শিক্ষা প্রশাসন সম্পর্কে সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশসমূহ উল্লেখ করাে। সার্জেন্ট পরিকল্পনার মূল্যায়ন করাে।

শিক্ষা প্রশাসন সম্পর্কে সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশসমূহ

শিক্ষা প্রশাসন সম্পর্কে সার্জেন্ট কমিটি যে মূল্যবান সুপারিশগুলি নথিভুক্ত করেছিলেন, সেগুলি সংক্ষেপে এখানে উল্লেখ করা হল一


(১) কেন্দ্র রাজ্য পারস্পরিক সহযোগিতা: শিক্ষা প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকার পরস্পরকে সহযােগিতা করবে।


(২) কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ আর্থিক দায়িত্বগ্রহণ: শিক্ষা প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার এবং প্রাদেশিক সরকার যৌথভাবে আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করবে।


(৩) উচ্চশিক্ষা ও উচ্চ কারিগরি শিক্ষায় কেন্দ্রের দায়িত্বগ্রহণ: উচ্চশিক্ষা ও উচ্চ কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।


(৪) মাধ্যমিক স্তরে রাজ্যসরকারগুলির দায়িত্বগ্রহণ: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার দায়িত্ব প্রতিটি প্রাদেশিক সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।


(৫) স্কুল কমিটি ও স্কুল বোর্ড গঠন: জনগণকে দেশের শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তােলার জন্য বেশ কিছু সংখ্যক স্কুল কমিটি এবং স্কুলবাের্ড গঠন করতে হবে।


(৬) সর্বভারতীয় শিক্ষা সার্ভিস প্রবর্তন: সর্বভারতীয় শিক্ষা সার্ভিস প্রবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে।


রাজ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে উচ্চশিক্ষ ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষার দায়িত্ব অর্পণ: উচ্চশিক্ষা বাদ দিয়ে অন্যান্য স্তরের শিক্ষা পরিচালনার মূল দায়িত্ব থাকবে রাজ্য শিক্ষা অধিকর্তার ওপর।


(৭) কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ গঠন: দেশে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ গড়ে তুলতে হবে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা পর্ষদ (Central Advisory Board of Education)-কে যথেষ্ট ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিতে হবে।


(৮) যোগ্য ও দক্ষ প্রশাসক নিয়োগ: শিক্ষা বিভাগের উচ্চ পদগুলিতে উপযুক্ত যােগ্যতাসম্পন্ন দক্ষ প্রশাসক নিয়ােগের ব্যবস্থা করতে হবে।


সার্জেন্ট পরিকল্পনার মূল্যায়ন


ভারতের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাসে সার্জেন্ট পরিকল্পনাকে একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।


(১) উন্নয়নমূলক নতুন চিন্তাধারার প্রবর্তন: এই পরিকল্পনায় ভারতে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার পুরাতন নীতি ও ঐতিহ্যধর্মী চিন্তাধারাকে বাদ দেওয়া হয় এবং শিক্ষার উন্নয়নমূলক চিন্তাধারার আবশ্যকতা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলােচনা করা হয়। শুধু তাই নয়, উন্নয়নমূলক চিন্তাধারাগুলি ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে কীভাবে বাস্তবায়িত করা সম্ভব, তার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়।


(২) মূল পাঠক্রমের পাশাপাশি সহগাঠক্রমিক বিষয়েও ব্যবস্থাগ্রহণ: এই পরিকল্পনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র পঠনপাঠনের বিষয়েই আলােকপাত করা হয়নি, তাদের শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, চিকিৎসাব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।


(৩) সর্বস্তরের শিক্ষা ও শিক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে সুপারিশ: নার্সারি শিক্ষা থেকে শুরু করে বয়স্ক শিক্ষা, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি, শিক্ষক-শিক্ষা, শিক্ষা প্রশাসন, স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রভৃতি বহু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হয়েছে।


(৪) মানবজীবন বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা সম্পর্কে সুপারিশ: শিক্ষাকে মানবজীবনের মূল পর্যন্ত বিস্তারিত করে তাদের চরিত্রগঠন, দৈহিক বিকাশ, সমাজসেবা, আমােদ-প্রমােদ, অবসর যাপন প্রভৃতি বিষয়ে উল্লেখযোগ্য সুপারিশ করা হয়েছে।


(৫) পুথিকেন্দ্রিক একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন: এই পরিকল্পনার সুপারিশে পুথিকেন্দ্রিক একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।


(৬) বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পরিকল্পনা লিপিবদ্ধকরণ: বহুমুখী মাধ্যমিক শিক্ষা, তিন বছরের স্নাতক শিক্ষান্তর, কারিগরি ও বৃত্তি শিক্ষা, বাণিজ্য ও কৃষি শিক্ষা প্রভৃতি নানান বিষয়ের শিক্ষার পরিকল্পনা এতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।


স্যাডলার কমিশনের রিপাের্টে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার কোন্ কোন ত্রূটি উল্লেখ করা হয়? ওই দুটি নিবারণের জন্য যেসব সুপারিশ করা হয়, তা লেখাে।


স্যাডলার কমিশনের পটভূমি লেখাে। স্যাডলার কমিশনে কমিশনের মূল্যায়ন করাে।


সার্জেন্ট পরিকল্পনায় ভারতীয় শিক্ষব্যবস্থার যে দিকগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলি উল্লেখ করাে। ওই পরিকল্পনায় মাধ্যমিক শিক্ষা অথবা উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা লেখাে।


কারিগরি শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা সম্পর্কে সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশ লেখাে।


প্রাক্‌প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সার্জেন্ট পরিকল্পনার সুপারিশগুলি লেখাে।


শিক্ষক-শিক্ষণ প্রসঙ্গে এবং সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থার বিষয়ে সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশ কী ছিল?


শারীরশিক্ষা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা এবং প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা বিষয়ে সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে।