জে. সি. উইভারের শস্য সমন্বয় মডেলটি উল্লেখ করাে | ভারতের বিভিন্ন শস্য সমন্বয় অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করাে।
জে. সি. উইভারের শস্য সমন্বয় মডেল
পশ্চিম-মধ্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অঞ্চলগুলির ব্যাপ্তি বিষয়ে গবেষণা প্রসঙ্গে জে. সি. উইভার 1954 খ্রিস্টাব্দে 'Crop Combination in the Middle West' নামক নিবন্ধে শস্য সমন্বয়ের গাণিতিক মডেলটি তুলে ধরেন। তিনি প্রথমে শস্য সংখ্যার নিরিখে শস্য সমন্বয় এবং শতাংশের হিসেবে সংশ্লিষ্ট উৎপাদন অঞ্চলের পরিমাপের তত্ত্বগত মান নির্ণয় করেন। তাঁর এই পদ্ধতিটি সর্বনিম্ন বিচ্যুতি পদ্ধতি নামে পরিচিত।
ভারতে শস্য সমন্বয় অঞ্চলসমূহ
এম. এস. রাওয়া (1956), এল. ডি. স্ট্যাম্প (1958), পি. সেনগুপ্ত (1968), এবং আর. এল. সিং (1971) প্রমুখ কৃষিবিজ্ঞানীরা ভারতকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলে বিভক্ত করেছেন। ইন্ডিয়ান কাউনসিল ফর এগ্রিকালচার রিসার্চ (ICAR) প্রদত্ত সরল কৃষি অঞ্চলের ভাগ থেকে ভারতের শস্য সমন্বয় অঞ্চল সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এই শ্রেণিবিভাগটি হল一
ধান-পাট-চা অঞ্চল : পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব বিহার, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান শস্য হল ধান, পাট ও চা।
তুলো অঞ্চল : মহারাষ্ট্র, গুজরাত, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু প্রভৃতি ডেকান ট্র্যাপ অঞ্চলের প্রধান শস্য হল তুলো।
গম ও ইক্ষু অঞ্চল : বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমাংশ ও রাজস্থানের উত্তর-পূর্বাংশের মূল শস্য হল গম ও ইক্ষু।
ভুট্টা অঞ্চল : পশ্চিম রাজস্থান ও উত্তর গুজরাত অঞ্চলের প্রধান শস্য হল ভুট্টা।
মিলেটস ও তৈলবীজ অঞ্চল : কর্ণাটক মালভূমি, তামিলনাড়ুর অংশবিশেষ, দক্ষিণ অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও পূর্ব কেরলের প্রাধান্যযুক্ত শস্য হল মিলেটস ও তৈলবীজ।
ফল ও শাকসবজি অঞ্চল : পশ্চিমে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে পূর্বে অসম উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ পার্বত্য অঞ্চলে প্রধান শস্য হিসেবে ফল ও শাকসবজির চাষ করা হয়।