প্রথাবদ্ধ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা আলােচনা করাে।

প্রথাবদ্ধ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা

প্রথাবদ্ধ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিদ্যালয়ের ভূমিকাকে দু-ভাগে ভাগ করে আলােচনা করা যেতে পারে। যেমন—বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক দায়িত্ব এবং সমাজকেন্দ্রিক দায়িত্ব।


(১) বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক দায়িত্ব: বিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হল নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান সরবরাহ করা এবং বিভিন্ন কাজে তাদের দক্ষতা বাড়িয়ে তােলা। এ ছাড়া আর যেসব দায়িত্ব বিদ্যালয় পালন করে তা হল


  • বৌদ্ধিক বিকাশ: বিদ্যালয়ের বিদ্যালয় একদিকে যেমন শিক্ষার্থীকে প্রয়ােজনীয় অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে, অন্যদিকে তার বৌদ্ধিক বৈশিষ্ট্যাবলি, যেমন চিন্তা, যুক্তি, কল্পনাশক্তি ইত্যাদির বিকাশেও সাহায্য করে।


  • ব্যক্তিসত্তার বিকাশ: বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামনে নতুন পরিবেশ তুলে ধরে। শিক্ষার্থীর সহজাত বৈশিষ্ট্যগুলির সঙ্গে এই পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া ঘটে। শিক্ষার্থী নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এইভাবেই ব্যক্তিসত্তার বিকাশ ঘটে।


  • বৃত্তিমূলক নির্দেশনা: শিক্ষার্থীকে বৃত্তির জগতের সঙ্গে পরিচিত করা, বৃত্তি নির্বাচনে সাহায্য করা এবং তার প্রবণতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বৃত্তিপরিকল্পনা করা হল বিদ্যালয়ের বিশেষ দায়িত্ব।


  • শিক্ষামূলক নির্দেশনা: শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য শিক্ষার্থীকে জানানাে; তার মেধা, আগ্রহ ও প্রবণতার ভিত্তিতে শিক্ষাপরিকল্পনা করা; শিক্ষা-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করা প্রভৃতি বিদ্যালয়কেই করতে হয়।


  • মূল্যায়ন: শিক্ষার্থী পড়াশােনার ক্ষেত্রে কতখানি সাফল্য অর্জন করেছে এবং এরই সাথে তার চারিত্রিক গুণাবলি এবং নৈতিক মূল্যবােধ কতখানি উন্নত হয়েছে তার মূল্যায়ন করাও বিদ্যালয়ের কাজ।


(২) বিদ্যালয়ের সমাজকেন্দ্রিক দায়িত্ব: শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশসাধন ছাড়াও সমাজ সংরক্ষণ ও সমাজ উন্নয়নে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয়ের এই সমাজকেন্দ্রিক দায়িত্বগুলি হল


  • সামাজিকীকরণ: সমাজে বসবাসকারী মানুষকে সমাজের রীতিনীতি ও নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। বিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ওইসব সামাজিক রীতিনীতি, আচার-আচরণ, বিভিন্ন ধরনের প্রচলিত প্রথা ও মূল্যবােধ সম্পর্কে অবহিত করে।


  • ঐতিহ্যের সংরক্ষণ: শিক্ষার সাহায্যে সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক ঐতিহ্যকে আমরা সংরক্ষণ করি। পাঠক্রম, পাঠ্যসূচি ও নির্দিষ্ট আচার-আচরণের মধ্য দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে ঐতিহ্য সংরক্ষিত হয়।


  • ঐতিহ্যের সঞ্চালন: বিদ্যালয় কেবলমাত্র ঐতিহ্যকে সংরক্ষণই করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে তা সঞ্চালনের ব্যবস্থাও করে। পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচি সঞ্চালনের মধ্য দিয়েই এই ঐতিহ্য সঞ্চালিত হয়।


  • ঐতিহ্যের উন্নয়ন: বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন ঘটায়।


  • গণতান্ত্রিক বোধের বিকাশ: গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা এবং তাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মনােভাব গড়ে তােলা বিদ্যালয়ের অন্যতম সমাজকেন্দ্রিক দায়িত্ব।


  • পরিবার, বিদ্যালয় ও কমিউনিটির সম্পর্ক: পরিবার, বিদ্যালয় ও কমিউনিটির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও নির্ভরশীলতা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে এবং এই সম্পর্ককে উন্নত করতে শিক্ষার্থীদের যথাযথ ভূমিকা পালনে বিদ্যালয়কে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।


শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও উৎপাদন সংস্থাগুলি এবং ধর্মীয় সংস্থাগুলির ভূমিকা সম্পর্কে আলােচনা করাে।


অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সীমাবদ্ধতা বা ত্রুটিগুলি আলােচনা করাে।


গণশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে দূরদর্শনের ভূমিকা লেখাে।


সংবাদপত্র ও বেতারের সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।


গণমাধ্যম বলতে কী বােঝ? আধুনিক শিক্ষায় গণমাধ্যমের গুরুত্ব উল্লেখ করাে।


নিয়ন্ত্রিত বা প্রথাগত বা বিধিবদ্ধ শিক্ষা বলতে কী বােঝ? এই শিক্ষার বৈশিষ্ট্যাবলি আলােচনা করাে।


নিয়ন্ত্রিত বা প্রথাগত বা বিধিবদ্ধ শিক্ষার ত্রূটি বা সীমাবদ্ধতাগুলি আলােচনা করাে।