'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের বণিক খণ্ডের কাহিনি | 'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবির আত্মকাহিনি | ‘চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের আখেটিক খণ্ডের কাহিনি | মুকুন্দরামের কবিপ্রতিভার পরিচয়

'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের বণিক খণ্ডের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখাে

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের বণিক খণ্ডের কাহিনি অনুযায়ী উজানী নগরের নিঃসন্তান বণিক ধনপতি স্ত্রী লহনার সম্মতি আদায় করে খুল্লনাকে বিয়ে করেন।


একদিন বনে ছাগলের খোঁজ করতে গিয়ে পঞ্চদেবকন্যার কাছে খুল্লনা চণ্ডীপূজা করতে শেখে। স্বামীর মঙ্গলকামনায় খুল্লনা চণ্ডীপূজা করলে শিবের উপাসক ধনপতি তা জানতে পেরে লাথি মেরে চণ্ডীর ঘট ভেঙে দেন। দেবী চণ্ডী এর প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য সমুদ্রে প্রবল ঝড়ের সৃষ্টি করলে ধনপতির ছটি ডিঙা সমুদ্রে ডুবে যায়। এরপর কোনােরকমে একটি ডিঙা আশ্রয় করে ধনপতি কালীদহে পৌঁছেন। সেখানে দেবী চণ্ডী তাকে 'কমলে-কামিনী' মূর্তি দেখান। ধনপতি সিংহলে গিয়ে সেখানকার রাজাকে কমলে-কামিনী'র কথা বললে রাজা তা বিশ্বাস না করে তাকে কারাগারে বন্দি করেন।


এদিকে খুল্লনার পুত্র শ্রীমন্ত বড়াে হয়ে পিতার সন্ধানে সিংহল যাত্রা করলে তিনিও পথে 'কমলে-কামিনী' মূর্তি দেখতে পান। সিংহলরাজকে তিনিও কমলে কামিনী’র অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে শর্ত অনুযায়ী শিরশ্ছেদের জন্য তাঁকে বধ্যভূমিতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চণ্ডীর কৃপায় অবশেষে সিংহলরাজ কমলে-কামিনী মূর্তি দেখতে পান। রাজা শ্ৰীমন্তকে অর্ধেক রাজত্ব দেন এবং কন্যা সুশীলার সঙ্গে তার বিয়ে দেন। কিছুকাল সিংহলবাসের পর পুত্র-পুত্রবধূসহ ধনপতি স্বদেশে ফিরে আসেন এবং শুরু করেন চণ্ডীর পুজো।


'চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবির আত্মকাহিনির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কাব্যে যে আত্মবিবরণী পাওয়া যায়, তা থেকে জানা যায় কবি মুকুন্দরামের সাত পুরুষের বসবাস ছিল বর্ধমান জেলার রায়না থানার অন্তর্গত দামুন্যা গ্রামে। তার বাবার নাম হৃদয় মিশ্র, মায়ের নাম দৈবকী। দেশে চরম অরাজকতা দেখা দিলে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে মুকুন্দরাম সপরিবারে দেশত্যাগ করেন। পথে দস্যুরা তার সর্বস্ব লুঠ করে। খিদে, আতঙ্ক ও পরিশ্রমে ক্লান্ত শ্রান্ত কবিকে পথিমধ্যে দেবী চণ্ডী স্বপ্নে দেখা দিয়ে সংগীত অর্থাৎ চণ্ডীমঙ্গল রচনার আদেশ দেন। দেবীর এই স্বপ্নাদেশ শিরােধার্য করে কবি শিলাই নদী পার হয়ে মেদিনীপুরের আড়রা গ্রামে পৌঁছােন। সেখানকার জমিদার বাঁকুড়া রায় তাঁকে আশ্রয় দেন ও নিজের বালকপুত্র রঘুনাথ রায়ের গৃহশিক্ষকরূপে নিয়ােগ করেন। বাঁকুড়া রায়ের মৃত্যুর পর রঘুনাথ রায় জমিদারিতে বসলে তিনি কবিকে চণ্ডীমঙ্গল রচনার জন্য অনুরােধ করেন।


কবি তাঁর কাব্যে বাংলার সুবেদার মানসিংহের কথা উল্লেখ করেছেন। গবেষকরা বিভিন্ন তথ্য দেখে অনুমান করেছেন যে, ষােড়শ শতাব্দীর শেষ এবং সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর মধ্যে কাব্য রচিত হয়েছিল। কাব্যমধ্যে কবি তাঁর এই কাব্যকে অভয়ামঙ্গল, 'চণ্ডিকামঙ্গল’, ‘অম্বিকামঙ্গল’ প্রভৃতি নামেও চিহ্নিত করেছেন।


‘চণ্ডীমঙ্গল' কাব্যের আখেটিক খণ্ডের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখাে

‘চণ্ডীমঙ্গল’-এর আখেটিক খণ্ডের কাহিনি অনুযায়ী চণ্ডীর প্ররােচনায় শিব ইন্দ্রের পুত্র নীলাম্বরকে ফুল তােলার কাজে ভুল করায় অভিশাপ দিয়ে মর্ত্যে পাঠান। মর্তে ব্যাধ ধর্মকেতুর পুত্ররূপে নীলাম্বরের জন্ম হয় এবং তাঁর নাম হয় কালকেতু। সঞ্জয়কেতুর ঘরে জন্ম নেওয়া তার স্ত্রী ছায়ার নাম হয় ফুল্লরা।


বড়াে হয়ে কালকেতুর সঙ্গে ফুল্লরার বিবাহ হয়। এদিকে কালকেতুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বনের পশুরা দেবী চণ্ডীর শরণাপন্ন হলে চণ্ডী একদিন সােনালি গােসাপের রূপ ধরে কালকেতুর শিকারে যাওয়ার পথে পড়ে থাকেন। অশুভ সােনালি গােসাপ দেখে কুদ্ধ কালকেতু সেটিকে বেঁধে নিয়ে শিকারের উদ্দেশে রওনা হয়। সেদিন সারা বন ঘুরে কোনাে শিকার না পেয়ে সােনালি গােসাপ নিয়েই সে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর সে নিজে বেরিয়ে যায় বাসি মাংসের পসরা নিয়ে বাজারে। স্ত্রী ফুল্লরা যায় প্রতিবেশিনীর কাছে খুদ ধার করতে। এই অবসরে গােসাপের রূপ পরিত্যাগ করে দেবী চণ্ডী সুন্দরী রমণীর বেশ ধারণ করেন। তাঁকে সতীন ভেবে শঙ্কিতা ফুল্লরা তার দুঃখের বারমাস্যা শুনিয়ে দেবীকে বিদায় করার ব্যর্থ চেষ্টা করে। ঘরে ফিরে বিস্মিত কালকেতু অনেক বুঝিয়েও যখন দেবীকে বিদায় করতে পারে না, তখন সে ধনুকে তির পরাতেই দেবী নিজমূর্তি ধারণ করেন। দেবী এরপর কালকেতুকে সাতঘড়া ধন এবং একটি মহামূল্যবান আংটি দিয়ে নগর-পত্তনের পরামর্শ দেন। কালকেতু বিপুল অর্থ ব্যয় করে বন কেটে গুজরাট নগর পত্তন করে। ভাঁড় দত্তের প্ররােচনায় কলিঙ্গরাজের সঙ্গে কালকেতুর যুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধে কালকেতু পরাজিত ও বন্দি হয়। অবশেষে কলিঙ্গরাজ স্বপ্নে দেবীর আদেশ পেয়ে কালকেতুকে মুক্তি দেন এবং ফিরিয়ে দেন তার রাজ্যপাট। কালকেতু মহাসমারােহে মর্ত্যে দেবী চণ্ডীর পূজার প্রচলন করে। দীর্ঘকাল সুখে রাজত্ব করার পর কালকেতু ও ফুল্লরা পুত্রের হাতে রাজ্যভার দিয়ে স্বর্গে ফিরে যায়।


মুকুন্দরামের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও

মুকুন্দরামের কবিপ্রতিভা: কেবল মঙ্গলকাব্যের ইতিহাসে নয়, সমগ্র মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে মুকুন্দরাম চক্রবর্তী একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন।


কবি নিখুঁতভাবে বাস্তবকে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং তা প্রকাশ করেছেন উপযুক্ত ক্ষেত্রে। মানবচরিত্র সম্পর্কে কৌতূহলী এবং সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তিনি। ফুল্লারা, মুরারি শীল, ভাঁড়ু দত্ত, দুর্বলা দাসী প্রভৃতি চরিত্র তাঁর কাব্যে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। কৌতুকরস সৃষ্টিতে মুকুন্দরাম যথেষ্ট পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। গ্রন্থ উৎপত্তির কারণ অংশে সমকালীন বাস্তবতার যে ছবি আমরা পাই, তা ইতিহাসসম্মত। কালকেতু উপাখ্যানে নির্মম দারিদ্র্যের চিত্রণে, পশুদের কান্নায় এবং ধনপতি উপাখ্যানে খুল্লনার দুঃখের বর্ণনায় কবির দরদি মনের পরিচয় পাওয়া যায়। বাস্তবতা, ঘটনা-সন্নিবেশ এবং চরিত্র সৃষ্টির দক্ষতায় তাঁর মধ্যে ঔপন্যাসিকের গুণাবলি লক্ষ করা যায়।


মুকুন্দরাম তাঁর কাব্যে চণ্ডীর মাহাত্ম্য কীর্তন করতে গিয়ে কাব্যের ভাষা, ছন্দ ও অলংকারের প্রতি একেবারেই উদাসীন থাকেননি। মিশ্রবৃত্ত রীতির পয়ার তাে আছেই, তা ছাড়া একপদী ও ত্রিপদী ছন্দের কাঠামােকেও সার্থকভাবে ব্যবহার করেছেন কবিকঙ্কণ। উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, সমাসােক্তি প্রভৃতি অলংকারের অজস্র প্রয়ােগ আছে তার চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে। প্রচলিত প্রবাদকেও তিনি সার্থকভাবে তাঁর কাব্যভাষায় প্রয়ােগ করেছেন।


বাংলা ভাষার বিকাশের আগে বাঙালি কবিদের সাহিত্যচর্চার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ করে আদি ও মধ্য যুগের প্রধান প্রধান সাহিত্যকীর্তির পরিচয় দাও।

বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ করে আধুনিক যুগের প্রধান প্রধান সাহিত্যের পরিচয় দাও।

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগে সমাজ ও সংস্কৃতির যে পরিচয় পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে লেখাে।


চর্যাপদের দার্শনিকতা এবং ধর্মমত সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

চর্যাপদের বিষয়বস্তুর উল্লেখসহ তার সাহিত্যমূল্যের পরিচয় দাও।

'চর্যাপদ'-এ সমকালীন সমাজজীবনের কীরূপ পরিচয় পাওয়া যায়, তা আলােচনা করাে।

বাংলা ভাষার ইতিহাসে চর্যাপদের গুরুত্ব আলােচনা করাে।

চর্যাপদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলােচনা করাে।

চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন? সন্ধ্যাভাষা বলতে কী বােঝ? বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এই গ্রন্থের গুরুত্ব কোথায়?


তুর্কি-বিজয় বাঙালি সমাজে কী প্রভাব ফেলেছিল‌ আলােচনা করাে।

তুর্কি-আক্রমণ বাংলা সাহিত্যে কী প্রভাব ফেলেছিল‌ আলােচনা করাে।

মধ্যযুগের বাংলার সমাজজীবনের পরিচয় দাও।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য ও সেটির কবি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের কাব্যবৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটির বিষয় ও আঙ্গিকগত বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দাও।

বাংলা ভাষায় 'রামায়ণ'-এর প্রথম অনুবাদকের জীবনকথা উল্লেখ করাে।


কৃত্তিবাস-এর অনূদিত কাব্যটির জনপ্রিয়তার কারণ আলােচনা করাে।

কৃত্তিবাসের কাব্যে বাঙালি জীবনের যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে তার বিবরণ দাও।

'বাংলা মহাভারত'-এর শ্রেষ্ঠ অনুবাদকের কাব্য রচনাকাল উল্লেখ করে সংক্ষেপে তাঁর জীবন সম্পর্কে লেখাে।

কাশীদাসী 'মহাভারত'-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


বাংলা সাহিত্যে 'ভাগবত' অনুবাদের ধারা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

ভারতচন্দ্রের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থটির নাম ও রচনাকাল উল্লেখ করে সংক্ষেপে কবির জীবনকথা উল্লেখ করাে।

সংক্ষেপে ভারতচন্দ্রের রচনা ও কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও

মঙ্গলকাব্যের এরূপ নামকরণের কারণ উল্লেখ করে মঙ্গলকাব্য রচনার সামাজিক কারণ বর্ণনা করাে।


মঙ্গলকাব্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মনসামঙ্গল কাব্যের কাহিনি সংক্ষেপে লেখাে।

কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের জীবন ও কাব্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মনসামঙ্গল কাব্যের যে-কোনাে দুজন প্রতিনিধি-স্থানীয় কবির কবি-প্রতিভার পরিচয় দাও।