সিঙ্কহােল ও ডােলাইনের বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে | চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে গুহা কীভাবে সৃষ্টি হয়?

সিঙ্কহােল ও ডােলাইন-এর বৈশিষ্ট্য

কাস্ট অঞ্চলে জলের দ্রবণ কার্যের ফলে ফাদল আকৃতির যে অবনত ভূভাগ সৃষ্টি হয় তাকে সিঙ্কহােল বলে। কাস্ট অঞ্চলের বৃহদায়তন সিঙ্কহােলকে ডােলাইন বলে। এদের বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করা হল-


সিঙ্কহােলের বৈশিষ্ট্য


গঠন প্রকৃতি : চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশ্রিত জলের দ্রবণ কার্যের ফলে সৃষ্টি হয়।


আকৃতি : এটি ফাঁদল বা ফানেলের আকৃতিবিশিষ্ট।


বিস্তৃতি : সিঙ্কহােলের ক্ষেত্রফল কয়েক বর্গমিটার থেকে কয়েকশাে বর্গমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।


গভীরতা : এর গভীরতা কয়েক সেমি থেকে 30 মিটার বা তার বেশি হতে পারে।


যৌগিক সিঙ্কহোেল গঠন : একাধিক সিঙ্কহােল প্রসারিত ও সংযুক্ত হয়ে যৌগিক সিঙ্কহােল গঠিত হয়।


ডােলাইনের বৈশিষ্ট্য


আকৃতি : বৃহদাকৃতির সিঙ্কহােলকে ডােলাইন বলে। এর আকৃতিও সিঙ্কহােলের মতাে বৃত্তাকার হয়।


অবস্থান : এগুলি বিশুদ্ধ চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে এবং শুষ্ক নদী-উপত্যকায় লক্ষ করা যায়।


গভীরতা : এদের গভীরতা 2-10 মিটারের মধ্যে হয়ে থাকে। কোনাে কোনাে ডােলাইনের গভীরতা 100 মিটার হয়।


বিস্তার : অধিকাংশ ডােলাইনের ব্যাস 50-100 মিটার পর্যন্ত হয়।


উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্য : উৎপত্তিগত ও প্রকৃতিগত পার্থক্যের জন্য ডােলাইনকে (১) দ্রবণ ডােলাইন, (২) ধস ডােলাইন, (৩) দ্রবণ পাইপ ডােলাইন, (৪) অবনমিত ডােলাইন ও (৫) ককপিট ডেডলাইন—এই পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়।


চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে সৃষ্ট গুহা


গুহা : ভূ-অভ্যন্তরের স্বাভাবিক শূন্যস্থান গুহা নামে পরিচিত। কাস্ট অঞ্চলে দ্রবীভূত শিলাস্তরের দারণ ও ফাটলের মধ্য দিয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশ্রিত জল ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশের ফলে দ্রবণ প্রক্রিয়ায় গুহার সৃষ্টি হয়। গুহা বিভিন্ন আয়তনের হতে পারে। বৃহদাকৃতির গুহাকে ভূগহ্রর (Cavern) বলে।


চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে গুহা সৃষ্টির পদ্ধতি


দ্রবণ পদ্ধতি : কাস্ট অঞ্চলে গুহা বা ভূগহুর সৃষ্টির ক্ষেত্রে বহু তত্ত্ব প্রচলিত আছে। দ্রবণ তত্ত্ব অনুযায়ী জলপীঠের ওপরে ভাদোস জলস্তরে কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশ্রিত জলের দ্রবণ ক্রিয়ায় ক্ষয়ের ফলে গুহা বা ভূগহ্র সৃষ্টি হয়।


ডেভিসের মত : W.M. Davis-এর মত অনুযায়ী চুনাপাথর অঞ্চলের গুহা বা ভূগহুর সৃষ্টির ক্ষেত্রে ক্ষয়ের দুটি পর্যায় বা চক্র বিশেষ প্রয়ােজন। প্রথম পর্যায়ে ভৌমজলপীঠের নীচে ফ্রিয়েটিক জলস্তরে চুনাপাথর দ্রবীভূত হয়ে গহুর সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ভূপৃষ্ঠের উত্থানের ফলে ভূগহুর ভৌমজলপীঠের ওপরে অবস্থান করে। এই পর্যায়ে গুহা ভাদোস স্তরে অবস্থান করে। ফলে ভূগহ্রর শুষ্ক থাকে এবং গুহায় সঞ্চয়কার্য সম্পন্ন হয়।


উদাহরণ : ফ্রান্সের গুফ্রে বারজার গুহা প্রায় 1,130 মিটার নীচে অবস্থিত। ভারতে মধ্যপ্রদেশের পাঁচমাড়ি, অপ্রদেশের বরাগুহালু, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে চুনাপাথর গুহা রয়েছে। উত্তর ভারত অপেক্ষা দক্ষিণ ভারতের গুহাগুলি আয়তেন বড়াে।


আর্তেজীয় কূপ থেকে পাম্পের সাহায্য ছাড়াই জল উঠে আসে’- কারণ নির্দেশ করাে। গিজার কী? এর উৎপত্তির কারণ ব্যাখ্যা করাে।


পৃথিবীর প্রধান প্রধান কাস্ট অঞ্চলগুলির নাম লেখাে৷ কাস্ট ভূমিরূপ গঠনের শর্তগুলি কী কী?


কাস্ট অঞ্চল প্রায়শই অনুর্বর হয়—কারণ নির্দেশ করাে। উভালা ও পােলজি চুনাপাথর দ্বারা গঠিত অঞ্চলে সৃষ্টি হয় কেন?


Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)