“মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে মুকুন্দরাম বাস্তবতার প্রবর্তক নহেন, কিন্তু তাহার কাব্যে ইহার শ্রেষ্ঠ সাবলীলতম প্ৰকাশ।” প্রসঙ্গ ও দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে মন্তব্যটির সমর্থন অথবা খণ্ডন করো।

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে বাস্তবতা

চণ্ডীমঙ্গল কাব্য তথা অভয়ামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর আবির্ভাব ঘটে ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে। চৈতন্যদেবের প্রভাব তখন বহু-ব্যাপ্ত, বৈষ্ণব কবিতার তখন ভরা জোয়ার— এই পটভূমিকায় এলেন মুকুন্দ চক্রবর্তী। মনে হয়, তিনি বৈষ্ণব ভাবধারায় নিত এবং চৈতন্যদেবের প্রতি ভক্তিমান হ'লেও নৈষ্ঠিক গৌড়ীয় বৈষ্ণব ছিলেন না। তাই তিনি বৈষ্ণব পদ রচনায় আগ্রহ বোধ করলেন না, স্বীয় প্রতিভার তাগিদে তিনি মহাকাব্যোপম মঙ্গলকাব্য ধারার অনুগামী হ'লেন। অবশ্য তিনি আদৌ বৈষ্ণব না হয়ে থাকতে পারেন।


চণ্ডীমঙ্গল কাব্য কবি মুকুন্দের কোনো মৌলিক সৃষ্টি নয়, এমন কি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের যে বাস্তবতার জন্য কবির জয় ঘোষিত হয়ে থাকে, সেই সমস্ত উপাদানও কবির নিজস্ব নয়, কিন্তু যে-ভাবে তিনি ঐ সমস্ত উপকরণকে কাজে লাগিয়ে বস্তুসঞ্চয়কে বাস্তব-রসে পরিণত করেছেন, তাতেই কবির কৃতিত্ব যথোচিত সমুন্নতি লাভ করেছে। কবি মুকুন্দের সমকালেই সম্ভবত আবির্ভূত হয়েছিলেন চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অপর কবি দ্বিজ মাধব দ্বিজ মাধবের কাব্যে ঘটনার সমাবেশে অধিকতর বাস্তব উপাদান সমাহহৃত হয়েছে। যেমন—কবিকঙ্কণের কাব্যে কালকেতু ফুল্লরার বিবাহে ঘটক নিয়োজন, ব্রাহ্মণ পুরোহিতের দ্বারা শাস্ত্রীয় আচারাদির অনুষ্ঠান, বার্ধক্যে কালকেতুর বৃদ্ধ পিতামাতার কাশীবাস ইত্যাদি স্থলে দ্বিজ মাধবে ধর্মকেতু কর্তৃক বিবাহের প্রস্তাব উত্থাপন, বিবাহ উপলক্ষে সমবেত ব্যাধ রমণীদের গাত্রগন্ধের উল্লেখ এবং শিকারে গিয়ে ধর্মকেতুর সিংহের আক্রমণে মৃত্যুবরণ প্রভৃতি ঘটনা অধিকতর বাস্তব বলে মনে হয়। অতএব আভিধানিক অর্থে দ্বিজ মাধবে বাস্তববোধ প্রবলতর বলে মনে হলেও মুকুশে বাস্তবতা সাহিত্যগুণে বিভূষিত হয়ে দেশকালোত্তীর্ণ হ’বার সুযোগ পেয়েছে। কবিকঙ্কণ ব্যাধজীবনের সুখ-দুঃখময় সংসারের দারিদ্র্য এবং ঘাত-প্রতিঘাতের নিতান্ত বিশ্বাসযোগ্য বাস্তব জীবনবসের পরিবেশনে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। মনীষী রমেশচন্দ্র দত্ত কবিকঙ্কণ কাব্য বিশ্লেষণ ক'রে তার এই বিশেষ গুণটির প্রতিই সর্বাধিক মনোযোগী হয়েছে “Its most remark able feature is its intense reality. Many of the incidents are superhuman miraculous but the thoughts and feelings and sayings of his men and women are perfectly natural, recorded with a fidelity which has no parallel in the whole range of Bengali literature."


মুকুন্দ চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্য বিশ্লেষণ করে তাতে কবি বাস্তবরস সৃষ্টিতে কতখানি সার্থকতা অর্জন করেছেন, সে বিষয়ে আলোচনার পূর্বে ব'লে নেওয়া প্রয়োজন যে, ব্যক্তিগত জীবনে অভিজ্ঞতার আলোকেই তিনি অধিকাংশ বাস্তবচিত্র অঙ্কন করেছেন এবং তাতে তার সাফল্যও প্রশ্নাতীত। কিন্তু যে জগৎ তাঁর অপরিচিত, সেখানে বাস্তবচিত্র ততটা বিশ্বাস্যরূপে উপস্থাপিত হয়নি।


মুকুন্দকবি চণ্ডীমঙ্গল কাব্য রচনা করতে গিয়ে প্রথমেই রচনা করলেন 'গ্রন্থোৎপত্তির কারণ' বা 'কবিত্বলাভের ইতিহাস – সে ধরনের রচনা এর আগে আর আমরা পাইনি। এখানে তিনি ইতিহাসকে টেনে এনেছেন কয়েকটি বাস্তব ঘটনার ইঙ্গিতে। মানসিংহ যখন বাংলা বিহার-উড়িষ্যার সুবেদার, তখন সেলিমাবাজ শহরে ডিহিদার ছিলেন মামুদ সরীফ। তখন ঐ অঞ্চলে তিনি যে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিলেন, তার একটি অসাধারণ বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে এই ইতিহাসে।


ডিহিদারের অত্যাচারে কারো পক্ষে যেন আর স্বগৃহে থাকাও সম্ভবপর হয়ে উঠছে না, অনেকেই পালিয়ে আত্মরক্ষা করতে চাইছে, কিন্তু—

'জান্দার প্রতি নাছে    প্রজারা পালায় পাছে

দুয়ার চাপিয়া দেই থানা।

প্ৰজা হৈয়া ব্যাকুলি    বেচে ঘর-কুঠালি

টাকাকের দ্রব্য দশ আনা।।'


এই অবস্থায়ও কবি মুকুন্দ এক রাত্রে আত্মজন সহ গৃহত্যাগ করলেন। পথে দুঃখ-কষ্ট যথেষ্টই হ'ল, এমন কি অবস্থা এমন—

'তৈল বিনা কৈলু স্নান    করিলু উদক পান

শিশু কান্দে ওদনের তরে।'

এই অবস্থায় কবি মুকুন্দ আরড়ায় এক ভূম্যাধিকারীর আশ্রয় পেলেন। তাঁর এই বর্ণনার মধ্যে তৎকালীন বাস্তব অবস্থার একটি বিশ্বস্ত চিত্র পাওয়া যায়।


শুধু চিত্রায়ণে নয়, মানুষের মনোভাব রূপায়ণেও কবি অসাধারণ বাস্তবতার পরিচয় দিয়েছেন। পিতৃগৃহে সতী যখন বলেন—

'পর্বত কন্দরে বৈসি    নাহি পাট পড়শী

সীমন্তে সিন্দুর দিতে সখী।'

তখন মনে হয়, দীর্ঘকাল স্বামিগৃহবাসিনী কন্যাটির এর চেয়ে বড় সাধ আর কী-ই বা থাকতে পারে।


পরবর্তী পর্যায়ে পার্বতী উমার বিবাহ প্রসঙ্গ যে সকল আচার-আচরণের কথা কবি উল্লেখ করেছেন তার মধ্যেও আমরা তৎকালিক বাস্তব ঘটনার প্রতিফলন লক্ষ্য করে থাকি। উমার বিবাহের পর শিব ঘরজামাই হ'য়ে রইলেন এবং তার ফলে মেনকার মনোভাবের যে পরিচয় পাওয়া যায় ও মায়ে-ঝিয়ে ঝগড়ার মধ্য দিয়ে যে সমাজ-জীবনের একটি বাস্তব চিত্র উদ্ঘাটিত হয়েছে, তা একালেও নিম্নমধ্যবিত্ত গৃহস্থ ঘরে দুর্লভ নয়। সেকালের সমাজের একটি যথার্থ চিত্রই আমরা এখানে দেখতে পাই। বস্তুত হরগৌরীর হিমালয়ে জীবনযাত্রা এবং কৈলাসের। জীবনযাত্রার মধ্যে বাস্তব অবস্থার একান্ত বিশ্বস্ত রূপটিকেই খুঁজে পাওয়া যায়। এই চিত্রে আদিদেবও জগন্মাতার দেবত্ব হয়তো ক্ষুণ্ন হয়েছে, কিন্তু সমসাময়িক যুগের বাঙালী নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে কোনো ঐতিহাসিকের পক্ষেও এর চেয়ে বাস্তব ও নিখুঁত চিত্র অঙ্কন করা সম্ভব হ’তো কিনা সন্দেহ। মেনকা ও গৌরীর কলহ, শিবের ভিক্ষা, শিব ও গৌরীর কলং–এদের মধ্যে যে জীবন-রস-রসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়, তাই কবির কাব্যের বস্তুসঞ্চয়কে বাস্তবরসে পরিণত করেছে।


পরবর্তী পর্যায়ে—কালকেতুর কাহিনী। কালকেতুকে কেন্দ্র করেই সমগ্র কাহিনীটি গড়ে উঠেছে। ব্যাধসস্তান কালকেতুর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দীর্ঘ জীবনের প্রথমদিকে দারিদ্র্যালাঞ্ছিত নিম্নবিত্ত জীবনের একটি বাস্তব রূপ এবং পরের দিকে ধনগর্বিত আদর্শায়িত জীবনযাত্রার পরিচয় পাওয়া যায়। নিদয়ার গর্ভ নিদয়ার সাথে ব্যাধ-জীবনযাত্রার একটি বাস্তব চিত্র অঙ্কিত হয়েছে

'লোণ তৈল দিয়া বাড়া    গোধিকা নকুল পোড়া

হংস ডিমে তোল কিছু বড়া।

কিছু ভাজ রাই খড়া    চিঙ্গুরির তোল বড়া

সজারু করহ শিক পোড়া।।'


কালকেতুর জন্মের পর এক বৎসর বয়সের মধ্যে যে সকল আচার-অনুষ্ঠানাদি প্রতিপালিত হ’য়েছে, তা' একান্তভাবেই ঐতিহ্যসম্মত। ব্যাধসস্তান কালকেতুর

'সঙ্গে শিশুগণ ফিরে    তাড়িয়া শশারু ধরে

দুরে গেলে ছুবায় কুকুরে।

বিহঙ্গে বাঁটুলে বিন্ধে    লতাএ সাঞ্জুড়ি বান্ধে

কান্ধে ভার বীর আইসে ঘরে।।'


কালকেতুর বিবাহ প্রসঙ্গে দেনা-পাওনার যে কথা হ'ল, তাতেও ব্যাধ-জীবনের চিত্রই ফুটে উঠেছে

‘পণের নির্ণয় কৈল দ্বাদশ কাহন।

ঘটুকালি পাবে ওঝা আর দশ পণ।।

পাঁচ গা গুৱাক দিব গুড় পাঁচসের। 

ইহা দিলে আর কিছু না করিবে ফের।।'

কালকেতুর বিবাহ-বর্ণনায় উচ্চবর্ণের বিবাহের একটি বিশ্বস্ত চিত্র উপহার পাওয়া গেলেও একে ব্যাধজীবনের চিত্র বলে বিশ্বাস করা চলে না।


বিবাহের পর কালকেতু-পত্নী ফুল্লরা শাশুড়ির নির্দেশে ব্যাধজীবনোচিত আচার-আচরণের শিক্ষা লাভ করতে থাকে। কালকেতুর ভোজনাদির চিত্রও একান্ত বাস্তব

'শয়ন কুৎসিত বীরের ভোজন বিটকাল।

ছোট গ্রাস তোলে যেন তে আঁটিয়া তাল।।'


কালকেতুর বীরত্বে পরাজয় মেনে বনের পশুরা দেবী চণ্ডীর নিকট নালিশ জানাতে গিয়ে নিজেদের যে দুরবস্থার বর্ণনা দিয়েছে, তাতে মনুষ্যসমাজের বাস্তব জীবনের ছবিই প্রতিফলিত হয়েছে। লক্ষণীয়, হরগৌরীর কাহিনীতে যেমন দৈবজীবন নয়, মধ্যবিত্ত বাঙালী জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে, তেমনি পশুদের কাতর ক্রন্দনেও আর্ত মানব-কন্ঠের বেদনামথিত উক্তিই প্রতিধ্বনিত হয়েছে— পশুজীবনটি রূপক মাত্র। এদের কয়েকটি উক্তির মধ্যে যে ডিহিদার মামুদ সরীফের অত্যাচারে নির্যাতিত তালুকদার গোপীনাথ নিয়োগী এবং প্রজাদেরই কাতর ক্রন্দন ধ্বনিত হয়েছে তার কয়েকটি দৃষ্টান্ত :


ভালুকের উক্তি

'উইচারা খাই আমি নামেতে ভালুক। 

নেউগী চৌধুরী নই না করি তালুক।। 

প্রতিদিন মহাভয় বীরের তরাসে। 

মাউগ মৈল পো মৈল দুটি নাতি শ্বসে।।'

হাতির উক্তি

‘বড় নাম বড় গ্রাম বড় কলেবর। 

লুকাইতে ঠাই নাই বনের ভিতর।। 

কিবা করি কোথা যাই কোথা গেলে তরি। 

আপনার দস্ত হইল আপনার অরি।'

হরিণের উক্তি

'কেন হেন জন্ম বিধি কৈল পাপবংশে।

হরিণ ভুবনে বৈরী আপনার মাংসে।।'

ছদ্মবেশধারিণী দেবী চণ্ডীকে স্বগৃহ থেকে বিতাড়নের উদ্দেশ্যে ‘ফুল্লরার বারমাস্যায় ফুল্লরা সম্বৎসরব্যাপী তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার যে চিত্রপট উদ্ঘাটন করেছে, তাকে সমসাময়িক নিম্নবিত্ত দৈন্যদারিদ্র্য-অভাব জর্জরিত জীবনের এক অতি বাস্তব ও বিশ্বাস্য আলেখ্য রূপেই গ্রহণ করা হয়

‘ভাঙ্গা কুড়্যা ঘরখানি তালপাতার ছাওনি।। 

ভেরেন্ডার থাম ওই আছে মধ্য ঘরে।। 

প্রথম বৈশাখ মাসে নিত্য ভাঙ্গে ঝড়ে।।'

এই চিত্রের পাশাপাশি সম্পন্ন মধ্যবিত্ত গৃহের বর্ণনা

'আশ্বিনে অম্বিকাপূজা করে জগজনে।

ছাগ মেষ মহিষ দিয়া বলিদানে।।

উত্তম বসনে বেশ করয়ে বনিতা।'

এর আগে কালকেতুর আক্ষেপোক্তি

‘পড়স্যা ঘরের আষ্ট পন ধারি ঋণ।

শর ধনু বান্ধা লৈতে আস্যে অনুদিন।। 

তৈল লবণের কড়ি ধারি ছয় বুড়ি।

শ্বশুর ঘরের ধান্য ধারি দেড় আড়ি

কিরাত পাড়াতে বসি না মিলে ঊধার।

হেন বন্ধুজন নাহি যেবা সহে ভার।।'


দৈবধন লাভ ক'রে ব্যাধসস্তান কালকেতু গুজরাট বন কেটে তথায় নগর পত্তন করলো। সেই নগরকে স্বয়ম্ভর ক'রে তোলার জন্য বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, বৃত্তি এবং জীবিকার লোককেই সাদরে ঠাই ক'রে দিল। তৎকালীন গ্রাম, নগর বা অঞ্চলগুলি যে সবদিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থায় বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকত, এই চিত্র ইতিহাস-সম্মত। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে যেমন ডিহিদারের উৎপীড়ন ছিল, তেমনি আবার কোনো কোনো অঞ্চলে একটি আদর্শ সমাজব্যবস্থাও গড়ে উঠেছিল। তেমনি একটি সমাজের চিত্রও কবিকঙ্কণ উপস্থাপিত করেছেন কালকেতুর সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজ্যে। প্রজাদের মোড়ল বুলান মণ্ডলকে কালকেতু বলছে

'আমার নগর বৈস    যত ইচ্ছা চাষ চষ

তিন সন বহি দিহ কর।

হালপ্রতি দিবে তঙ্কা    কারে না করিহ শঙ্কা

পাট্টায় নিশান মোর ধর।।

নাহিক বাউড়ি দেড়ি    রয়্যা বস্যা দিবে কড়ি

ডিহিদার নাহি দিব দেশে।

সেলামি বাঁশ গাড়ি    নানা ভাবে যত কড়ি

নাহি দিব গুজরাট বাসে।।'

এমন একটি আদর্শ সমাজব্যবস্থা যে তৎকালে কোনো কোনো অঞ্চলে বাস্তবে বর্তমান ছিল, এ বিষয়ে সন্দেহ করবার কোন কারণ নেই।


বাস্তব অবস্থার চিত্রণ এবং আনুষঙ্গিক অপর যে সব কারণে কবি মুকুন্দের প্রতিষ্ঠা, সে বিষয়ে ডঃ সুকুমার সেন বলেন—“ লোক ব্যবহার, ছেলে ভুলানো, ছেলেখেলা, মেয়েলি ক্রিয়াকাণ্ড, ঘরকন্নার ব্যবস্থা, রাঁধাবাড়া ইত্যাদি বিভিন্ন অনপেক্ষিত সামাজিক ও সাংসারিক ব্যাপারেও তিনি বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়াছেন।... শুধু আপনার বা প্রতিবেশীরা ঘরের কথায় নয়, নিজের বা আশেপাশের সমাজের কথায়ও নয়, দেশের যেখানে যতটুকু তাহার গোচরে আসিয়াছিল তাহার সবকিছুতেই তাঁহার কৌতূহল ছিল। সে কৌতূহল তাহার রচনায় স্থানে স্থানে প্রস্ফুটিত হইয়া শিল্পকে সমসাময়িক মানে ঊর্ধ্বে তুলিয়াছে।”