গালিলিও রাজি হলেন | নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন | গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় | গালিলিওর পরিবারের পরিচয়

'গালিলিও' প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর 'গালিলিও রচনাটিতে জগৎ-বিখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর জীবনকথা বর্ণিত হয়েছে। পিতার ইচ্ছায় সতেরাে বছর বয়সে ডাক্তারিতে ভরতি হলেও গালিলিও ক্রমশ পদার্থবিদ্যা ও গণিতে উৎসাহী হয়ে পড়েন এবং এই দুটি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। শুরু হয় তাঁর বিজ্ঞানসাধনা। প্রথমদিকে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে, তারপর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসের পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমদিকেই গালিলিও কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাসে আস্থাশীল হয়ে পড়েন। এইসময়েই এক হল্যান্ডবাসীর এক আবিষ্কারের সংবাদ শুনে গালিলিও দূরবিন যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেন। সেই দূরবিনে চোখ রেখে গালিলিও চাঁদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতি গ্রহের চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদকে পর্যবেক্ষণ করেন। পরে স্বদেশে ফিরে সূর্যমণ্ডলের কলঙ্কবিন্দু, শুক্ৰগ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনির বলয় পর্যবেক্ষণ করেন। কোপারনিকাসের মতবাদের সপক্ষে মাতৃভাষা ইটালিয়ানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি বই লিখে রােমের ইনকুইজিসনে তিনি অপমানিত এবং ভসিত হন। দীর্ঘদিন পর ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে কথােপকথনের আদলে গালিলিও সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহয়াণ্ডবাদের সপক্ষে আরও একটি বই লেখেন। এই বইটির জন্যই গালিলিওর শেষ নয় বছরের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে ৭৭ বছর বয়সে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার অবসান ঘটে।



“নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”—দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন কেন?


ভেনিসে থাকাকালীন গালিলিও নিজের তৈরি দূরবিনে চোখ রেখে লক্ষ করেন যে, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও বন্ধুর, যা চাদের পাহাড় নামে অভিহিত এবং ছায়াপথ প্রকৃতপক্ষে লক্ষ লক্ষ তারার সমাবেশ। বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে চাঁদকেও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। স্বদেশে ফিরে গালিলিও লক্ষ করেন সূর্যমণ্ডলের অসংখ্য কলঙ্কবিন্দু। চাদের ন্যায় শুক্রগ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনিগ্রহের চারিদিকের বলয়রেখাও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।


গালিলিও যে ভেনিসে থাকাকালে দূরবিনের সাহায্যে চাদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর উপগ্রহে চাঁদকে আবিষ্কার করেছিলেন, তা সেখানকার ধার্মিক পণ্ডিতেরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাননি। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই সনাতনীরা গালিলিওর শত অনুরােধেও কিছুতেই দূরবিনে চোখ রাখেননি। সম্ভবত তাঁদের ভয় ছিল, এতে পাছে তাঁদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়। বরঞ্চ তারা বলেন যা খালি চোখে দেখা যায় না, তা যদি যন্ত্র দিয়ে দেখা যায়, তাহলে সেটা মােটেও বাস্তব নয়, যন্ত্রেরই কারসাজি। তারা তাই গালিলিওর বিরুদ্ধতা করে জানিয়েছিলেন যে, গালিলিও আসলে চালাকির সাহায্যে কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক ব্ৰত্মাণ্ড-বিন্যাসের সপক্ষে যুক্তি সংগ্রহের মতাে অন্যায়-কর্ম করছেন।



সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর পরিবারের পরিচয় দাও। পারিবারিক দায়িত্ব পালনে গালিলিওর ভূমিকা আলােচনা করাে।


বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর লেখা গালিলিও প্রবন্ধে প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক গালিলিওর পরিবারের যে পরিচয় পাওয়া যায়, তা নিম্নরূপ-


বিজ্ঞানী গালিলিও ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির অন্তর্গত নগররাষ্ট্র তাস্কানী (Tuscany) র পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। গালিলিওর পিতার পদবি ছিল গালিলাই। সংগীত ও গণিতশাস্ত্রে পারদর্শী গালিলিওর পিতা ভালাে লিউট বাজাতে পারতেন, ছিলেন পুরাণ সাহিত্যের এক খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। সংগীততত্ত্বের ওপর কয়েকটি বইও লিখেছিলেন তিনি। বাবা ছাড়াও গালিলিওর পরিবারে ছিল তার মা, এক ভাই এবং দুই বােন। ভাই মাইকেল এনজেলাে স্ত্রী এবং সাত সন্তানকে ফ্লোরেন্সে রেখে একসময় পােল্যান্ডে চলে যান এবং সেখানকার রাজদরবারের কলাবিদ হন।


১৫৯১ খ্রিস্টাব্দে গালিলিওর পিতা মারা গেলে পরিবারের সমস্ত দায়দায়িত্ব সাতাশ বছরের যুবক গালিলিওর ওপর এসে পড়ে। মা ও দুই বােনসহ ভাইয়ের পরিবারের আটজনের ভরণপােষণের দায়ও এসে পড়ে গালিলিওর ওপর। এই বিরাট সংসারকে প্রতিপালনের জন্যই 'প্রচুর অর্থাগম'-এর কথা সবসময় চিন্তা করতে হত তাকে। তাই প্রচুর অর্থাগম'-এর লক্ষ্যে, তিনি কখনও যেমন ব্যাবসা করবার কথা ভেবেছেন, তেমনি কখনও ভালাে-বেতনের চাকরির জন্য অন্যের কৃপাপ্রার্থনাও করেছেন। এমনকি, ভালাে মাইনের চাকরির জন্য তাকে এখানে-ওখানে ছুটে বেড়াতেও হয়েছে। বিদেশ ভেনিসে তাঁকে কর্মসূত্রে থাকতে হয়েছে দীর্ঘ আঠারাে বছর। এসবই তিনি করেছেন বৃহৎ পরিবারকে টানার উদ্দেশ্যেই।



“গালিলিও রাজি হলেন,”—কোন্ ব্যাপারে রাজি হয়েছিলেন গালিলিও? গালিলিওর জীবনের শেষ পাঁচ বছরের পরিচয় দাও।


সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' প্রবন্ধে আমরা দেখি যে, ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ইনকুইজিসনের বিচারকরা রােমে পােপের কাছে গালিলিওর বিরুদ্ধে অভিযােগ জানালে পােপ, কার্ডিনাল বেলারিমিনকে ভার দেন গালিলিওকে শােধরানাের। গালিলিওর প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষী এই উদার মনের মানুষটি রােমের ইনকুইজিসনের অন্যান্য বিচারকদের মনােভাব আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন। তাই তিনি গালিলিওকে বাস্তববাদী হওয়ার অনুরােধ করেন। তিনি তাকে বুঝিয়ে বলেন যে, গালিলিও যেন কোপারনিকাসের তত্ত্ব নিয়ে ধর্মযাজকদের সঙ্গে অযথা তর্ক না করেন। এ ছাড়া, বাইবেলের পক্তি উদ্ধৃত করে গালিলিওকে তাঁর নিজের মত ব্যাখ্যা করতেও নিষেধ করেন তিনি। কার্ডিনাল বেলারিমিনের এই সুপরামর্শেই গালিলিও রাজি হয়েছিলেন।


শেষ জীবনে ফ্লোরেন্স শহরের উপকণ্ঠে গালিলিওর নিজের বাড়িতেই তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তবে, মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে তার ওপরের বাধা নিষেধ অনেকটাই আলগা করে দেওয়া হয়। মহামান্য পােপের করুণায় তিনি বেশ কিছু বাধানিষেধের হাত থেকে নিষ্কৃতি পান। দেশ বিদেশ থেকে বহু লােক তখন তাঁকে দেখতে আসত। তার বই ও লেখা অবৈধভাবে অন্য দেশে চালান ও ছাপা হতে থাকে। তা ছাড়া, প্রােটেস্টান্ট মতাবলম্বী খ্রিস্টীয় জগতে তিনি প্রভূত খ্যাতি এবং সহমর্মিতা লাভ করেছিলেন। গালিলিওর শেষ পাঁচ বছরের জীবনে এইসব বিষয়গুলিই তাঁর পক্ষে গিয়েছিল।


ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে লেখকের মনােভাব ব্যাখ্যা করাে।

“যাঃ, টোপ খুলে গেল! হাঙ্গর পালালাে।" -টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনা অবলম্বনে লেখাে।


‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিও-র চরিত্রের প্রতিবাদী সত্তার পরিচয় দাও।

গ্যালিলিও প্রবন্ধে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিওর আপসকামী মনােভাবের যে পরিচয় দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিওর জন্মস্থান পিসায় অতিবাহিত হওয়া তার ছেলেবেলার পরিচয় দাও।

“গণিতের অধ্যয়নবাসনাই প্রবল হয়ে উঠল।" -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলাে কীভাবে গালিলিওর গণিতের অধ্যয়ন- বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছিল?


প্রথম যৌবনে স্বদেশে থাকাকালীন সংসার চালানাের জন্য কীভাবে লড়াই করতে হয়েছিল গালিলিও-কে, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে ভেনিস রাষ্ট্র এবং পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গালিলিও-র আঠারাে বছরের কর্মজীবনের বিবরণ দাও।

দূরবিনের আবিষ্কার ভেনিসনিবাসী গালিলিওর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

"এখানেই শুরু হল তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞানীর জীবন।" -প্রকৃত বিজ্ঞানীর’ সেই জীবন বর্ণনা করাে।


'গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গালিলিওর স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করাে।

স্বদেশে ফেরার পর দেশের ধার্মিক ও শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে কীভাবে গালিলিও সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

"আর এক কারণে তাঁর সব আবিষ্কার ও মতামত শুধু পণ্ডিত মহলে আবদ্ধ রইল না।" -কারণটি বিস্তৃতভাবে পর্যালােচনা করাে।

গালিলিওর শেষ ন'বছরের জীবনকথা গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।


"তখনকার দিনে ধার্মিক পণ্ডিতেরা এসব বিশ্বাস করতে চাইলেন না।" -ধার্মিক পণ্ডিতরা কী বিশ্বাস করতে চাইলেন না এবং কেন?

“প্রথমে Inquisition রায় দিলেন যে," -কী রায় দিয়েছিলেন তা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরিচয় দাও।

গালিলিওর পিতৃ-পরিচয় লিপিবদ্ধ করে শিক্ষার্থী গালিলিওর তার্কিক মনােভাবের পরিচয় দাও।


দূরবিন আবিষ্কার করার ফলে ভেনিস কর্তৃপক্ষের নিকট কীভাবে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল?

স্বদেশে ফিরে এসে দূরবিনে চোখ রেখে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করেছিলেন?

"এই সময় ফ্লোরেন্সের এক বন্ধুকে লেখা চিঠির থেকে কয়েক লাইনের সারাংশ উদ্ধৃত হলাে"—চিঠিটি লেখার কারণ বর্ণনা করে চিঠিটির সারাংশ নিজের ভাষায় লেখাে।

“১৬০৯ সালে ঘটল এক নতুন ব্যাপার" -১৬০৯ সালে ঘটা নতুন ব্যাপারটি উল্লেখ করে এই সূত্রে কোন্ ঘটনা গালিলিওকে আমােদ’ দিয়েছিল তা লেখাে।


"১৬১২ সালের মে মাসে তিনি চিঠিতে লিখলেন”—চিঠি লেখার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে চিঠিটির বক্তব্য নিজের ভাষায় লেখাে।

"এই স্বভাবই শেষ জীবনে তার অশেষ দুঃখের কারণ হলাে" -কার কোন্ স্বভাবের কথা বলা হয়েছে? সেই স্বভাব তার শেষ জীবনে অশেষ দুঃখের কারণ হলাে কীভাবে?

গালিলিও-র ছাত্রজীবন সম্পর্কে যা জান লেখাে।

গালিলিও’ প্রবন্ধটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।