জীববৈচিত্র্যের ঢাল বলতে কী বােঝ? সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সংস্থা (IUCN) অনুযায়ী সংকটময়তার নিরিখে প্রজাতিগুলি শ্রেণিবিভাগ করাে।

জীববৈচিত্র্যের ঢাল

অক্ষাংশ এবং উচ্চতার পার্থক্যের জন্য জীববৈচিত্র্যের পরিবর্তন ঘটে। জীববৈচিত্র্যের পরিমাণ মেরু অঞ্চল (উচ্চ অক্ষাংশ) থেকে নিরক্ষীয় অঞলের (নিম্ন অক্ষাংশ) দিকে বেড়ে যায়। পরিবেশগত তারতম্যের কারণেও জীববৈচিত্র্যের পরিমাণের পরিবর্তন ঘটে। যেমন—নাতিশীতােয় অঞ্চলে ঋতুভিত্তিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উদ্ভিদগুলি স্বল্প সময়ের জন্য জন্মায়, নিরক্ষীয় অঞ্চলে জলবায়ুর পরিবর্তন খুব বেশি দেখা যায় না বলে উদ্ভিদগুলির জীবনকাল দীর্ঘ। সমতলভূমি থেকে যত উচ্চতা বাড়ে তত প্রতি 1,000 মিটার উচ্চতায় 6.5 ° সে. হারে তাপমাত্রা কমে। যার ফলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জীববৈচিত্র্যের পরিমাণ হ্রাস পায়।


প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সংস্থা (IUCN) অনুযায়ী সংকটময়তার নিরিখে প্রজাতির শ্রেণিবিভাগ


প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সংস্থা International Union for Conservation of Nature and Natural Resources (IUCN) সংকটময়তার নিরিখে একটি লাল তালিকা (Red List) প্রকাশ করেছে। সংকটময়তার মাত্রা অনুযায়ী সংস্থাটি বিভিন্ন প্রাজতিগুলিকে 9টি ভাগে ভাগ করেছে। নীচে ভাগগুলি তালিকাকারে দেখানাে হল一


(১) বিলুপ্ত


  • বৈশিষ্ট্য : বর্তমানে যেসব প্রজাতির অস্তিত্বের আর কোনাে প্রমাণ নেই। যেমন—ভারতে বিলুপ্ত প্রজাতি হল গােলাপি মাথাযুক্ত হাঁস, পাহাড়ি কোয়েল পাখি। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় 727টি প্রজাতি বিলুপ্তি ঘটেছে।


(২) বন্য অবস্থায় বিলুপ্ত


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতির বন্য বা সাধারণ পরিবেশে বিলুপ্তি ঘটেছে, কেবলমাত্র সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব বজায় রয়েছে। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বন্য অবস্থায় বিলুপ্তি ঘটেছে 64টি প্রজাতির।


(৩) চরম বিপন্ন


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতির প্রায় 80% প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চরম বিপন্ন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় 3,801।


(৪) বিপন্ন


  • বৈশিষ্ট্য : অদূর ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন প্রজাতি। এদের 70% প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে গেছে। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিপন্ন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় 5,566।


(৫) বিপদপ্রবণ


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতির সংখ্যা দ্রুতহারে হ্রাস পাওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি বিপন্ন প্রজাতিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদের প্রায় 50% প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যেমনভারতে বিপদপ্রবণ প্রজাতি হল বাদামি শিংযুক্ত হরিণ, হিসপিড খরগােস। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিপদপ্রবণ প্রজাতির সংখ্যা 9,৪98।


(৬) প্রায় বিপদপ্রবণ


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতির ভবিষ্যতে বিপন্ন প্রজাতিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। IUCN-এর তথ্য অনুযায়ী 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় বিপদপ্রবণ প্রজাতির সংখ্যা প্রায় 4,273।


(৭) ন্যূনতম উদ্বিগ্ন


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতির বিপন্নতার মাত্রা খুব কম।


(৮) স্বল্পজ্ঞাত


  • বৈশিষ্ট্য : যেসব প্রজাতিকে বিশ্লেষণের জন্য যথেষ্ট মাত্রায় তথ্য পাওয়া যাইনি।


(৯)অ-নির্ধারিত


  • বৈশিষ্ট্য : বিপন্নতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি এমন প্রজাতি।


জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের তাৎপর্যগুলি উল্লেখ করাে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে সর্বাধিক জীববৈচিত্র্য দেখা যায় কেন?


ভারতীয় উপমহাদেশের জীববৈচিত্র্য হটস্পট অল সম্পর্কে আলােচনা করাে। ভারতে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির উল্লেখ করাে?


ভারতে স্বস্থানিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কে আলােচনা করাে। জীববৈচিত্র্য ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আলােচনা করাে।


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)