আগাছার জঙ্গলগুলি নির্মম হাতে টেনে-টেনে ছিঁড়ছে—এসব দেশে এই আনাড়ি ব্যক্তিটির মনে হতেই পারে, আহা বেচারা জমিটার উপর কী কালাপাহাড়ি কাণ্ডটাই না চলছে। কিন্তু জাত-চাষি জানে এই হচ্ছে চাষের একমাত্র নিয়ম। ভালো ফলনের জন্য আগে জমিটাকে ভালোভাবে গড়ে-পিঠে নিতে হয়। ফসলের শত্রু যে আগাছাগুলি আপনা-আপনই গজিয়ে উঠতে পারে, সেগুলিকেও সকলের আগে নির্মূল করে ফেলা চাই। মনের জমিটার ব্যাপারও ঠিক এই মাটির জমিটারই মতো। এখানে কৃষ্টির চাষটা ভালো করে করতে হলে জমিটাকে সর্বাগ্রে গড়ে-পিটে নেওয়া আবশ্যক। ব্রহ্মচর্য আশ্রমের সংযম ও নিবৃত্তি সাধনা হচ্ছে সেই জমি তৈরির কাজ—মন-জমি তৈরির। অর্থাৎ সোজা কথায় সেই ভিত্ তৈরির কাজ।


তবে এ-প্রসঙ্গে একটা ব্যাপারে যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষেরই বিশেষরূপে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে, রবীন্দ্রনাথ সেকথাও যথাস্থানে আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এটা মানুষের সেই পূর্বতন দুর্মর পশুসত্তারই ছদ্মবেশ কী না কে জানে—মানুষের চরিত্রের মধ্যেই একটা দুটো বিষম দুর্বিপাকের বীজ বোধ হয় রয়ে গিয়েছে। পথ আর লক্ষ্য, উপায় (means) ও উদ্দেশ্য (ends), গৌণ এবং মুখ্য—এদের মৌল প্রভেদের গুরুত্বটা মানুষ যেন প্রায়ই ঠিকমতো উপলব্ধি করতে পারে না। তার উপরে প্রায় বিষফোঁড়ার মতো মানুষের চরিত্রের মধ্যে আছে বাড়াবাড়ি করার একটা সহজাত ঝোঁক। ফলে, এই সংকল্প বিপর্যয়টা যখন কোনো মানুষ বা মানবগোষ্ঠীর মধ্য আত্মপ্রকাশ করে, তখন প্রায় অ-ব্যতিক্রমেই দেখা যায়, সেটা একটা চূড়ান্ত বিকারের চেহারা নিয়ে মানুষের কাঁধে চেপে বসেছে। যখন লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যটাকে ভুলে পথ আর উপায়টাকেই পরম বলে গ্রহণ করা হয়, তখন এক রকমের বিকার; আবার যখন উপায়টাকে গৌণ করে উদ্দেশ্য আর লক্ষ্যটাকেই একমাত্র লভ্য বলে গণ্য করা হয়, তখন আবার অপর এক প্রকারের বিকার। সংযম সাধনার কথা হচ্ছিল; কাজেই মানব-চরিত্রের এই দ্বিবিধ বিকারের প্রকৃতিটা আমরা এই প্রসঙ্গেই সবদিক থেকে চিনে নিতে পারি। দৃষ্টান্ত হিসাবে রবীন্দ্রনাথ এই প্রসঙ্গটাই আমাদের সামনে রেখেছেন।


উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যকে ভুলে যখন পথ বা উপায়টাকেই মুখ্য করে তোলা হয়, তখন দেখা যায় এই সংযমের সাধনাটাই অনেকের কাছে একমের হয়ে উঠেছে। সাধনার পর্বে সৌন্দর্য ও আনন্দ উপভোগের ইচ্ছা সাধনাকে বিঘ্নিত করতে পারে, অতএব ভোগের ইচ্ছাটাকেই একেবারে টুটি টিপে মেরে নিশ্চিহ্ন করে দাও। কৃচ্ছসাধনা নিবৃত্তি মার্গের সহায়, সুতরাং কৃচ্ছসাধনাতেই জীবন পাত করো। সুরেলা কণ্ঠের জন্যই গলা-সাধার প্রয়োজন। তা গলা সাধতে যখন একবার শুরু করেছো, তখন সারা জীবন শুধু গলাই সেধে যাও—তাতে গান শুনিয়ে শ্রোতাকে মুগ্ধ করতে না পারো, শ্রোতা-তাড়ানো দুর্ধর্ষ কালোরোৎ তো হতে পারবে। রবীন্দ্রনাথ ঠিকই বলেছন, আসলে এসব হচ্ছে সংযমের নামে অসংযমের চূড়ান্ত। কারণ বাড়াবাড়ি ব্যাপারটাই মূলত অসংযমের।


বস্তুত এই উদ্দেশ্যহীন উপায়-সাধনার আতিশয্য শুধু ব্যক্তির জীবনেই নয়, মানুষের সামগ্রিক সমাজ জীবনেও এক-এক সময় এক ভয়ঙ্কর অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে। দেখা দিয়েছেও। শালীনতা রূপান্তরিত হয়েছে স্নবারিতে, নীতিবোধ উন্মত্ত পিউরিটানিজম এ, ধর্মবোধ ধর্মান্ধতায়। সবচেয়ে আশঙ্কাজনক হয়ে দেখা দিয়েছে আধুনিক মানুষের উদ্দেশ্যহীন ও লক্ষ্যভ্রষ্ট বিজ্ঞান সাধনা, যেটাকে এ যুগের অধিকাংশ মনস্বীই বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো বিপদ রূপে গণ্য করতে শুরু করেছেন।


উলটো পিঠের ব্যাপারটা বোধ হয় আরও ভয়ংকর। অর্থাৎ যখন উপায় ও পথের গুরুত্বকে উপেক্ষা করে শুধু উদ্দেশ্যটাকেই একমাত্র বলে বরণ করে নেওয়া হয়। বিশেষত সৌন্দর্য ও আনন্দ উপভোগের ক্ষেত্রে সেটা রীতিমত বীভৎস হয়ে ওঠে। আলোচ্য প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ সেই বিষয়টির উপরেই বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ তখন পুরো ব্যাপারটা কেবল মাত্র সংযমহীনতাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, উলটে সর্বপ্রকার সংযমের বিরুদ্ধেই সেই উদ্দেশ্যসর্বস্ব প্রবণতাটা তখন রীতিমতো কোমর-বাঁধা বিরোধিতার আকার ধারণ করে বসে। ছদ্ম বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিয়ে তখন সংযমকে বলা হয় repression, স্বতঃস্ফূর্ত হৃদয়বৃত্তির অবদমন, অতএব সংযমবাদ মুর্দাবাদ-প্রাণে যা চায় সেটা বিনা বাধায় করতে পারাটাই হচ্ছে হৃদয়চর্চার প্রকৃত স্বরূপ ও সিদ্ধি। একমাত্র তাতেই শিল্পীর প্রকৃত স্বাধীনতা, তার অশৃঙ্খলিত (অথবা উচ্ছৃঙ্খল ?) freedom of the spirit.


এই তথা-কথিত শিল্পীর স্বাধীনতা, তার freedom of the spirit-এর আওয়াজটার আসল মর্ম যে বস্তুতই কী, সেটা প্রায় হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়ার মতো স্পষ্ট চাঁছাছোলা ভাষায় আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন লেখক William Faulkner ১৯৫০-এর সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার গ্রহণ কালে তিনি যে ভাষণ দেন তাতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি ঘোষণা করেছিলেন—‘The young man or woman writing today has forgotten the problems of the human heart in conflict with itself. He must learn them again. He must teach himself the old verities and truths of the heart, the old universal truths. Until he does so, he labours under a curse. He writes not of love, but of lust. He writes not of the heart but of the glands.'


এখানে সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপক ও প্রণিধানযোগ্য বিষয় হল, অসংযত হৃদয়বৃত্তির এই যে সত্যটা হৃদয়ঙ্গম করতে পাশ্চাত্যের নোবেল পুরস্কারবিজেতা সাহিত্যিককে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল, ঠিক সেই কথাটাই রবীন্দ্রনাথ অতিশয় বিশদ করে ব্যাখ্যা করেছিলেন সেই ১৯০৬ সালে। আলোচ্য প্রসঙ্গে তিনি তাই সেই কথাটারই উপরে বেশি জোর দিয়ে বলেছেন, অসংযত হৃদয়াবেগ বা কল্পনাবৃত্তি শুধু যে কোনো সৌন্দর্যকে সৃষ্টি করতে পারে না তাই নয়, অসংযত চিত্ত যথার্থ সৌন্দর্য বা আনন্দকে জানতেই পারে না। সে ক্ষমতাই তার নেই। কারণ সংযমবোধের অভাবে তার গোটা উপলব্ধিটাই গড়ে ওঠে প্রবৃত্তি-নির্ভর হয়ে। তাই প্রবৃত্তির জৈব চরিতার্থ তাকেই সে ভুল করে সৌন্দর্যের উপভোগ বলে। মাতলামি আর লাম্পট্যই তার কাছে অপার আনন্দ উপভোগ রূপে প্রতীয়মান হয়। অবশেষে একসময় এমন উন্মত্ততাও হয়তো তার পক্ষে তেমন অসম্ভব নয় যে রোম সম্রাট নীরোর মতো ঘরের চালে আগুন লাগিয়েই সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালানোর আনন্দ পাবার জন্য সে উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে।


কিন্তু যথার্থ সৌন্দর্য ও আনন্দের উপভোগ উৎশৃঙ্খল প্রবৃত্তির আয়ত্তের বিষয় নয়। সে উপভোগের জন্য চাই সাধকের সমাহিত মনের নিবিষ্ট উপলব্ধি, চাই চিত্তের গহনে অবগাহন, চাই শুচিশুভ্র দৃষ্টি। সে দৃষ্টি সংযমের সাধনা ব্যতীত লাভ করা সম্ভব নয়। বিশ্বসৌন্দর্য আমাদের দৃষ্টির সামনেই অজস্র অযাচিত রূপে পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। কিন্তু অশুচি উতংক যেমন পৌষ্যরাজের সতী মহিষীকে দেখতে পান নি, তেমনি শুচি মনের অধিকারী না হলে আমরাও বিশ্বের সেই সৌন্দর্যকে দেখতে পাবো না। বিলাস ও ভোগের আবিল আকাঙ্ক্ষা খাঁটি সৌন্দর্যকে নিরন্তরই আমাদের উপলব্ধি থেকে আড়াল করে রাখবে।


কাজেই দেখা যাচ্ছে, নাবিল সৌন্দর্যের যথার্থ উপভোগের আকাঙ্ক্ষাই আমাদের উপলব্ধির মধ্যে যেমন একদিকে শোভনতার চেতনাকে জাগ্রত করে তেমনই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে সংযম সাধনার বোধেও। কারণ শেষ বিশ্লেষণে আমরা এই অনিবার্য সিদ্ধান্তে গিয়েই উপনীত হই যে শুধু সংযমই পারে আমাদের উপভোগের গভীরতাকে তার প্ৰাপনীয় লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে।