এই তাে সাজে তােমারে, ক্ষত্রমণি তুমি | ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে | কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, কব কারে | মিথ্যা কথা, নাথ। বিবেচনা কর

"এই তাে সাজে তােমারে, ক্ষত্রমণি তুমি," -বক্তার এই মন্তব্য কি যথার্থ ছিল?

নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকাব্যের প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি মাহেশ্বরী পুরীর রাজমাতা জনা তার স্বামী নীলধ্বজকে উদ্দেশ করে করেছিলেন। পার্থের দ্বারা পুত্র প্রবীর নিহত হওয়ার পরে শােকে কাতর রাজমাতা জনা রাজতােরণে রণবাদ্যের আওয়াজ, হ্রেষাধ্বনি এবং গজ-গর্জন শুনে আকাশে রাজপতাকা উড়তে দেখেন। এ ছাড়া রণমত্ত রাজসৈন্যদের হুংকারও তিনি শুনেছিলেন। এসব দেখেশুনে জনা কল্পনা করেছিলেন, একমাত্র পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর প্রতিবিধান বা প্রতিশােধ গ্রহণ করার জন্য এ হয়তাে রাজার যুদ্ধসাজ।


জনার এই কল্পনা যে যথার্থ ছিল না, তা বােঝা যায় কবিতার পরবর্তী অংশ থেকেই। জনা অতি শীঘ্রই বুঝতে পারেন রাজসভায় নর্তকীরা নৃত্যপরিবেশনে রত, গায়করা ব্যস্ত সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিশেষ অতিথির মনােরঞ্জনের জন্য। সভামধ্যে তাই 'উথলিছে বীণাধ্বণি'। জনা বুঝতে পারেন যে, এসবই পুত্রের হত্যাকারী পার্থকে স্বাগত জানানাের আয়ােজন। পার্থের সঙ্গে নীলধ্বজের সখ্যকে জনা কোনােভাবেই মানতে পারেননি এবং একে নিয়তির পরিহাসে রাজার অজ্ঞানতার প্রকাশ বলেই তাই মন্তব্য করেছেন। তিনি তাই প্রশ্ন তুলেছেন, "ক্ষত্রিয়ধর্ম্ম এই কি, নৃমণি?" দেশে-দেশান্তরে নীলধ্বজের এই আচরণ কীভাবে গৃহীত হবে, তা ভেবে জনা তাঁর উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। সুতরাং, জনার মন্তব্যটি যে যথার্থ নয়—তা পত্রের পরবর্তী অংশে প্রমাণিত হয়েছে।



"ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে"। বক্তা এখানে কোন জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন? শেষপর্যন্ত কীভাবে এই জ্বালা থেকে তিনি মুক্তি খুঁজেছেন?

মধুসূদন দত্তের নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্রকবিতার প্রশ্নোষ্বৃত অংশে মাহেশ্বরী পুরীর রাজমাতা জনার পুত্রশােকের জ্বালার কথা বলা হয়েছে।


জনা আশা করেছিলেন, তার স্বামী রাজা নীলধ্বজ পুত্র প্রবীরের হত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের জন্য পার্থের বিরুদ্ধে অতি অবশ্যই যুদ্ধযাত্রা করবেন। রাজতােরণে রণবাদ্যের শব্দ, হাতি এবং ঘােড়ার চিৎকার শুনে, আকাশে রাজপতাকা উড়তে দেখে আর রাজসৈন্যদের রণমত্ত হুংকারে জনা প্রাথমিকভাবে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে রাজা নীলধ্বজ নিশ্চয় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


নীলধ্বজের কাছে জনার এই প্রত্যাশা একেবারেই পূরণ হয়নি। পার্থের সঙ্গে সখ্যের সূত্র ধরে তিনি রাজসভায় পার্থকে আহ্বান ও বন্দনা করেন, মিষ্টালাপে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন। এরপর পার্থের মনােরঞ্জনের জন্য রাজসভায় বসানাে হয় নৃত্য ও গীতের আসর। এইসব ঘটনাপ্রবাহ জনকে আহত এবং ক্ষুদ্ধ করেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি নারী হিসেবে নিজের অসহায়তার কথাও জনা বুঝতে পারেন। নিরুপায় জনা সব কিছুকেই নিয়তির পরিহাস বলে মনে করেন এবং স্বামী নীলধ্বজের প্রতি তীব্র অভিমানে আত্মবিসর্জনের মধ্যেই মুক্তির সন্ধান করেন—“চলিল অভাগা জনা পুত্রের উদ্দেশে।” ক্ষত্রিয় বংশমর্যাদা রক্ষা এবং মৃতপুত্রের প্রতি ভালােবাসায় জনা জাহবীর জলে আত্মবিসর্জনের মধ্যে দিয়েই হৃদয়্ন্ত্রণা থেকে মুক্তি খুঁজেছেন।



“কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, কব কারে?" -বক্তা কোন্ দুঃখ এবং লজ্জার কথা বলতে চেয়েছেন?

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা নীলধ্বজের প্রতি জনা পত্ৰকাব্যে পুত্রহস্তা পার্থর সঙ্গে রাজা নীলধ্বজের সখ্যত্থাপন ও সন্ধির ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পুত্রহারা রানি জনা উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।


পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের বদলে রাজা নীলধ্বজ পুত্রের হত্যাকারীর সঙ্গে সন্ধি করবেন—এ ধারণা ছিল জনার কল্পনার বাইরে। ব্যক্তিগত বিষাদ ও যন্ত্রণা এই ঘটনায় রাজমাতা জনার যেমন তীব্রতর হয়েছিল, তেমনি তার সঙ্গে রাজমহিষী এবং ক্ষত্রিয় বংশের স্ত্রী এবং মেয়ে হিসেবে এই ঘটনায় জনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন ক্ষত্রিয়ধর্মের অমর্যাদা। পুত্রঘাতককে রণক্ষেত্রে হত্যা করার পরিবর্তে, পুত্রহন্তাকে বন্দনা করার জন্য নর্তকীর নৃত্য গায়কের গান বা বীণাবাদকের শব্দ-এ সমস্তই জনার কাছে অসহনীয় হয়ে ওঠে। বীরধর্ম থেকে ক্ষত্রিয় স্বামীর এ হেন বিচ্যুতি তাঁকে দারুণ ক্ষুধ করে তােলে। দেশ-দেশান্তরে নীলধ্বজের এই আচরণের কী প্রতিক্রিয়া হবে এবং এভাবে মহেশ্বরীপুরীর কতটা দুর্নাম রটবে, তা কল্পনা করেই জনা উদবিগ্ন হয়ে ওঠেন। স্বামীর উদ্দেশে তাই জনার স্পষ্ট জিজ্ঞাসাক্ষত্রিয়ধর্ম্ম এই কি, নৃমণি?” অর্থাৎ, একদিকে ব্যক্তিগত বিষন্নতা তাে ছিলই, তার সঙ্গ সামাজিক প্রেক্ষাপট যুক্ত হয়ে জনার বেদনাকে বেশ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। ক্ষত্রিয়ধর্ম থেকে বিচ্যুত নীলধ্বজের আচরণ লজ্জিত করে তােলে তেজস্বিনী জনাকে।



"মিথ্যা কথা, নাথ। বিবেচনা কর,"- এক্ষেত্রে বক্তা কীভাবে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন?

মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্ৰকবিতায় পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর পরে পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে অগ্নির পরামর্শে সন্ধি ও সখ্য স্থাপন করেন রাজা নীলধ্বজ। কিন্তু পুত্রশােকে কাতর জনা প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য এতটাই ব্যাকুল ছিলেন যে নীলধ্বজের কাছে পার্থের মহৎ ভাবমূর্তিকে ভাঙতে প্রয়াসী হন তিনি।


একের পর এক দৃষ্টান্ত সহযােগে এরপর রাজমাতা জনা বীর হিসেবে খ্যাত পার্থের হীনতা এবং চতুরতাকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। স্বয়ংবর সভায় দ্রৌপদীকে লাভ করার জন্য পার্থ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করে সকলকে ছলনা করেছিলেন। এ ছাড়া, অর্জুনের খাণ্ডববন দহনে তাঁকে যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভর করতে হয়েছিল কৃয়ের ওপর। পিতামহ ভীষ্মকে হত্যা করার ক্ষেত্রেও অর্জুন নপুংসক শিখণ্ডীকে সামনে রেখে তাকে তিরের আঘাতে জর্জরিত করতে সক্ষম হন। জনার মতে গুরু দ্রোণাচার্যকে বধ করার ক্ষেত্রেও কৌশল রচনা করেছিলেন অর্জুন এবং অবশ্যই তা কৃয়ের সহায়তায়। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে রথচক্র উদ্ধারকালে অঞ্জলিক বাণে অর্জুন অসহায় কর্ণের শিরচ্ছেদ করেন। তাই জনা পার্থকে কখনও 'মহাপাপী', কখনও নরাধম', আবার কখনও বা বর্বর' বলে সম্বােধন করেছেন। এভাবেই অর্জুনের বীরত্বব্যঞ্জক ভাবমূর্তিকে ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী হয়ে জনা আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।


দূরবিন আবিষ্কার করার ফলে ভেনিস কর্তৃপক্ষের নিকট কীভাবে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল?

স্বদেশে ফিরে এসে দূরবিনে চোখ রেখে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করেছিলেন?

"এই সময় ফ্লোরেন্সের এক বন্ধুকে লেখা চিঠির থেকে কয়েক লাইনের সারাংশ উদ্ধৃত হলাে"—চিঠিটি লেখার কারণ বর্ণনা করে চিঠিটির সারাংশ নিজের ভাষায় লেখাে।

“১৬০৯ সালে ঘটল এক নতুন ব্যাপার" -১৬০৯ সালে ঘটা নতুন ব্যাপারটি উল্লেখ করে এই সূত্রে কোন্ ঘটনা গালিলিওকে আমােদ’ দিয়েছিল তা লেখাে।


"১৬১২ সালের মে মাসে তিনি চিঠিতে লিখলেন”—চিঠি লেখার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে চিঠিটির বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখাে।

"এই স্বভাবই শেষ জীবনে তার অশেষ দুঃখের কারণ হলাে" -কার কোন্ স্বভাবের কথা বলা হয়েছে? সেই স্বভাব তার শেষ জীবনে অশেষ দুঃখের কারণ হলাে কীভাবে?

গালিলিও-র ছাত্রজীবন সম্পর্কে যা জান লেখাে।

গালিলিও’ প্রবন্ধটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।


'গালিলিও' প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও।

“নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”—দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন কেন?

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর পরিবারের পরিচয় দাও। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গালিলিওর ভূমিকা আলােচনা করাে।

“গালিলিও রাজি হলেন,”—কোন্ ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন গালিলিও? গালিলিওর জীবনের শেষ পাঁচ বছরের পরিচয় দাও।


নীলধ্বজের প্রতি জনা কী ধরনের রচনা তার ব্যাখ্যা করাে।

পৌরাণিক চরিত্র নিয়ে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা রচিত হলেও সেখানে কবি মধুসূদনের যে স্বাতন্ত্রের পরিচয় পাওয়া যায় তা লেখাে।

রেনেসাঁর লক্ষণগুলি কীভাবে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্রকাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে লেখাে।

পত্ৰকাব্যের সংজ্ঞা দাও। কোন্ পত্রকাব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মধুসূদন তাঁর নীলধ্বজের প্রতি জনা লিখেছিলেন?


পত্ৰকবিতা হিসেবে ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’-র সার্থকতা আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশ অবলম্বনে নীলধ্বজ চরিত্রটিকে বিশ্লেষণ করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশে উল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলােচনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে নীলধ্বজের প্রতি জনার যে ক্ষোভ ও অভিমানের প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় লেখাে।


নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন কুন্তীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? কুন্তী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন দ্রৌপদীর নিন্দায় সরব হয়েছেন? দ্রৌপদী সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কাব্যাংশে জনা কেন অর্জুনের নিন্দায় সরব হয়েছেন? অর্জুন সম্পর্কে জনা যে মূল্যায়ন করেছেন তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

“সত্যবতীসুত ব্যাস বিখ্যাত জগতে!” -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। কাব্যাংশে এটি উল্লেখের কারণ আলােচনা করাে।


“বসুন্ধরা গ্রাসিলা সরােষে/ রথচক্র যবে, হায়;" -মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। মন্তব্যটিতে যে পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে তার বিস্তৃত বর্ণনা দাও।

"হতজ্ঞান আজি কি হে পুত্রের বিহনে" -বক্তা এই মন্তব্যটি কখন করেছেন? তার এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?

"কি কহিবে, কহ/ যবে দেশ-দেশান্তরে জনরব লবে/ এ কাহিনী" -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

"...কী গুণে তুমি পূজ, রাজরথি,/ নরনারায়ণ-জ্ঞানে?"- মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।