বাংলা সাহিত্যে চর্যাগীতি অন্তর্ভুক্তির কারণ

বাংলা সাহিত্যে চর্যাগীতি অন্তর্ভুক্তির কারণ


বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চর্যাগীতির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। এই অন্তর্ভুক্তির প্রথম কারণ, ব্যাকরণের একতা। বাংলা ভাষার প্রাচীনতম রূপ এর মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। নব্য‌ ভারতীয় আর্য ভাষার অন্তর্ভুক্ত বাংলা, হিন্দী, মৈথিলী, নেপালী, অসমীয়া, ওড়িয়া প্রভৃতি ভাষাগুলির মধ্যে একসময় ধ্বনিগত ও রূপগত ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য ছিল। আনুমানিক ১০০০ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে এই প্রাদেশিক ভাষাগুলির বিবর্তন স্পষ্ট হয়ে ওঠে : “About this‌ time, the Bengali language was fully characterised, and Oriya, was also characterised with a few special peculiarities, while Assamese remained still much closer to Old Bengali ('The History and Culture of the Indian People'. Bharatiya Vidya Bhavan, Bombay, P. 358) স্বভাবতই এইসব ভাষার পণ্ডিতেরা চর্যাগীতিকে তাঁদের ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন বলে দাবি করেছেন।


চর্যার ভাষা-বিভেদ : চর্যাগীতি গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলা, মৈথিলী, অসমীয়া, ওড়িয়া, হিন্দী ভাষার পণ্ডিতেরা প্রত্যেকেই এই গ্রন্থকে তাঁদের নিজস্ব ভাষার প্রাচীনতম গ্রন্থ বলে দাবি করেন।


এই দাবি একেবারে অযৌক্তিক ছিল না। কারণ একই মাগধী অপভ্রংশ ভাষা থেকে বাংলা-মৈথিলী অসমীয়া-ওড়িয়া-হিন্দী প্রভৃতি নব্য ভারতীয় ভাষাগুলির উদ্ভব হয়েছিল। ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত বলেছিলেন : “চর্যাপদের ভিতরে প্রতিফলিত হইয়াছে যে বাংলাদেশ তাহা নিম্ন-ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিম পার হইতে আরম্ভ করিয়া উড়িষ্যার কিয়দংশ, বর্তমান বিহারের কিয়দংশ এবং কামরূপ বা বর্তমান আসামের কিয়দংশ লইয়া একটি বৃহৎ ভূভাগ”। সম্ভবত সেইজন্যই পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন এবং কাশীপ্রসাদ জয়সোয়াল চর্যাগীতির কবিদের বিহার অঞ্চলের অধিবাসী স্থির করে এর ভাষাকে হিন্দীভাষার পূর্বরূপ বলে দাবি করেছেন।

ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ODBL এবং ‘Languages and Litera tures of Modern India' গ্রন্থদ্বয়ে আলোচনা করে দেখিয়েছেন, চর্যার ভাষায় আছে অনেক প্রাচীন বাংলার ভাষাতাত্ত্বিক নমুনা।


প্রাচীন বাংলার ভাষাতাত্ত্বিক নমুনা

যেমন—(১) আধুনিক বাংলাভাষার মত চর্যার ভাষায় স্বরবর্ণের হ্রস্ব-দীর্ঘ রূপের নিয়ম মানা হত না—পঞ্চ-পাঞ্চ, উজু-উজু, হোহি-হোহী, বোহি-বোহী প্রভৃতি। (২) 'য়' শ্রুতি ও ‘ব’-শ্রুতির ব্যবহার ছিল—যাঅ, জাগা, মাগঅ ইত্যাদি। (৩) সেকালের বাংলা ভাষাতেও ‘অ’-কারের 'ও' কার প্রবণতা দেখা যেত তোড়িঅ, মোড্ডিউ প্রভৃতি। (৪) এযুগের বাংলা ভাষার মত স্বরবর্ণের প্রকৃত উচ্চারণ রক্ষিত হয় নি। (৫) খাঁটি বাংলা সন্ধির প্রয়োগ দেখা যায় চোরে = চোর + এ, ঘড়ুলী ঘর+ উলি। অথবা স্বরবর্ণ = চ + ছ = চ্ছ ব্যবহার আছে; যেমন—চ্ছিনালী, চ্ছাড়ী ইত্যাদি। (৬) 'ত'/'ট' বর্গের বর্ণ বাংলাভাষায় ‘ড়’ ও ‘ঢ়’ হয়েছে, চর্যাতেও তার দৃষ্টান্ত আছে— কেডুআল—কেড়ুয়াল, দৃঢ়—দিঢ় প্রভৃতি। (৭) বাংলা ভাষায় জ (য), ন (ণ), ব (অস্তঃস্থ ও বর্গীয়), স (শ, য) উচ্চারণে এখন যেমন বিভিন্নতা নেই, তখনও ছিল না—মণ — মন, শবর—সবর ইত্যাদি। (৮) বহুবচন নির্দেশে বহুতু-জ্ঞাপক শব্দ, আধুনিক বাংলার মত সংখ্যাবাচক শব্দ, বিশেষণের দ্বিত্ব প্রয়োগের নিদর্শন চর্যার ভাষাতেও আছে—সঅল সমাহিঅ, পঞ্চ বি ডাল, উঁচা উঁচা পাবত প্রভৃতি। (৯) বিভক্তি চিহ্নহীন কারক প্রয়োগের নিদর্শনও আছে— ‘দৃঢ় করিঅ মহাসুহ পরিমাণ' ইত্যাদি। (১০) আধুনিক বাংলা ভাষার মত পুংলিঙ্গ থেকে স্ত্রীলিঙ্গ রূপাস্তরে 'নি’-এর প্রয়োগ দেখা যায়—শুণ্ডিনি ইত্যাদি। (১১) পদবিন্যাস রীতির (syntax) ক্ষেত্রেও পরবর্তী বাংলা ভাষার সঙ্গে চর্যার ভাষার নৈকট্য চোখে পড়ে— ‘অপন মাংসে হরিণা বৈরী’, ‘তু লো ডোম্বী হাঁউ কপালী' প্রভৃতি। (১২) সংযোগমূলক ক্রিয়াপদের ব্যবহার হয়েছে— ‘গুণিআ নিহু’, ‘ধরণ ণ জাই’ প্রভৃতি। (১৩) প্রবাদ প্রবচনের প্রয়োগেও আধুনিক ভাষায় প্রয়োগের ধারাবাহিকতা অনুভব করা যায়— ‘সুন গোহলী কিম, দুঠ বলন্দে' ('দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল’)।


চর্যায় বাংলা শব্দের প্রাধান্য চোখে পড়ে। এখানে পুঁথির সাড়ে ছেচল্লিশটি গীত এবং সংস্কৃত টীকার উদ্ধৃতি ধরে মোট শব্দ সংখ্যা হল কম বেশি ১৬৬০। শব্দগুলি তৎসম, অর্দ্ধ-তৎসম বা তদ্ভব এবং দেশী-বিদেশী এই তিন ভাগে বিভক্ত। আচার্য বিধুশেখর শাস্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী চর্যায় শব্দ সমষ্টির শতকরা হার এই-রকম সংস্কৃত ১৫%, প্রাকৃত ২৫% এবং বাংলা ৬০%। চর্যা কবিতার বহু চিত্রকল্প আধুনিক গল্পকারদের প্রেরণা যুগিয়েছে ; যেমন দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন 'চর্যাপদের হরিণী’।


দ্বিতীয় কারণ, ইতিহাসগত। হিন্দুসাম্রাজ্যের অন্তিম অবস্থায় বাংলা ভাষার ও বাঙালী জাতির বিস্তৃত পরিচয় একমাত্র এখানেই পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক অধ্যাপক রমেশচন্দ্র মজুমদার ‘History of Ancient Bengal' গ্রন্থে জানিয়েছেন 'বাংলা' সম্পর্কে উল্লেখ আছে—(১) 'মানসোল্লাস' (১১৩০ খ্রীঃ) নামক সংস্কৃতে লেখা একটি গ্রন্থে, (২) ‘প্রাকৃত-পৈঙ্গল’ (১৪০০ খ্রীঃ)- এর কিছু পঙ্ক্তিতে, (৩) কিছু প্রাচীন সংস্কৃত কবিতায়, (৪) পঞ্চম শতাব্দী এবং তার পরে প্রাপ্ত শিলালিপিতে কিছু স্থান নাম এবং ব্যক্তিনামের মধ্যে, (৫) সর্বানন্দের লেখা ‘অমরকোষ’-এর টীকায় ব্যবহৃত একাধিক শব্দগুচ্ছে এবং (৬) চর্যাপদে— “Thus the Charyapadas may be regarded, practically, as the only extant specimen of Bengali literature during the Hindu rule Bengal."


তৃতীয় কারণ, আঙ্গিকগত। চর্যার কবিতাগুলি সাধারণত দশ লাইনে রচিত। তবে একটি ৮ লাইনের, দুটি ১২ লাইনের এবং তিনটি ১৪ লাইনের পদ আছে। চর্যার কবিতা বা পদগুলির বিশেষ আঙ্গিক বা রূপগত বৈশিষ্ট্য (আট বা দশ পক্তি) পরবর্তী মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে সহজিয়া গানে, বৈষ্ণব পদে, শাক্তগীতি, বাউল সঙ্গীতেও লক্ষ্য করা যায়। বস্তুত, বাংলা কাব্যে ধর্মীয় এবং আবেগ-নির্ভর ভাব প্রকাশের প্রাথমিক রূপরীতির প্রকাশ ঘটেছে চর্যাগীতিতে : "...the main characteristic of these verses is their religious and emo tional appeal which found a fuller development in later Bengali litera ture in the Sahajiyā songs, Vaishnava padas, Sākta hymns, Bāul songs, etc. The Buddhist Charya-padas may, therefore, be regarded as the pro totypes or precursors of these later forms of literary development in Bengali." (The History and Culture of the Indian People, Ibid. P. 359). চর্যার কবিতায় 'রাগ'-এর উল্লেখ এবং পদের শেষে ভণিতায় কবির নাম-পরিচয়ের রীতিটিও পরবর্তী মধ্যযুগের বাংলা কাব্যের এক অন্যতম সাধারণ বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। বস্তুতঃ সম্ভবতঃ এখান থেকেই কবিতা এবং সঙ্গীতের অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক বা কবিতার মধ্য দিয়ে গানের ভাব সঞ্চারের সূচনা হয়।


চতুর্থ কারণ, লিরিকপ্রাণতা ও মাতৃভাষার ব্যবহার। লিরিকের সহজ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবপ্রকাশের সঙ্গে মাতৃভাষা অনুশীলনের এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। (এ সম্পর্কে বিশেষ আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য : “মাতৃভাষা ও লিরিকের জন্ম’’, ‘বাংলা সাহিত্যের রেখালেখ্য’, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ১০-১৯)। চর্যার কবিরা অনেকেই ছিলেন বাঙালী। বাঙালী মনে গীতিপ্রাণতার ভাবটি মজ্জাগত। চর্যার কবিরাও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। তাই তাঁরা বৌদ্ধ তান্ত্রিক সহজিয়া সিদ্ধাচার্য হলেও আপন স্বভাব ও জাতীয় বৈশিষ্ট্যকে অতিক্রম করতে পারেন নি। সিদ্ধাচার্য কবিরা সকলেই বাঙালী ছিলেন না। কিন্তু বাঙালী কবি রূপে কাহ্নপাদ এবং ভুসুকুপাদ-এর গুরুত্ব যেন বেশি অনুভব করা যায়; যেমন ‘চর্যাচর্য বিনিশ্চয়' সংকলনে দেখা যায় ৫০টি পদ আছে। তার মধ্যে ১৬ জন কবির ১টি করে পদ আছে, ৩ জন কবির দুটি করে পদ আছে। ১ জনের আছে তিনটি পদ, আর একজনের আছে চারটি। পক্ষান্তরে কাহ্নপাদের আছে তেরোটি পদ এবং ভুসুকুপাদ-এ আছে আটটি পদ। সুতরাং সংখ্যাধিক্যে এই দুই কবির প্রাধান্য সহজেই চোখে পড়ে। চর্যা কবিতাগুলির মধ্যে প্রকৃতি-পরিবেশের চিত্রটিও সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের পটে আঁকা ব’লে মনে হয়। নদীমাতৃক বাংলাদেশের জন্য চর্যার কবিতাগুলির মধ্যে নদীর চিত্রকল্প বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। প্রধান প্রধান দার্শনিক তত্ত্বগুলি এবং গুহ্যসাধন প্রণালীর অনেক ইঙ্গিত সাগর-নদী-খাল-বিলের রূপকে এসেছে; যেমন—

“ভবনঈ গহণ গম্ভীর বেগে বাহী। 

দুআস্তে চিখিল মাঝে ন থাহী॥”


অথবা— “গঙ্গা যমুনা মাঝেরে বহঈ নাঈ” বা “সোণে ভরিথি করুণা নাবি” ইত্যাদি পক্তির কথা উল্লেখ করা যায়। সমাজচিত্রের মধ্যেও বাংলাদেশের আঞ্চলিক বিরোধের চিত্র আছে— “অদয় বঙ্গালে ক্লেশ লুড়িউ”।


গীতিপ্রবণ কবিমন মুক্তির সন্ধানেই যেন অপরিণত জেনেও মাতৃভাষা বাংলাকে আশ্রয় করেছিল। এই মুক্তির মধ্যে যেমন উচ্চবর্ণের শাস্ত্রসর্বস্বতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল, তেমনি হয়ত উচ্চবর্ণের ব্যবহৃত ভাষা পরিত্যাগের বাসনাও ছিল। তাই কাব্যের উপকরণ লোকায়ত জীবন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু অসংগঠিত ভাষার সাহায্যে ভাবপ্রকাশ সহজ নয় বুঝে সুরেলা বাক্রীতি ও সংগীতকলার সাহায্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। “দশম শতাব্দীর সমকালে বা কিছু পূর্বে জৈন কবি স্বয়ম্ভূ পুষ্পদন্ত প্রমুখের কাব্যনির্মাণের রীতি-বিধির সঙ্গে হয়ত চর্যাকারদের পরিচয় ঘটেছিল। কবি ছান্দসিক স্বয়ম্ভু কীভাবে কবিতা লিখলে তা 'জন মণ অহিরাম হোই’ ('জন মন অভিরাম') হবে তা আলোচনা করেছিলেন। সেই আলোচনায় পদ্ধতিকা (পয়ারের পূর্বরূপ) ছন্দের কথা, অন্ত্যমিলের কথা, কড়বক-যমক-ঘত্তা প্রভৃতির কথা আছে” (দ্রষ্টব্য : “অস্ত্যমিলের জন্ম’’, ‘বাংলা সাহিত্যের রেখালেখ্য’, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ২৪-২৫)। খুব সম্ভবত, চর্যার সব কবিতাই প্রথমে লিপিবদ্ধ হয়নি। সংকলনে স্থান পাওয়ার পূর্বে তা হয়ত গুরু-শিষ্য পরম্পরাক্রমে মুখে মুখে স্মৃতিবাহিত হয়েছিল। সেক্ষেত্রে গীতি এবং কবিতা—সুর-তাল রাগমিশ্র সঙ্গীত এবং ছন্দোবদ্ধ (পড়ি, ত্রিপদী, পাদাকুলক প্রভৃতি ছন্দ চর্যায় আছে) কবিতার এই যুগ্মরূপটি সাধক-কবির ভাব ও কল্পনা প্রকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হয়ে। উঠেছিল।


চর্যার কবি: চর্যার কবিরা ছিলেন বৌদ্ধ সহজিয়া সাধক বা সিদ্ধাচার্য। এঁদের সংখ্যা ২৪ জন। কারও কারও মতে ২৩ জন। অধ্যাপক সুখময় মুখোপাধ্যায় চর্যাগীতির তিব্বতী অনুবাদের উৎস ধরে এর কবিদের সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করেছেন একটি অপ্রকাশিত প্রবন্ধে। তাঁর মতে, সিদ্ধগুরুর তালিকা সংখ্যা ১৪ জন। সরহপাদ থেকে এর শুরু, শেষ হয়েছে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান পর্যন্ত, যিনি অন্তত ১১ শতকের প্রথমার্দ্ধ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। এই তালিকার ভিত্তিতে কাহ্নপা হয়েছেন অষ্টম গুরু, লুই পা তৃতীয় গুরু এবং সরহপা ছিলেন প্রথম গুরু। এঁদের আবির্ভাব কাল যথাক্রমে ৮৫০-৯০০ খ্রীঃ, ৭৫০ এবং ৭০০ খ্রীস্টাব্দ। এই গুরু-শিষ্য পরম্পরার ঐতিহ্য অনুসরণ করে তাঁর মনে হয়েছে লুই পা’র খ্যাতি শান্তরক্ষিতের পূর্বেই ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি ছিলেন কায়স্থ এবং ধর্মপালের সভায় স্বীকৃত। কাহ্নপা ছিলেন দেবপালের সময় সোমপুর বিহারের পণ্ডিত-ভিক্ষু। সেইজন্য তাঁর অভিমত হল, চারটি পদের রচয়িতা সরহপাদ তিব্বতী উল্লেখের তথ্য অনুযায়ী অষ্টম শতকে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর এই অভিমত অনুযায়ী ড. শহীদুল্লাহের কথা, খ্রীস্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতকে চর্যার প্রাচীনতম কালসীমা সমর্থিত হয়। পক্ষান্তরে, পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন চর্যাপদের আরও তিনজন নতুন কবির উল্লেখ করেছেন, যাঁরা সম্ভবত চর্যাচর্য বিনিশ্চয়ের মধ্যে উল্লেখিত পরবর্তী পর্যায়ের কবি হতে পারেন।