কি কুছলে নরাধম বধিল তাঁহারে | ক্ষত্ৰ-কুলবালা আমি; ক্ষত্র কুল-বধু/ কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য্য ধরি | দহিল খাণ্ডব দুষ্ট কৃয়ের সহায়ে।/ শিখণ্ডীর সহকারে কুরুক্ষেত্রে রণে

"দহিল খাণ্ডব দুষ্ট কৃয়ের সহায়ে।/ শিখণ্ডীর সহকারে কুরুক্ষেত্রে রণে"- ‘খাণ্ডব' দহন ও 'শিখণ্ডী' সম্বন্ধে পৌরাণিক সত্য লেখাে

মধুসূদন দত্তের লেখা নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রে জনা 'খাণ্ডব’ দহন ও ‘শিখণ্ডী’ প্রসঙ্গ এনেছেন।


খাণ্ডব দহন: শ্বেতকি রাজার যজ্ঞে বারাে বছর ঘি পান করে অগ্নিমান্দ্য হওয়ায় অগ্নিকে ব্ৰত্মা বলেছিলেন যে, খাণ্ডব বন দ্ধ করে সেখানকার প্রাণীদের চর্বি ভক্ষণ করলে তার অসুখ সেরে যাবে। ইন্দ্রের প্রিয় এই বন অতীতে সাতবার দগ্ধ করতে গিয়ে হাতি ও নাগগণের ক্রমাগত জলসেচনের ফলে অগ্নি প্রতিবারই ব্যর্থ হন। তাই এ বিষয়ে অগ্নি শেষ পর্যন্ত অর্জুন ও কৃয়ের সাহায্যপ্রার্থী হন। এরপর কৃষ্ণকে সঙ্গে নিয়ে গাণ্ডীব ধনু, অক্ষয় তৃণ ইত্যাদির সাহায্যে অর্জুন পনেরাে দিন ধরে অগ্নিকে খাণ্ডব বন দহনে সাহায্য করেন।


শিখণ্ডী: শিখণ্ডী একটি নপুংসক পৌরাণিক চরিত্র। পূর্ব জন্মে ইনি ছিলেন অম্বা। বৈমাত্রেয় ভাই বিচিত্রবীর্যের জন্য চিরকুমার ভীষ্ম একদা অম্বাকে হরণ করেছিলেন। কিন্তু শাল্বরাজাকে মনে মনে পতিরূপে বরণ করার জন্য অম্বাকে ভীষ্ম পরে শাল্বর নিকটে প্রেরণ করেন। কিন্তু ভীষ্ম দ্বারা অপহৃতা হওয়ায় শাল্ব কিছুতেই অম্বাকে গ্রহণ করতে রাজি হন না। ফলে, ভীষ্মের প্রতি রুষ্ট হন অম্বা এবং প্রতিশােধ গ্রহণের মনস্থির করেন। পরজন্মে অস্বাই শিখণ্ডীরূপে জন্মগ্রহণ করে দ্রোণাচার্যের কাছে অস্ত্রবিদ্যা ও ধনুর্বিদ্যা শিক্ষা করেন। যৌবনে ভীষ্ম প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি কখনােই কোনাে স্ত্রী বা ক্লীব বা অস্ত্রহীনের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন না। এই সুযােগে শিখণ্ডীকে সামনে রেখে অর্জুন ভীষ্মকে তিরের আঘাতে জর্জরিত করে দেন।



“চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে?/ কুরঙ্গীর অশ্রুবারি নিবায় কি কভু/ দাবানলে? কোকিলের কাকলি-লহরী/ উচ্চনাদী প্রভঞ্জনে নীরবয়ে কবে?”— উদ্ধৃতিটির পশ্চাৎপট আলােচনা করাে

নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রটিতে দেখা যায়, পুত্রহন্তা পার্থের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজের সখ্য মাহেশ্বরী পুরীর রাজমাতা জনা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। তাঁর কথায় একদিকে যেমন প্রকাশিত হয়েছে স্বামী নীলধ্বজের আচরণের প্রতি ক্ষোভ, অন্যদিকে পার্থের প্রতি প্রবল ঘৃণা। প্রবীরের হত্যাকারী পার্থের বীর পরিচয় নিয়ে জনা যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, ঠিক তেমনি তাঁর বংশমর্যাদা ও জন্ম ইতিহাস নিয়েও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।


জনার কথায় অর্জুন-জননী কুন্তী স্বৈরিণী নারী, অর্জুন তার জারজ অর্থাৎ জন্ম-পরিচয়হীন সন্তান। অর্জুনের যে বীরত্বের কথা বহুল প্রচলিত এবং সর্বজনবন্দিত, তাও যে যথার্থ নয়—স্বয়ংবর সভায় ব্রাহ়্ণবেশে ছলনা থেকে কৃয়ের সহায়তায় খাণ্ডব দহন, শিখণ্ডীর সাহায্যে ভীষ্মকে বধ, দ্রোণাচার্যকে হত্যা, কর্ণহত্যা ইত্যাদি নানা উদাহরণের সাহায্যে তিনি তা স্পষ্টভাবে প্রমাণ। করতে চেয়েছেন। প্রতিক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, অর্জুনের বীরত্বের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে তার কৌশলী পদক্ষেপ, কৃয়ের ন্যায় দক্ষ কূটনীতিবিদদের সাহায্য ও পরামর্শ এবং শত্রুপক্ষীয়দের ওপর আগে থেকেই বর্তে যাওয়া অভিশাপ। এরপরই রাজমাতা জনা বলতে চেয়েছেন, ব্রাহ্মণ যেমন তার কপালে চণ্ডালের পদধূলি গ্রহণ করে না, ঠিক তেমনি অর্জুনকে ক্ষত্রিয়বীর নীলধ্বজের সখা হিসেবে মেনে নেওয়াও একটি অসম্ভব বিষয়।



“কি কুছলে নরাধম বধিল তাঁহারে" -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করাে। এই মন্তব্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে অর্জুন চরিত্রের নেতিবাচক দিকগুলিকে স্পষ্ট করতে গিয়ে জনা আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন। রথীকুল-পতি’ বা বীরশ্রেষ্ঠ বলে যে অর্জুনের বিশ্বজোড়া এত খ্যাতি, তিনি যে আসলে সুযােগসন্ধানী তা বিভিন্ন উদাহরণের সাহায্যে জনা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। দ্রোণাচার্যের মৃত্যু সেরকমই এক লজ্জাজনক ঘটনা। পাণ্ডব এবং কৌরবদের অস্ত্রশিক্ষাগুরু দ্রোণাচার্য কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের একাদশ থেকে পঞ্চদশ দিবস পর্যন্ত সেনাপতি ছিলেন। অস্ত্রত্যাগ না করলে দ্রোণ দেবতাদের অজেয় ছিলেন বলে, কৃয়ের পরামর্শমতাে দ্রোণকে তাঁর পুত্র অশ্বখামার মৃত্যু সংবাদ শােনানাে হবে বলে ঠিক হয়। একমাত্র যুধিষ্ঠিরের কথাই দ্রোণ বিশ্বাস করবেন বলে, যুধিষ্ঠিরকে সেই খবর পৌছিয়ে দিতে রাজি করানাে হয়।


ভীম মালবরাজ ইন্দ্রবর্মার অশ্বত্থামা নামক এক হাতিকে গদার আঘাতে বধ করেন এবং দ্ৰোণকে সেই সংবাদ দেওয়া হলে তিনি তা বিশ্বাস না করে যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করেন। যুধিষ্ঠির স্পষ্ট স্বরে অশ্বখামা হতঃ বলে পরে অস্পষ্টস্বরে ইতি গজঃ বলেন। কিন্তু যুদ্ধের কোলাহলে পুত্রশােকাকুল দ্রোণাচার্য শেষটুকু না শুনতে পেয়ে রথের ওপরেই যোেগাসনে বসে বিয়ুর ধ্যানে মগ্ন হন। এই সুযােগে ধৃষ্টদ্যুন্ন তাঁর শিরশ্ছেদ করেন। এই ঘটনায় অর্জুন প্রত্যক্ষ হত্যাকারী না হলেও চক্রান্তে তাঁর ভূমিকার কথাই যুক্তিবাদী, শােকাকুলা জনা প্রশ্নোদ্বৃত মন্তব্যে ব্যাখ্যা করেছেন।



“ক্ষত্ৰ-কুলবালা আমি; ক্ষত্র কুল-বধু/ কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য্য ধরি?"- বক্তার এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলােচনা করাে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকাব্যে মাহেশ্বরী পুরীর রাজমাতা জনা পুত্রহস্তা পার্থের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজ সখ্য স্থাপন করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


তিনি আশা করেছিলেন নীলধ্বজ পার্থকে সমুচিত শাস্তি দিয়ে পুত্রহত্যার প্রতিশােধ নেবেন। কিন্তু জনা দেখেন যে, প্রতিশােধ গ্রহণের উদ্যোগের বদলে রাজসভায় বসেছে নৃত্যগীতের আসর, উথলিছে বীণাধ্বনি। তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর অনুরােধকে সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষা করেই রাজা নীলধ্বজ অগ্নির পরামর্শমতাে পার্থকে অতিথিশ্রেষ্ঠরূপে বরণ করে নেওয়ার জন্য এসব কিছুর আয়ােজন করেছেন। এখানেই শেষ নয়, রণক্ষেত্রে তীক্ষ্ণতম শরের দ্বারা অর্জুনের বক্ষ বিদীর্ণ করার পরিবর্তে রাজা নীলধ্বজ মিষ্টি কথার সাহায্যে অর্জুনকে তুষ্ট করতে চাইছেন, অর্জুনের আনুকূল্য লাভ করতে চাইছেন। রাজমাতা জনা কিন্তু স্বামী নীলধ্বজের এ হেন কাপুরুষতাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। ক্ষত্রিয়ধর্মকে বিসর্জন দিয়ে পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে রাজার সখ্য স্থাপনকে তাই তিনি লজ্জাকর ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন।


ক্ষত্রকুলের কন্যা এবং স্ত্রী হিসেবে তাঁর পক্ষে ক্ষত্রিয় বংশের এই অপমান সহ্য করা যে সম্ভব নয়, তা জানাতেও জনা দ্বিধা করেন না। মনে করা হয়, বিদ্যাসাগরের নারীকেন্দ্রিক সামাজিক আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মধুসূদনও তাঁর কবিতায় পৌরাণিক নায়িকা জনাকে যুক্তিবাদী ও প্রতিবাদীরূপে তুলে ধরেছেন।


'গালিলিও' প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও।

“নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”—দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন কেন?

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর পরিবারের পরিচয় দাও। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গালিলিওর ভূমিকা আলােচনা করাে।

“গালিলিও রাজি হলেন,”—কোন্ ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন গালিলিও? গালিলিওর জীবনের শেষ পাঁচ বছরের পরিচয় দাও।


নীলধ্বজের প্রতি জনা কী ধরনের রচনা তার ব্যাখ্যা করাে।

পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা রচিত হলেও সেখানে কবি মধুসূদনের যে স্বাতন্ত্রের পরিচয় পাওয়া যায় তা লেখাে।

রেনেসাঁর লক্ষণগুলি কীভাবে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্রকাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে লেখাে।

পত্ৰকাব্যের সংজ্ঞা দাও। কোন্ পত্রকাব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মধুসূদন তাঁর নীলধ্বজের প্রতি জনা লিখেছিলেন?


পত্ৰকবিতা হিসেবে ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’-র সার্থকতা আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশ অবলম্বনে নীলধ্বজ চরিত্রটিকে বিশ্লেষণ করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশে উল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে নীলধ্বজের প্রতি জনার যে ক্ষোভ ও অভিমানের প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় লেখাে।


নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন কুন্তীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? কুন্তী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন দ্রৌপদীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? দ্রৌপদী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন অর্জুনের নিন্দায় সরব হয়েছেন? অর্জুন সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

“সত্যবতীসুত ব্যাস বিখ্যাত জগতে!” -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। কাব্যাংশে এটি উল্লেখের কারণ আলােচনা করাে।


“বসুন্ধরা গ্রাসিলা সরােষে/ রথচক্র যবে, হায়;" -মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। মন্তব্যটিতে যে পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে তার বিস্তৃত বর্ণনা দাও।

"হতজ্ঞান আজি কি হে পুত্রের বিহনে" -বক্তা এই মন্তব্যটি কখন করেছেন? তার এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?

"কি কহিবে, কহ/ যবে দেশ-দেশান্তরে জনরব লবে/ এ কাহিনী" -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

"...কী গুণে তুমি পূজ, রাজরথি,/ নরনারায়ণ-জ্ঞানে?"- মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।


"এই তাে সাজে তােমারে, ক্ষত্রমণি তুমি," -বক্তার এই মন্তব্য কি যথার্থ ছিল?

"ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে। বক্তা এখানে কোন জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন? শেষপর্যন্ত কীভাবে এই জ্বালা থেকে তিনি মুক্তি খুঁজেছেন?

“কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, কব কারে?" -বক্তা কোন্ দুঃখ এবং লজ্জার কথা বলতে চেয়েছেন?

"মিথ্যা কথা, নাথ। বিবেচনা কর," -এক্ষেত্রে বক্তা কীভাবে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন?


"মহারথী-প্রথা কি হে এই, মহারথি?”— বক্তার এই ধরনের মন্তব্যের যৌক্তিকতা আলােচনা করাে।

"কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা। গুরুজন তুমি; / পড়িব বিষম পাপে গঞ্জিলে তােমারে।" -বক্তার এই আক্ষেপ কেন? এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

"ক্ষত্রধর্ম, ক্ষত্রকম্ম সাধ ভুজবলে" -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করে তার পরিণতি বিশ্লেষণ করে দেখাও।

“হায়, ভােজবালা কুন্তী-কে না জানে তারে, স্বৈরিণী?" -বক্তার এই মন্তব্যের যথার্থতা আলােচনা করাে।