বাংলার বৈষ্ণব পদসাহিত্যে চণ্ডীদাসের অবদান | বিদ্যাপতির কবিপ্রতিভার পরিচয় | কবি বিদ্যাপতির জীবন-পরিচয় | গােবিন্দদাসকে 'বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য'

কবি বিদ্যাপতির জীবন-পরিচয় দাও

বিদ্যাপতির জীবন-পরিচয়: বিদ্যাপতির ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে তাঁর লেখা বিভিন্ন গ্রন্থ এবং সমসাময়িক কিছু রচনা থেকে নিশ্চিতভাবে যেটুকু জানা যায়, তা হল—তিনি বিহারের মিথিলা রাজ্যের দ্বারভাঙ্গা জেলার মধুবনি পরগনার অন্তর্গত বিস্ফি গ্রামে এক ব্রাহ্মণ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন গণপতি ঠাকুর। বিদ্যাপতির ধর্মমত সম্পর্কে পণ্ডিমহলে নানারকমের মতবাদ প্রচলিত আছে। অনেকের মতে, তিনি ছিলেন পঞ্চোপাসক হিন্দু। আবার কেউ কেউ তাকে শৈব বলেও অভিহিত করেন। বিদ্যাপতি সংস্কৃত, মৈথিলি, অবহটঠ প্রভৃতি ভাষায় গ্রন্থ রচনা করেছেন। কীর্তিসিংহ থেকে ভৈরবসিংহ—মােট ছয়জন মিথিলারাজের এবং একজন রানির পৃষ্ঠপােষকতা লাভ করেছিলেন এই দীর্ঘজীবী রাজকবি। তিনি কেবল রাজকবিই ছিলেন না, একইসঙ্গে তিনি ছিলেন রাজকর্মচারী, সভাসদ, পদরচয়িতা, সেনাপতি এবং সংস্কৃত ও মৈথিল গ্রন্থের গ্রন্থকার। ১৪৫০ থেকে ১৪৭৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনাে-এক সময়ে কবি পরলােকগমন করেন।


বিদ্যাপতির কবিপ্রতিভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

বিদ্যাপতির কবিপ্রতিভা: বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বিদ্যাপতি বাংলা সাহিত্যে বিখ্যাত তার রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক অসাধারণ পদগুলির জন্যই।


বয়ঃসন্ধি, অভিসার, মিলন, মান, মাথুর ও ভাবসম্মিলনের পদে নানাভাবে রাধাকে তিনি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। তাতে চৈতন্য-পরবর্তী বৈ়বভক্তির গভীরতা না থাকলেও শিল্পরসের প্রাচুর্য আছে-

যব গােধূলি সময় বেলি 

ধনি মন্দির বাহির ভেলি। 

নব জলধর বিজুরি-রেহা

 দন্দ পসারি গেলি।।


বিদ্যাপতির রচনায় 'নব অনুরাগিণী রাধা’র বাধা না-মানা অভিসার যাত্রার কথা আছে, আছে মিলনের আশ্চর্য অনুভব—“লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখলু/তবু হিয়া জুড়ন না গেল।” আবার যখন তিনি দুঃখের বর্ণনা দিয়েছেন তখন বুকফাটা আর্তনাদে ভরে গেছে চারদিক-

এ সখি হমারি দুখক নাহি ওর।

এ ভরা বাদর          মাহ ভাদর

শূন্য মন্দির মাের।


বিদ্যাপতির পদাবলির আঙ্গিক সম্বন্ধে বলা যায় যে, তার শব্দ ব্যবহার প্রায় ত্রুটিহীন এবং উপমা, অতিশয়ােক্তি প্রভৃতি অলংকার প্রয়ােগে তিনি রীতিমতাে দক্ষ।


একপদী, দ্বিপদী, ত্রিপদী ও চৌপদী ছন্দের ব্যবহার তার পদগুলিকে বৈচিত্র্যমণ্ডিত করে তুলেছে।


গােবিন্দদাসকে 'বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য' বলা হয় কেন?

চৈতন্য-পরবর্তী যুগের বাঙালি বৈয়ব কবি গােবিন্দদাস‌ কবিরাজ বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য রূপে পরিচিত। বল্লভদাস কথিত 'দ্বিতীয় বিদ্যাপতি' হলেন গােবিন্দদাস।


গােবিন্দদাস বিদ্যাপতির পদাবলিতে ব্যবহৃত ভাষা ব্রজবুলিকে পদ রচনার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বিদ্যাপতির রচনার ভঙ্গি, পদবিন্যাসের কৌশল, অলংকারের প্রয়ােগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে গােবিন্দদাস তাকে অনুসরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, রাধিকার ভাবমূর্তি আঁকার ক্ষেত্রেও উভয়ের মধ্যে অনেক মিল লক্ষ করা যায়। বিদ্যাপতির আদর্শ অনুসরণ করে গােবিন্দদাস তার রাধাকে গড়েছেন নাগরিকা চতুরিকা কলাবতী নায়িকারূপে। বিদ্যাপতির একটি পদে আছে—


যাঁহা যাঁহা পদযুগ ধরই।

তহা তহা সরােরুহ ভরই।।


গােবিন্দদাসের রচনায় যেন এই পদেরই প্রতিধ্বনি শােনা যায়—


যাঁহা যাঁহা নিকসয়ে তনু তনু জ্যোতি। 

তাহা তাহা বিজুরী চমকময় হােতি।।


বিদ্যাপতির মতাে গােবিন্দদাসও ছিলেন সচেতন শিল্পী। কাব্যসৌন্দর্য নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনিও বিদ্যাপতির মতাে সমান মনােযােগী। শব্দে, ছন্দে, কাব্যভাষার সুষমায় বিদ্যাপতির রচনা যেভাবে অপরূপ হয়ে উঠেছে, গােবিন্দদাসের রচনাতেও তার পরিচয় পাওয়া যায়। সংগত কারণেই গােবিন্দদাসকে 'বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য' বলা হয়ে থাকে।


বাংলার বৈষ্ণব পদসাহিত্যে চণ্ডীদাসের অবদান সম্পর্কে আলােচনা করাে

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একাধিক চণ্ডীদাসের অস্তিত্ব নিয়ে বহু তর্ক বিতর্ক থাকলেও চৈতন্য-পূর্ববর্তী যুগে যে একজন চণ্ডীদাস ছিলেন, সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই।


বিদ্যাপতির পদাবলিতে রাধিকাকে যেমন নবীনা চঞ্চলা কিশােরী থেকে ক্রমে ক্রমে পরিণত হয়ে উঠতে দেখা যায়, চণ্ডীদাসের রাধিকার ক্ষেত্রে তা হয়নি। চণ্ডীদাসের রাধিকা প্রথম থেকেই পরিণত নায়িকা এবং কৃষ্ণগতপ্রাণা, সে বৃস্তহীন পুষ্পসম আপনাতে আপনি’ বিকশিত হয়ে উঠেছে। তাই পূর্বরাগের পদেও চণ্ডীদাসের রাধার বিরহিণী মূর্তিই প্রধান হয়ে ওঠে-


সদাই ধেয়ানে     চাহে মেঘপানে

না চলে নয়নতারা।

বিরতি আহারে    রাঙ্গাবাস পরে

যেমত যােগিনীপারা।।


চণ্ডীদাসের পদাবলির মূল বিশেষত্বগুলি হল-


  • তাঁর রচনার ভাষা সহজসরল অথচ আন্তরিক এবং ব্যঞ্জনাধর্মী। পদকর্তা চণ্ডীদাস প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “আমাদের চণ্ডীদাস সহজ ভাষার সহজ ভাবের কবি, এই গুণে তিনি বঙ্গীয় প্রাচীন কবিদের মধ্যে প্রধান কবি।"


  • সহজ ছন্দে এবং স্বভাবােক্তি অলংকারের মধ্য দিয়েই তাঁর রচনা গভীরতম ভাবের উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে উঠেছে।


  • চণ্ডীদাসের রাধা প্রথম থেকেই কৃষ্ণের জন্য আকুল, কৃষ্ণের কাছে তিনি সব কিছু সমর্পণ করে বসে আছেন, দুঃখই তাঁর কৃষ্ণপ্রেমের অন্যতম পরিচয়। সেজন্য চণ্ডীদাসের রাধা- চরিত্রে বৈচিত্র্য কম এবং ক্রমবিকাশ নেই বললেই চলে।


তুর্কি-বিজয় বাঙালি সমাজে কী প্রভাব ফেলেছিল‌ আলােচনা করাে।

তুর্কি-আক্রমণ বাংলা সাহিত্যে কী প্রভাব ফেলেছিল‌ আলােচনা করাে।

মধ্যযুগের বাংলার সমাজজীবনের পরিচয় দাও।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য ও সেটির কবি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের কাব্যবৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটির বিষয় ও আঙ্গিকগত বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দাও।

বাংলা ভাষায় 'রামায়ণ'-এর প্রথম অনুবাদকের জীবনকথা উল্লেখ করাে।


কৃত্তিবাস-এর অনূদিত কাব্যটির জনপ্রিয়তার কারণ আলােচনা করাে।

কৃত্তিবাসের কাব্যে বাঙালি জীবনের যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে তার বিবরণ দাও।

'বাংলা মহাভারত'-এর শ্রেষ্ঠ অনুবাদকের কাব্য রচনাকাল উল্লেখ করে সংক্ষেপে তাঁর জীবন সম্পর্কে লেখাে।

কাশীদাসী 'মহাভারত'-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


বাংলা সাহিত্যে 'ভাগবত' অনুবাদের ধারা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

ভারতচন্দ্রের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থটির নাম ও রচনাকাল উল্লেখ করে সংক্ষেপে কবির জীবনকথা উল্লেখ করাে।

সংক্ষেপে ভারতচন্দ্রের রচনা ও কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও

মঙ্গলকাব্যের এরূপ নামকরণের কারণ উল্লেখ করে মঙ্গলকাব্য রচনার সামাজিক কারণ বর্ণনা করাে।


মঙ্গলকাব্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মনসামঙ্গল কাব্যের কাহিনি সংক্ষেপে লেখাে।

কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের জীবন ও কাব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মনসামঙ্গল কাব্যের যে-কোনাে দুজন প্রতিনিধি-স্থানীয় কবির কবি-প্রতিভার পরিচয় দাও।


'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের বণিক খণ্ডের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখাে।

'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবির আত্মকাহিনির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

‘চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের আখেটিক খণ্ডের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখাে।

মুকুন্দরামের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।


কবি ঘনরাম চক্রবর্তীর জীবন ও কবি-প্রতিভা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কাহিনি সংক্ষেপে বর্ণনা করাে।

বাংলা মঙ্গলকাব্যের ধারায় শিবায়ন কাব্যটির গুরুত্ব আলােচনা করাে।

বিদ্যাপতি বাংলা ভাষায় কিছু লেখেননি, তবু তাকে বাংলা সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয় কেন?